শুটিং বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি, বেকায়দায় শিল্পীরা

শুটিং বাড়ির উঠানে হাঁটুপানি, বেকায়দায় শিল্পীরা
সংগৃহীত

দিনভর বৃষ্টি থাকায় থেমে আছে নাটকের শুটিং। যে স্থানে শুটিং হওয়ার কথা, সেখানে এখন হাঁটুপানি। সারা দিনই বৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় পুবাইলে অলস সময় কাটছে নির্মাতা, অভিনেতা ও কলাকুশলীদের। জানা গেল, বৃষ্টিতে না কমায় আটকে আছেন তাঁরা। এখন ঢাকা ফেরা নিয়েই চিন্তিত অনেকে।

ভাদুন গ্রামে অভিনেতা মোশাররফ করিম, শামীম জামান ও আ খ ম হাসানের যৌথ একটি শুটিং বাড়ি রয়েছে। সেখানে শুটিং হচ্ছিল ‘মধুপুর’ নামের ধারাবাহিক নাটকের। এই নাটকে অভিনয় করছেন ফজলুর রহমান বাবু, ফারুক আহমেদ, নাদিয়া আহমেদ, নাদিয়া মীম প্রমুখ। ভাদুন গ্রাম থেকে অভিনেতা ফারুক আহমেদ জানান, তিনিসহ পুরো ইউনিট সকাল থেকে বৃষ্টির জন্য বসে আছেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র একটি দৃশ্যে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এই অভিনেতা বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে শুটিং হচ্ছে না। বসে আড্ডা, গল্প, গানেই সময় কেটে যাচ্ছে। চারপাশে পানি জমেছে। পানি দেখে মনে হচ্ছে বন্যা! শুটিং বাড়িতেই এত পানি আগে কখনোই দেখিনি। তবে টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ বেশ ভালোই লাগছে। কিন্তু শুটিং না হওয়ায় প্রযোজকের ক্ষতির কথা ভেবে খারাপ লাগছে। হয়তো আজ আর শুটিংই হবে না। কারণ, বৃষ্টি কমার কোনো লক্ষণ নেই।’

আজ আর শুটিংই হবে না,চলছে আড্ডা
সংগৃহীত

‘মধুপুর’ নাটকটির পরিচালক এস এম শাহীন। তিনি জানান, শুটিং ইউনিটগুলোর পরিকল্পনা থাকে সারা দিন বাইরে শুটিং করে রাতে শুটিং বাড়ির উঠান এবং ঘরের মধ্যে শুটিং করার। সেখানে বৃষ্টিতে তাদের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। শুটিং বাড়ির চারপাশে যেখানে তাঁরা শুটিং করবেন, সেসব স্থানে পানিতে ভরে গেছে।

তিনি বলেন, ‘ভাই, আমাদের এমনিতেই বাজেট কম থাকায় বেশি কাজের প্রেসার নিয়ে শুটিং করতে হয়। সকাল থেকে ১৭টি দৃশ্য শুটিং করার পরিকল্পনা ছিল। মাঝে কিছু্টা বৃষ্টি কম ছিল। তখন তড়িঘড়ি করে তিনটি দৃশ্য কোনোমতে শুটিং করেছি। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। বড় ক্ষতির মুখে পড়ে গেলাম। আপাতত বৃষ্টির মধ্যে আর শুটিং করার পরিকল্পনা নেই। দু–তিন দিন আবহাওয়ার পরিস্থিতি দেখেই শুটিংয়ে নামব। বৃষ্টি না কমায় ঢাকা ফেরা নিয়েই চিন্তা করছি সবাই।’ এ সময় তিনি জানান, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে ইউনিটের সবাইকে শুটিং বাড়িতেই থেকে যাওয়া লাগতে পারে।

পানিতে ভরে গেছে শুটিং বাড়ি
সংগৃহীত

গাজীপুর জেলার পুবাইল থানার ভাদুন গ্রামে সবচেয়ে বেশি শুটিং হয়। এই গ্রামে প্রায় ২০টি শুটিং বাড়ি রয়েছে। খবর নিয়ে জানা গেল, আজ বৃষ্টির কারণে মাত্র দুটি শুটিং বাড়িতে নাটকের দৃশ্য ধারণ হচ্ছে। শুটিং বাড়ির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, শাহিনের বাড়ি, হারুনের বাড়ি, বিলবিলাই, হাসনাহেনাসহ সাতটি শুটিং বাড়িতে শুটিংয়ের কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে নির্মাতা ও প্রযোজক শুটিং স্থগিত করেছেন। হারুনের বাড়ি শুটিং হাউসের মালিক হারুন সরদার বলেন, করোনায় এমনিতে কাজ নেই, তার ওপর বৃষ্টিতে আগামী তিন দিনের সব কাজ বাতিল হয়েছে।

এ সময় তিনি জানান, যাঁরা পুবাইলে শুটিং করতে আসেন, তাঁরা বেশির ভাগই রাস্তা–ঘাট, মাঠ, বাড়ির বাইরে শুটিং করেন। বৃষ্টি থাকায় এসব স্থানে শুটিং সম্ভব নয়, এ জন্য শুটিং বাতিল হয়েছে।

২০০৩ সালে প্রথম ‘শাহিনের বাড়ি শুটিং হাউস’ দিয়েই ভাদুনে শুরু হয় বাণিজ্যিকভাবে শুটিং হাউসের যাত্রা। সালাহউদ্দিন লাভলু পরিচালিত ‘হাড়কিপ্টা’, ‘সাকিন সারিসুরি’, ‘গরুচোর’, ‘পত্রমিতালী’, ‘কলেজ স্টুডেন্ট’, ‘ঢোলের বাদ্যি’, ‘ঘর কুটুম’, ‘আলতা সুন্দরী’, ‘ওয়ারেন’ নাটকগুলো প্রচারিত হওয়ার পর ব্যাপকভাবে পুবাইলের নাটকগুলো দর্শকপ্রিয় হয়।

বাইরে বৃষ্টি,ভেতরে আড্ডা
সংগৃহীত