শুভেচ্ছায় ভরে গেছে ‘ভুয়া সালাহউদ্দিন লাভলু’র ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
সম্প্রতি ডিরেক্টরস গিল্ডের নির্বাচনে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু। এরপর শুভেচ্ছায় ভরে গেছে ‘সালাহউদ্দিন লাভলু’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ওয়াল। তবে এই নির্মাতার কাছে এসব বার্তা পৌঁছায়নি। কেননা, লাভলুর নিজের কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। অজ্ঞাতপরিচয় কেউ সম্প্রতি তাঁর নামে ফেসবুক পেজ খুলে চালাচ্ছেন। সেই ভুয়া ব্যক্তি নিজেকে সালাহউদ্দিন লাভলু পরিচয় দিয়ে নিয়মিত স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
এই ঘটনায় বিস্মিত সালাহউদ্দিন লাভলু। জানালেন, ফেসবুকে তিনি কারও কোনো শুভেচ্ছা পাননি। কারণ, তিনি দীর্ঘদিন ফেসবুক ব্যবহার করেন না। অনেকে না বুঝে ‘ভুয়া সালাহউদ্দিন লাভলু’কে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তিনি ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সতর্ক হতে বলেন। শিগগির তিনি ভুয়া ফেসবুক নিয়ে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করবেন।
ভুয়া সালাহউদ্দিন লাভলু ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, নির্বাচন করব না। কিন্তু কাছের মানুষদের অনুরোধে নির্বাচন করেছি। আমাকে ডিরেক্টরস গিল্ডের নবনির্বাচিত সভাপতি করায় সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি।’ সেখানে মন্তব্য করেছেন অভিনেতা, প্রযোজক ও সহকর্মীরা। প্রযোজক ফখরুদ্দীন ছোটন লিখেছেন, ‘সালাহউদ্দিন লাভলু ভাই, আপনাকে শুভেচ্ছা।’
নির্মাতা শুভ্র খান লিখেছেন, ‘লাভলু ভাই, এগিয়ে যান। আমরা আছি আপনার সঙ্গে।’ অভিনেতা সজল আহমেদ লিখেছেন, ‘আপনার মতো গুণী দায়িত্বশীল মানুষকে সংগঠনে দরকার।’ একজন ভক্ত লিখেছেন, ‘দেখবেন কেউ আবার অশ্লীল নাটক নির্মাণ না করেন।’ এই বিষয়ে সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘প্রায় সাত–আট বছর ফেসবুক ব্যবহার করিনি। এর আগে পাঁচটির মতো অ্যাকাউন্ট ছিল, সেটা অভিযোগ করে বন্ধ করিয়েছি। কারণ, এই পেজগুলো প্রথম দিকে নিজেকে একজন সালাহউদ্দিন লাভলু দাবি করে প্রতিষ্ঠা পেতে চায়। কিছু ভক্ত হলেই শুরু করে দেয় বিতর্কিত কাজ, যা মানসম্মানে লাগে। একটা মানুষের পরিচয় ব্যবহার করা অপরাধ। সবাই একটু সতর্ক থাকবেন।’
এবারের নির্বাচনে কোনো ইশতেহার দেননি সালাহউদ্দিন লাভলু। তিনি মনে করেন, নির্মাতারা যেভাবে চান, সেভাবে সংগঠন চলবে। এটাই তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার। নির্বাচনের পর বড় আকারে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা জানালেন তিনি। সেখানে সংগঠনের সব সদস্য উপস্থিত থাকবেন। সেদিনই সিদ্ধান্ত হবে, নির্মাতার কীভাবে আগামী দিনে সংগঠনকে দেখতে চান। এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কিছু সদস্য সংগঠন থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে নবনির্বাচিত সভাপতি বলেন, ‘এটা একধরনের অভিমান। সংগঠনে অভিমানের কোনো সুযোগ নেই। কোনো সদস্য যদি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, ডিরেক্টরস গিল্ডে থাকবেন না, সেখানে আমাদের করার কিছু নেই। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সংগঠন চলবে।’
নির্বাচনের রেশ এখনো চলছে বলে জানান এই নির্মাতা। তিন দিন ধরে তাঁকে নাটক ও সিনেমার মানুষ ফোনে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। গতকাল অভিনেতা নিলয় আলমগীর তাঁর অফিসে কেক নিয়ে এসেছিলেন। সবাইকে নিয়ে কেক কেটেছেন তিনি। লাভলু জানান, যাঁরা নির্বাচিত হতে পারেননি, তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। তাঁদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায়, সেই পথে হাঁটছি। আমার চাই একসঙ্গে এগোব।’
সম্প্রতি তিনি শুরু করেছিলেন ‘মায়া’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং। সেই শুটিং নির্বাচনের কারণে ফেব্রুয়ারি মাসে বন্ধ ছিল। মার্চ মাসে একটি রিয়েলিটি অনুষ্ঠানে বিচারকের দায়িত্ব পালন করবেন। এপ্রিল মাসে তিনি ঈদের জন্য দুটি নাটক নির্মাণ করবেন। একটি সাত পর্বের ও একটি খণ্ড নাটক। এসব ব্যস্ততায় সংগঠনের কাজে অসুবিধা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর আমি সংগঠনকে সময় দিয়েই নির্মাণ করেছি। কোনো সমস্যা হয়নি। আশা করি, এবারও তেমন কোনো সমস্যা হবে না। সংগঠনকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যাব।’