দেড় বছর পর আবার গ্রামে ফিরলেন লাভলু
বাংলা নাটকের ভক্তদের দাবি, ‘সাকিন সারিসুরি’, ‘হাড়কিপ্টা’র মতো নাটক আরও বানাতে হবে। সেই দাবি পূরণ করতেই যেন আবার গ্রামে ফিরলেন সালাহউদ্দিন লাভলু, সঙ্গে তাঁর সেই পুরোনো টিম—চঞ্চল চৌধুরী, শাহনাজ খুশি, বৃন্দাবন দাস আর আ খ ম হাসানেরা। পুরোনো বন্ধুদের নিয়ে শুরু করেছেন নতুন ধারাবাহিক। কিন্তু মনটা তাঁর বিষণ্ন।
নাট্যাঙ্গনের প্রিয় মানুষ ছিলেন অভিনেতা এনামুল হক, সবার প্রিয় ‘এনাম ভাই’। লাভলুর ভাষায়, তাঁর মতো এমন জ্ঞানী, গুণী, বিনয়ী মানুষ আর হয় না। এ রকম মানুষেরা যখন চলে যান, চারপাশ শূন্য মনে হয়। গতকাল শনিবার পুবাইলে শুটিংয়ের ফাঁকে ‘প্রথম আলো’র সঙ্গে আলাপে লাভলু বলেন, ‘শারীরিকভাবে সুস্থ আছি, মানসিকভাবে নেই। টিভি মিডিয়ার অনেক কাছের মানুষ হুটহাট চলে যাচ্ছে। মনের ওপর এর একটা প্রভাব পড়ছে। আমরা এমন সব মানুষকে হারাচ্ছি, এ সময় আমাদের পাশে তাঁদের থাকা প্রয়োজন ছিল। আমাদের সংস্কৃতির আজ যে অবস্থা, তাতে এই মানুষগুলোর শূন্যতা আমাদের ভোগাবে।’ সম্প্রতি পরপর প্রয়াত কায়েস চৌধুরী, শামীম ভিস্তিদের স্মরণ করেও বিমর্ষ হলেন সালাহউদ্দিন লাভলু। তিনি বলেন, ‘আমাদের সার্কেলের ভেতরকার মানুষগুলো এমন হুটহাট চলে যাচ্ছে যে মনে হচ্ছে, আমরা কে কখন চলে যাই, অসুস্থ হয়ে পড়ি।’
প্রায় দেড় বছর পর গ্রামীণ পটভূমির একটি ধারাবাহিক শুরু করেছেন সালাহউদ্দিন লাভলু। বৃন্দাবন দাসের রচনায় ‘ষন্ডাপান্ডা’ নামের নাটকটি চ্যানেল আইতে দেখা যাবে। পরিচালক জানান, প্রাথমিকভাবে ২০৮ পর্ব নির্মিত হবে, পরে পর্বের সংখ্যা বাড়তে পারে। প্রতি মাসের প্রথম ও শেষ ১০ দিন শুটিং করে কাজটি এগিয়ে নেবেন তাঁরা। প্রতি সপ্তাহের পাঁচ দিন নাটকটি দেখানো হবে। এ নাটকে আরও অভিনয় করছেন গোলাম ফরিদা ছন্দা, লুৎফর রহমান জর্জ, মাসুম বাসার, মোহনা মিম, মাহা, বরুন, শাহেদ ও তৌফিক।
আবার এ রকম ধারাবাহিক করা প্রসঙ্গে লাভলু বলেন, ‘দর্শকদের চাওয়া ছিল, আমরা যেন আগের নাটকগুলোর মতো মজার নাটক বানাই। সে চেষ্টাই করছি। একজন–দুজন করে নতুন শিল্পী যুক্ত করছি। বিধিনিষেধকালে ইউটিউবে আমাদের পুরোনো নাটকগুলো দেখে বহু দর্শক মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে কলকাতার বাঙালি, মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য দেশের প্রবাসী বাঙালিরা আমাদের নাটক ইউটিউবে দেখেন। তাঁদের অনেক দিনের অপেক্ষা ছিল, আবার কবে আমরা নতুন নাটক করব।’
পুরোনো বন্ধুদের নিয়ে আবার যেন পুনর্মিলনী! কেমন লাগছে? লাভলু জানান, ‘পুরোনো ফ্লেবার পাচ্ছি। অনেক আনন্দ হচ্ছে। তবে “হাড়কিপ্টা” করার সময় সবার যে অবস্থা ছিল, পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে নিবেদিত মনে কাজ করেছিলেন, এখন কিন্তু সেটা হচ্ছে না। কারণ, আগে বছরে হয়তো একটা বা দুটো কাজ করতে হতো। এখন সবার কাজ বেড়েছে, ব্যস্ততা বেড়েছে। বিভিন্ন সিরিয়াল আর নাটকে কাজ করতে হচ্ছে। তবু টিমটা পুরোনো, পরস্পরের নার্ভটা আমরা বুঝি। পারফরমাররা বোঝেন আমি কী চাই, আমিও জানি কার থেকে কীভাবে কাজ বের করে আনা যাবে।’