শুটিংয়ে কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করে দৃষ্টি হারানোর ঝুঁকিতে অভিনেত্রী

অভিনেত্রী ও মডেল মিষ্টি মারিয়া
সংগৃহীত

শুটিংয়ের জন্য চোখে কন্ট্যাক্ট লেন্স পরেছিলেন অভিনেত্রী ও মডেল মিষ্টি মারিয়া। শুটিংয়ে সেই লেন্স চোখে ব্যবহার করার কারণে এখন তিনি দুই চোখেই কিছু দেখতে পারছেন না। বর্তমানে এই অভিনেত্রী চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় আছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চোখের কর্নিয়ার প্রথম লেয়ার ফেটে গিয়ে এই সমস্যা হয়েছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন আগামী শনিবারের আগে কিছুই জানানো যাচ্ছে না।

১০ অক্টোবর জয়পুরহাটে শুটিং করতে যান মিষ্টি মারিয়া। সেখানে চরিত্রের প্রয়োজনে নাটকের শুটিংয়ের সময় চোখে এক জোড়া কন্ট্যাক্ট লেন্স পড়েন। এই অভিনেত্রীর চরিত্রটি ছিল বিদেশ থেকে আসা একটি মেয়ের। চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতেই তিনি লেন্স ব্যবহার করেন। পরে শুটিং শেষ হলে তিনি ব্যবহার করা লেন্স খুলে বক্সে রাখেন। এক ঘণ্টা পর বুঝতে পারেন তাঁর চোখ হালকা চুলকাচ্ছে। নাটকটির নির্মাতা আসাদ রহমান এবং স্থানীয় তিতাস মোস্তফার পরামর্শে এক চিকিৎসককে ফোন দিয়ে সমস্যার কথা বলেন। সেই চিকিৎসক তাঁকে একটি চোখের ড্রপ ব্যবহার করতে বলেন। ড্রপ ব্যবহার করে রাতে ঘুমিয়ে যান তিনি।

সকালে ঘুম থেকে উঠে মিষ্টি বুঝতে পারেন, চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না
সংগৃহীত

সকালে ঘুম থেকে উঠে মিষ্টি বুঝতে পারেন, চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। সঙ্গে সঙ্গে তিনি জয়পুরহাটের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। মিষ্টি বলেন, ‘হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা বললেন আমার চোখের ফার্স্ট লেয়ার উঠে গেছে। সেই জায়গাটায় ইনফেকশন হয়ে গেছে। ডাক্তার আমাকে চোখের ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। নইলে চোখ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে।’ চিকিৎসকদের কথা শুনে ভয় পেয়ে যান এই অভিনেত্রী। সবার পরামর্শে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ঢাকায় আসার।

১০ অক্টোবর জয়পুরহাটে শুটিং করতে যান মিষ্টি মারিয়া
সংগৃহীত

১২ অক্টোবর সকালে তিনি ঢাকায় ফিরে সরাসরি ঢাকার একটি হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞকে দেখান। সে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে আরও ভয় পেয়ে যান তিনি। কারণ, সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, তিনি জয়পুরহাটে প্রাথমিক চিকিৎসা না পেলে তাঁর দুই চোখই নষ্ট হয়ে যেত। মিষ্টি বলেন, ‘ঢাকায় চিকিৎসকেরা দেখার পর বললেন, চোখে ইনফেকশন হয়ে গেছে। সে জন্য আমার চোখে ২৪ ঘণ্টায় নতুন লেয়ার তৈরি হওয়ার কথা থাকলেও সেটা তৈরি হয়নি। কিছু ওষুধ দিয়েছেন। সেগুলো খাচ্ছি এবং ড্রপ ব্যবহার করছি।’

আগে তাঁর চোখে তীব্র ব্যথা থাকলেও এখন ব্যথা কিছুটা কম। চার দিন ধরে তিনি চোখে কিছুই দেখতে পাননি। চিকিৎসকেরা তাঁকে বলেছেন আপাতত চোখ ঢেকে রাখতে। ওষুধ আর ড্রপ ব্যবহার করে যেতে। আগামী শনিবারে আবার হাসপাতালে যেতে হবে তাঁকে।

মিষ্টি মারিয়া
সংগৃহীত

জয়পুরহাট থেকে তাঁকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন সহ–অভিনেতা সুমন হোসেন। মিষ্টি এখন তাঁর বড় বোনের সাহায্য নিয়ে চলাফেরা করছেন। আজ বুধবার চোখের সমস্যার কথা তার মা–বাবাকে জানিয়েছেন। কথা বলার সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘লেন্স পরে এত বড় ক্ষতি হয়ে যাবে, বুঝতেই পারিনি। এখন আমি আর চোখে দেখতে পারব কি না, সেটা নিয়েই চিন্তায় আছি। আল্লাহ যেন আমাকে রক্ষা করেন। চার দিন চোখে দেখি না। চোখে না দেখার কষ্টটা বুঝতে পারছি। আপনি লিখবেন, কেউ যেন লেন্স পরে কোনো দিন শুটিং না করে। দুই চোখ না থাকলে যে কত কষ্ট, সেটা এবার বুঝেছি।’

মিষ্টি মারিয়া
সংগৃহীত