বাইকচালকের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চায় অভিনেত্রী আশার পরিবার

৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত প্রায় দুইটার দিকে অভিনেত্রী আশা চৌধুরী মারা যান
ছবি: ফেসবুক থেকে

অভিনেত্রী আশা চৌধুরী ট্রাকচাপায় পিষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় প্রধান আসামি বাইকচালক শামীম আহমেদ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা থেকে সরে এসেছে পরিবার। মামলাটি তুলে নিতে চায় আশার পরিবার। শামীম আহমেদ বর্তমানে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। ঘটনার রাতে আড়াই ঘণ্টা তাঁরা কোথায় ছিলেন, তার হিসাব ঠিকমতো দিতে না পারায় তাঁর নামে সন্দেহজনকভাবে মামলাটি করা হয়।
আশার মা পারভিন আক্তার প্রথম আলোকে জানান, প্রথম দিকে শামীম তিন রকম কথা বলায় তাঁদের সন্দেহ হয়। পরে তাঁরা আবারও শামীমের সঙ্গে দেখা করেন। সে সময় শামীম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। দীর্ঘ ৬-৭ বছরের পরিচিত শামীমকে তাঁরা আগে থেকেই স্নেহ করতেন। এর আগেও সে বাইক চালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আশাকে পৌঁছে দিত।

অভিনেত্রী আশা চৌধুরী
ছবি: ফেসবুক থেকে

পারভিন আক্তার বলেন, ‘শামীমকে আমরা বিশ্বাস করি। তাই তাঁর নাম মামলা থেকে তুলে নিতে চাই। শামীমের নাম কীভাবে মামলা থেকে উঠিয়ে নেওয়া যায়, সে জন্য আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন তদন্তের স্বার্থে আইনি প্রক্রিয়ায় পুলিশ যা চায়, সেটাই হবে। এখানে মূল দোষ ট্রাকচালকের। ভিডিওতে দেখেছি, সে-ই ইচ্ছাকৃত বাইকে ধাক্কা দিয়ে আমার মেয়েকে পিষ্ট করেছে।’ আক্ষেপ নিয়ে পারভিন আক্তার আরও বলেন, ‘কদিন ধরে থানায় ঘুরছি, পুলিশ এখনো বলছে ট্রাকটি ধরতে চেষ্টা করছি।’

প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি শামীমকে আটক করে দারুস সালাম থানা। আটক করার পর তাঁকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তদন্তের স্বার্থে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা।

অভিনেত্রী আশা চৌধুরী
ছবি: ফেসবুক থেকে

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহান আহমেদ জানান, শামীম আহমেদ তাঁদের জানান, তিনি আশাদের পরিবারের দীর্ঘদিনের পরিচিত। তাঁদের মধ্যে ভাইবোনের মতো সম্পর্ক ছিল। অনেক দিন পর দেখা হওয়ায় সে রাতে দুজনই ঢাকার রাস্তায় ঘুরছিলেন। বাসায় ফেরার সময় ট্রাকের ধাক্কায় আশা মারা যান। তিনি বলেন, ‘আমাদের তদন্তের স্বার্থে এখনো তিনি আটক আছেন। আমরা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পেলেই তদন্ত শুরু করব। তখন পরিবার চাইলে নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করতে পারে।’ এই সময় তিনি আরও জানান, বিআরটিএর সহযোগিতা নিয়ে তাঁরা ট্রাকটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।  

অভিনেতা জাহিদ হাসানের সঙ্গে আশা চৌধুরী
ছবি: ফেসবুক থেকে

৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত প্রায় দুইটার দিকে অভিনেত্রী আশা চৌধুরী মারা যান। চার বোনের মধ্যে আশা চৌধুরী বড়। রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) আইন বিভাগে পড়াশোনা করতেন তিনি। প্রায় চার বছর আগে তিনি অভিনয় জগতে আসেন। নাটকে অভিনয়, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ছাড়াও তিনি বিজ্ঞাপন ও গানের মডেল হয়েছেন। তিনি চেয়েছিলেন অভিনয়কেই পেশা হিসেবে বেছে নেবেন। তিনি ছিলেন পরিবারে একমাত্র অবলম্বন।

আরও পড়ুন