বন্ধ হতে পারে ছোট পর্দার শুটিং

শিগগিরই শুটিং বন্ধের নির্দেশনা জারি করা হবেছবি: সংগৃহীত

১০ মাস পর আবারও বন্ধ হতে যাচ্ছে ছোট পর্দার সব ধরনের শুটিং। করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে লকডাউন নিয়ে কঠোর হচ্ছে সরকার। শিগগিরই সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে। ছোট পর্দার সংগঠনগুলোর নেতারা জানিয়েছেন, এমন সিদ্ধান্ত এলে শিগগিরই শুটিং বন্ধের নির্দেশনা জারি করা হবে।
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু জানান, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় তাঁদের আবার সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। সবার আগে বেঁচে থাকা। করোনাকালে পরিবারের পাশে থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউন দেওয়ার কথা ভাবছে। এটা প্রজ্ঞাপন আকারে এলেই সরকারের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে দু-এক দিনের মধ্যেই নোটিশ দিয়ে দেব যে নাটকসংশ্লিষ্ট কোনো শুটিং হবে না।’

উত্তরা ও গাজীপুরের পুবাইলে একাধিক শুটিং বাড়িতে দৃশ্যধারণ চলছে

সাম্প্রতিক সময়ে ছোট পর্দার একাধিক অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে আছেন আবুল হায়াত, এস এম মহসীন, গাজী রাকায়েত, আফসানা মিমি, শহীদুজ্জামান সেলিম, আহসান হাবীব নাসিম, চয়নিকা চৌধুরী, শামীম জামানসহ অনেকে।

জানা গেছে, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ শুটিং স্পট থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম জানান, এখনই তাঁরা কাউকে শুটিং বন্ধ করতে বলছেন না। তবে সংগঠন থেকে বারবার স্বাস্থ্যবিধি মানতে সতর্ক করছেন।

শুটিংয়ে কোনোভাবেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না

তিনি বলেন, ‘শুটিং স্পটে অনেকে করোনা সংক্রমণকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। দেখা গেল, সচেতনতা নিয়েই সকালে শুটিং শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে সবার মধ্যেই ঢিলেঢালা ভাব চলে আসে। তা ছাড়া শুটিংয়ে কোনোভাবেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না। কাজের জন্যই কাছাকাছি থাকতে হয়। তাই স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বিপদ। আর সরকারিভাবে সর্বাত্মক লকডাউন দিলেই আমরা শুটিং বন্ধ করার কথা জানাব।’

সালাহউদ্দিন লাভলু
সংগৃহীত

ক্রমশ বেড়েই চলেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। শিল্পীদের মধ্যেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যেই উত্তরা ও গাজীপুরের পুবাইলে একাধিক শুটিং বাড়িতে দৃশ্যধারণ চলছে। অভিযোগ আছে, শুটিংয়ে অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।

এ প্রসঙ্গে পুবাইলের একটি শুটিং ইউনিট থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিনয়শিল্পী প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুটিংয়ে শতকরা ৫০ ভাগ কলাকুশলী নিয়ম মানছেন না। তাঁরা মাস্কই পরতে চান না। তাঁদের ধারণা, গতবার কিছু হয়নি, এবারও সমস্যা নেই। তবে কিছু অভিনয়শিল্পী নিয়ম মেনে মেকআপ রুমে বসে থাকছেন। খুব একটা অন্যদের সঙ্গে মিশছেন না। বাকিরা দল বেঁধে আড্ডা, খাওয়াদাওয়া ও সেলফি উঠিয়ে ফেসবুকে দিতে ব্যস্ত।’

আহসান হাবীব নাসিম

করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর ২২ মার্চ থেকে ছোট পর্দার শুটিং স্থগিত করা হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ১ জুন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে শুটিং শুরু করেন নির্মাতারা। দীর্ঘদিন শুটিং বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অভিনয়শিল্পী ও প্রযোজকেরা। তবে শুটিং শুরু হলে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে থাকেন তাঁরা। এখন আবার সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা হলে পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়ে প্রযোজকেরা চিন্তিত। প্রযোজক সাজু মনতাসির বলেন, ‘শুটিং বন্ধ করা নিয়ে আমরা চিন্তিত। পরিস্থিতি বাধ্য করলে আমাদের কিছু করার থাকবে না। অনেক প্রযোজক কেবলই কাজ শুরু করেছেন। সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হলে এবারও আমাদের বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে হবে।’