বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুলেছেন অনন্যা

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়
অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

ভারতের কলকাতার ছোট পর্দা ও বড় পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের বিয়েটা ভেঙে যাচ্ছে। গত ৮ আগস্ট তাঁর স্বামী রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায় একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধু আইনিপ্রক্রিয়া বাকি আছে।’ শুরুতেই তিনি লিখেছেন, ‘নতুন বছর, নতুন জীবন, অসফল সম্পর্কের শেষ। সব পরিণয় আনন্দ ও সুখের হয় না।’

রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার ব্যাপারে তখন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে যোগাযোগ করা হয় অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু তিনি বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। এরপর পেরিয়ে গেছে ২৪ দিন। এবার তিনি বললেন, ‘ভালো আছি।’ আরও বললেন, ‘জীবনে অনেক রকম পরিস্থিতি আসবে। সবটা তো মসৃণ হবে না। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেই ভালো থাকতে হবে।’

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়
অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

শুরু থেকেই অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, এটা একান্তই তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই এসব নিয়ে কিছু বলতে চান না। এভাবেই এড়িয়ে যান বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে সব প্রশ্ন। এবার জানালেন, রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ নেই। আর বললেন, ‘যদি কিছু শেষ হয়ে যায়, তাহলে তার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তা বয়ে বেড়ানো ঠিক না। যদি কিছু পচে যায়, গন্ধ বের হয়, তাহলে সেটা ফেলে দেওয়া ভালো। আমাদের দুজনের মনে হয়েছে, সম্পর্কটা আর বয়ে না বেড়ানোই ভালো।’

আগেই জানা গেছে, মাত্র চার বছরেই অনন্যা চট্টোপাধ্যায় আর রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে। বিয়ে ভাঙার কোনো কারণ উল্লেখ না করে রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘আমাদের বিয়েটা চার বছরের আর সম্পর্ক আরও চার বছরের পুরোনো। সব মিলিয়ে আট বছরের সম্পর্ক। আমি সৌভাগ্যবান, কারণ আমার মতো একজন ছাপোষা মানুষ তাঁর মতো একজন প্রতিভাবান মানুষের সঙ্গে কাটাতে পেরেছি।’

২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কলকাতার কসবার লীলা রিসোর্টে রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের বিয়ে হয়। রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় একটি প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞাপনী সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট।

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়
অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়কে ছোট পর্দায় সর্বশেষ দেখা গেছে স্টার জলসায় ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’ সিরিয়ালে। এরপর লম্বা বিরতি। জানালেন, ছোট পর্দার কাজে ইচ্ছা করেই একটু বিরতি নিয়েছেন। প্রতিটি সিরিয়াল শেষ হওয়ার পর এমনটা তিনি নিয়মিত করেন।

ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘আবহমান’ ছবিতে অভিনয় করে ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘রাত বারোটা পাঁচ’ (২০০৫)। এরপর তিনি অতনু ঘোষের ‘অংশুমানের ছবি’ (২০০৯), কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ল্যাপটপ’ (২০১০), অপর্ণা সেনের ‘ইতি মৃণালিনী’ (২০১২), বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘আনোয়ার কা আজব কিস্‌সা’ (২০১৩), অভিজিৎ গুহের ‘যদি লাভ দিলে না প্রাণে’ (২০১৪) ছাড়াও আরও কয়েকটি ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন।

কিন্তু অনেক দিন নতুন কোনো ছবিতে অনন্যা অভিনয় করেননি। বললেন, ‘হয়তো নির্মাতারা ভেবেছেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি, তাই তেমন চরিত্র না পেলে করব না। তবে এটাও সত্যি, চরিত্র পছন্দ না হলে আমি তাতে কাজ করব না।’

জানালেন, এখন তিনি ওজন কমাচ্ছেন। তবে তার জন্য মোটেও জিমে যাচ্ছেন না, যোগব্যায়াম করছেন, ডায়েট করছেন।

বিয়ের পর রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়
বিয়ের পর রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

ছোট পর্দায় জি বাংলার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘সুবর্ণলতা’য় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন অনন্যা। এই একটি মাত্র সিরিয়াল তাঁকে দর্শকদের খুব কাছাকাছি পৌঁছে দেয়। এ ছাড়া স্টার জলসায় তাঁর ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’ (২০১৭-১৯) সিরিয়ালটিও প্রশংসিত হয়েছে। তাঁর অন্য দুটি জনপ্রিয় সিরিয়াল হলো স্টার জলসার ‘গানের এপারে’ (২০১০-২০১১) এবং ‘বধূ কোন আলো লাগল চোখে’ (২০১২-১৪)।