প্রতি শুক্র ও শনিবারে মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘সেরা রাঁধুনী’

বিচারের দায়িত্ব সামলেছেন তিন বিজ্ঞ বিচারক রাহিমা সুলতানা রীতা, শুভব্রত মৈত্র ও দিলারা হানিফ পূর্ণিমা।

জমে উঠেছে ‘সেরা রাঁধুনী’ প্রতিযোগিতা। রান্নার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ‘সেরা রাঁধুনী ১৪২৭’-এ নিজেদের প্রতিভার খবর সারা দেশকে জানাতে চেষ্টার ত্রুটি করছে না সারা দেশ থেকে নির্বাচিত রাঁধুনীরা। রান্নার মুনশিয়ানার পাশাপাশি এ প্রতিযোগিতায় দেখার আছে আরও অনেক কিছু। আর জমজমাট এই আয়োজন প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবারে প্রচারিত হচ্ছে মাছরাঙা টেলিভিশনের পর্দায়। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে ‘সেরা রাঁধুনী’র (Shera Radhuni) নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে (https://www.youtube.com/channel/UCtsMSFafzAFwKwiINyZwUCA/featured)।

দেশের নানা প্রান্তের রন্ধনশিল্পীদের রান্নার প্রতিভার কথা সারা দেশকে জানানোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ষষ্ঠবারের মতো ‘সেরা রাঁধুনী’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।

স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ষষ্ঠবারের মতো ‘সেরা রাঁধুনী’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে

চ্যালেঞ্জের নাম ‘রামাদান নাইটস’। দেড় ঘণ্টায় তৈরি করতে হবে তাক লাগানো ইফতার আইটেম। ততক্ষণে ৩০ মিনিট পেরিয়েও গেছে। নিজেদের পরিকল্পনা আর রেসিপি অনুযায়ী রান্না এগিয়ে নিচ্ছেন রাঁধুনীরা। হঠাৎ বিচারক পূর্ণিমা দুহাত তুলে বলে উঠলেন—সবাই স্টপ! কী হলো আবার?

তেমন কিছু না। যার যার কুকিং স্টেশন পাল্টে ফেলতে হবে, রান্না যে পর্যায়েই থাকুক না কেন। ইফতার আইটেম তৈরির এত পরিকল্পনা, এত প্রস্তুতি—সবকিছু ভেস্তে গেল একনিমেষে।

আচমকা এই সিদ্ধান্তে বিহ্বল হয়ে পড়লেন প্রতিযোগীরা। দুজন তো কেঁদেই ফেললেন। কিন্তু কিছুই করার নেই। প্রতিযোগিতার নিয়মটাই যে এ রকম। বিচারক শুভব্রত মৈত্রর ভাষায় ‘যে খেলা প্রেডিক্ট করা যায় না’। আগে থেকে কিছু অনুমান করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই।

বলা হচ্ছিল ৮ নম্বর এপিসোডের ছোট্ট একটি চমকের কথা। রিয়েলিটি শোয়ে যে রকম চমক আশা করেন, তেমনই নানা চমকে ভরা এবারের সেরা রাঁধুনী ১৪২৭।

চলছে রান্নায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াই

মাছরাঙায় এখন পর্যন্ত প্রচারিত পর্বগুলোর মধ্যে ছিল দেশি রান্নার পারদর্শিতা নিয়ে ‘দেশি পার্বণ’, বিদেশি রান্নার মুনশিয়ানা নিয়ে ‘স্বাদের বিশ্বভ্রমণ’, উৎসব উপযোগী শাহি খাবার তৈরির পরীক্ষা নিয়ে ‘মোগলাই মহোৎসব’ চ্যালেঞ্জ। ছিল স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি নিয়ে চ্যালেঞ্জ ‘ভালো থাকি, ভালো রাখি’ এবং কোভিড-১৯ সম্মুখযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানোর প্রতীকী পর্ব ‘স্যালুট দ্য ফ্রন্টলাইনারস’। নানা পর্বে বিচারকদের পাশাপাশি খাবার পরিবেশন করতে হয়েছে আমন্ত্রিত অতিথিদেরও। এসেছেন স্বনামধন্য ফুড ব্লগার, পুষ্টিবিদেরা। এর মধ্যে ‘কুক ফর দ্য স্টার’ চ্যালেঞ্জে বসেছিল বড় তারকাদের মেলা।

চলচ্চিত্র তারকা ফেরদৌস, মাহিয়া মাহি, নুসরাত ফারিয়া, সাইমন আর সংগীতশিল্পী কনাকে নানা মুখরোচক খাবারে মুগ্ধ করেছেন শর্মী, সাদিয়া, আনিশা, নূপুর, কুমু, তমা, অসীম, সাবাব, নাসরিন আর নাতাশারা। অসীমের বিশেষ জুসের প্রশংসায় ফারিয়া মন্তব্য করেছিলেন, ‘এ ক্লাস!’ প্রশংসা কুড়িয়েছেন সাবাব, আনিশারাও।

এমন চুলচেরা বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগীদের যেতে হয়েছে প্রতিটি পর্বেই
@Ahmed_Taj

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, ‘সেরা রাঁধুনী’তেই দেশের একমাত্র থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি সেট তৈরি করা হয়েছে। প্রতিযোগী ও তাঁদের প্রতিভার পাশাপাশি আলো–ঝলমলে এই সেটের শোভা বাড়াচ্ছেন তিন বিচারক—রন্ধনশিল্পী রাহিমা সুলতানা রীতা, আন্তর্জাতিক শেফ শুভব্রত মৈত্র ও জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করছেন মারিয়া নূর। আয়োজকেরা আরও জানিয়েছেন, শুধু রান্নাই নয়, এ প্রতিযোগিতায় তৈরি করা খাবারের প্রক্রিয়া ব্যয়, মূল্য নির্ধারণও করতে হচ্ছে রাঁধুনীদের, যাতে করে পরবর্তী সময়ে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার প্রস্তুতিটাও সেরে ফেলা যায়।

‘সেরা রাঁধুনী ১৪২৭’-এ সেরার পুরস্কার ১৫ লাখ টাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় রানারআপ পাবেন ১০ ও ৫ লাখ টাকা। হাজারো চমক, টান টান উত্তেজনা আর দুর্দান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই লড়াই এখন মাঝামাঝি পর্যায়ে।

পরিবেশন করতে হয়েছে এমন সুস্বাদু ও দৃষ্টিনন্দন খাবার

আজ ও আগামীকাল দুই পর্বে দেখা যাবে ‘বাক্স রহস্য’ ও ‘মায়ের রান্নার স্বাদ’ চ্যালেঞ্জে সেরা ৮-এর লড়াই।  চ্যালেঞ্জগুলো শেষে যতই কমছে প্রতিযোগীর সংখ্যা, ওদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতিযোগিতার এক্সাইটমেন্ট। সামনের পর্বগুলো হতে যাচ্ছে আরও কঠিন, আরও চ্যালেঞ্জিং।
তারপরও যদি প্রশ্ন জাগে, কেন দেখবেন সেরা রাঁধুনী, তাহলে সেরা রাঁধুনীর ইউটিউব চ্যানেলে গিয়ে একবার দেখেই আসুন এর যেকোনো একটি পর্ব। দেখলে অবশ্যই কোনো মিস নেই। কারণ, বাংলাদেশে রান্নার এমন জমজমাট দেশি লড়াই এর আগে কেউই দেখেনি।