ছেলের বিয়ে দিলেন মনিরা মিঠু

এবার সত্যিই তাঁর ঘরে এসেছে পুত্রবধূ
ছবি: সংগৃহীত

মা হিসেবে পর্দায় অনেক ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন অভিনেত্রী মনিরা মিঠু। চরিত্রের প্রয়োজনে পুত্রবধূ পেয়ে তাঁকে কাঁদতেও হয়েছে অনেকবার। এবার সত্যিই তাঁর ঘরে এসেছে পুত্রবধূ। তাঁকে পেয়ে সত্যি সত্যি কান্নাও করেছেন মিঠু। আলাপ প্রসঙ্গে জানালেন, মাথায় তেল দেওয়ার একজন মানুষ পেয়েছেন তিনি।

কদিন ধরে মনিরা মিঠুর বাসায় চলছে নাচ-গান পার্টি। শুটিং নয়, বড় ছেলে মুশফিক ইসলাম উপন্যাসের বিয়ে। ছেলের বিয়েতে সবার চেয়ে বেশি খুশি ছিলেন তাঁর অভিনেত্রী মা। বিয়ের সবকিছু বলা চলে একহাতে নিজেই করেছেন। ছেলের ব্যাচেলর পার্টি, গায়েহলুদ, যাবতীয় কেনাকাটা—সব। হলুদে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে নাচও করেছেন তিনি। মনিরা মিঠু জানান, ছেলেকে বড় করে তুলতে মা হিসেবে সর্বোচ্চ শ্রম দিতে হয়েছে তাঁকে। ছেলের বউ ফৌজিয়া আফরিন স্বর্ণাকেও আপন করে নিয়েছেন তিনি। মিঠু বলেন, ‘আমার দুইটা ছেলে, মেয়ে নেই। জীবনের প্রতি পদে আমি মেয়ে না থাকাটা অনুভব করেছি। সে আমার পুত্রবধূ না, আমার মেয়ে হয়ে থাকবে। সব সময় ছেলেদের খুশি রাখার চেষ্টা করেছি। পরিবারে এখন আমার একমাত্র মেয়ে সে। তাকে সুখী করতে প্রয়োজনে আমার রক্তের শেষ বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করব। তাদের যা পছন্দ, তা–ই করব। তারা খুশি থাকলেই আমি শান্তিতে থাকব।’

শুটিং নয়, বড় ছেলে মুশফিক ইসলাম উপন্যাসের বিয়ে
ছবি: সংগৃহীত

১৬ মে হয়ে গেল মিঠুর ছেলের বিয়ে। বরযাত্রী ছিলেন মাত্র ছয়জন। তাঁদের সবাই কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়েই এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এমনকি ঘরের অনুষ্ঠানও করেছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে। মিঠু বলেন, ‘বাসায় একটা মেয়ে এসে আমার সংসারটা পূর্ণ করে দিল। মাথায় তেল দিয়ে দেওয়ার একজন মানুষ পাওয়া গেল। বিয়ের পরদিন সকালে নানা রকম খাবার টেবিলে সাজিয়ে মেয়ে আমাকে ঘুম থেকে তুলে খেতে ডেকেছে। খাবারের বহর দেখে যখন তাকে বললাম, মা, আমি প্রতিদিন শুটিংয়ের আগে এক টুকরা কেক আর এক কাপ চা খেয়ে বের হই। এসবেই আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। শুনে মেয়ে অবাক! আমার মনে হয়েছে, আমার কষ্ট বোঝার একজন মানুষ পাওয়া গেল। নাটকে যখন ছেলে বিয়ে দিয়ে বউ আনতাম, তখন মনে হতো, বাসায় ফিরে যদি এ রকম একটা বউ আমার দরজা খুলে দিত! বলত, আম্মা হাত-মুখ ধুয়ে আসেন, আমি খাবার দিচ্ছি। এখন হয়তো গভীর রাতে শুটিং শেষে বলতে পারব মা রে, আমার জন্য একটু গরম পানি করে রেখো, এসে খাব। আমার দুই ছেলে ব্যস্ত থাকে। এখন তো কথা বলার জন্য একটা মেয়ে পেলাম।’

নাটকের দৃশ্যে ছেলে জোভানের সঙ্গে
ছবি: সংগৃহীত

ছেলের বিয়েতে সহশিল্পীদের আমন্ত্রণ করতে পারেননি মিঠু। এ নিয়ে তাঁর মন খারাপ। তিনি বলেন, ‘সহশিল্পীরা আমার আত্মার আত্মীয়। ছেলের বিয়েতে তাঁদের দাওয়াত করতে না পেরে নিজেরই খারাপ লেগেছে। যদিও পরিস্থিতির কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি। ইচ্ছা আছে, রিসেপশনে সবাইকে দাওয়াত দেব। এই মুহূর্তে কেউ প্লিজ ভুল বুঝবেন না। ছেলে ও বউকে দোয়া করবেন সবাই।’

ঈদুল ফিতরে ২০টির বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন মনিরা মিঠু। ‘যদি আমি না থাকি’, ‘পেপার গার্ল’, ‘তেজপাতা’, ‘দৌড়ের উপর ওষুধ নেই’, অ্যাওয়ার্ড’সহ কয়েকটি নাটক থেকে বেশ সাড়াও পেয়েছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিয়মিত শুটিংয়ের।

মনিরা মিঠু
ছবি: সংগৃহীত