সারা বছরই অপেক্ষা করে থাকতাম, কবে পয়লা বৈশাখ আসবে: বিপাশা হায়াত

বিপাশা হায়াত

পয়লা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌথ উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়নি। ২০২১ সালে হয়েছে সীমিত পরিসরে। দুই বছর পর এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা অনেকটা চেনা রূপে ফিরেছে। এমন খবরে আনন্দিত সংস্কৃতিকর্মী ও চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিনয়শিল্পী ও চিত্রকর বিপাশা নতুন এই শুরুর কথাটা এভাবেই বলেন, ‘এটা হচ্ছে আমাদের শেকড়কে আবার অনুধাবন করা। আমরা কি শেকড়সহ গাছ নাকি শেকড়হীন বৃক্ষ! আমরা শেকড়সহ বাঁচতে চাই, নাকি হাওয়ায় বাঁচতে চাই—সেটাও একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন থাকতে পারে।’

চারুকলার প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিনয়শিল্পী ও চিত্রকর বিপাশা
এই সময়ের চারুকলার কথা আমি খুব একটা জানি না। সবাই বলে, আমাদের সময়টায় খুবই ভালো ছিল। আমি তো বলব, আমাদের সময়ে শিক্ষকদের তো অস্বাভাবিক চমৎকার পেয়েছি। ছাত্রদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ছিল। সহযোগিতা, সহমর্মিতা সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়—অসাধারণ। আমি আজ যা কিছু, এই গড়ে ওঠার পেছনে চারুকলা ও থিয়েটার।
বিপাশা হায়াত

চারুকলায় ১৯৯২–৯৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন বিপাশা হায়াত। তিনি যখন পড়তেন, তখন তিনি অভিনয়েও তুমুল ব্যস্ত সময় কাটান। তবে পয়লা বৈশাখের এই সময় অভিনয়ের ব্যস্ততাকে পাশে রেখে চারুকলার কর্মযজ্ঞে মেতে উঠতেন।

বিপাশা হায়াত
প্রথম আলো

বিপাশা বলেন, ‘অভিনয়ে যত ব্যস্তই থাকি না কেন, আমরা এ সময় চারুকলায় মুখোশ বানাতাম। প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে শেষ দিন পর্যন্ত। ঢাকায় অবস্থানকালীন ২০১৯ সাল পর্যন্ত কিন্তু চারুকলায় গিয়ে প্রতি বৈশাখে একটা করে পেইন্টিং করতাম আমরা। সেই কাজ কেউ কেউ সংগ্রহ করতেন। এখনো ওটা চালু আছে। বিশাল কর্মযজ্ঞ, সারা বছরই আমরা অপেক্ষা করে থাকতাম। কবে পয়লা বৈশাখ আসবে।’

চারুকলায় ১৯৯২–৯৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন বিপাশা হায়াত। তিনি যখন পড়তেন, তখন তিনি অভিনয়েও তুমুল ব্যস্ত সময় কাটান। তবে পয়লা বৈশাখের এই সময় অভিনয়ের ব্যস্ততাকে পাশে রেখে চারুকলার কর্মযজ্ঞে মেতে উঠতেন।
বিপাশা হায়াত

চারুকলার সেই সময়টাকে জীবনের অসাধারণ সময় মনে করেন বিপাশা হায়াত। পয়লা বৈশাখ ও অন্যান্য সময়কে ঘিরে জীবনের অসাধারণ সময় কেটেছে সেখানে। তিনি বলেন, ‘এই সময়ের চারুকলার কথা আমি খুব একটা জানি না। সবাই বলে, আমাদের সময়টায় খুবই ভালো ছিল। আমি তো বলব, আমাদের সময়ে শিক্ষকদের তো অস্বাভাবিক চমৎকার পেয়েছি। ছাত্রদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ছিল। সহযোগিতা, সহমর্মিতা সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়—অসাধারণ। আমি আজ যা কিছু, এই গড়ে ওঠার পেছনে চারুকলা ও থিয়েটার।’

বিপাশা হায়াত
সংগৃহীত

আড়াই বছর ধরে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন অভিনয়শিল্পী ও চিত্রকর বিপাশা হায়াত। এ মাসের শুরুতে ফিরেছেন ঢাকায়। ১৬ এপ্রিল ধানমন্ডির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হচ্ছে ‘প্রস্তরকাল’ শিরোনামে বিপাশা হায়াতের একক চিত্র প্রদর্শনী। এসেই তিনি গ্যালারি চিত্রকে প্রদর্শনীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার কর্মযজ্ঞে যেতে পারেননি। কথা প্রসঙ্গে মনে করলেন চারুকলায় শিক্ষার্থী সময়ের কথা। বলেন, ‘কী যে সুন্দর সময়! কেউ কাগজ দিয়ে নানা ডিজাইন করছে। রং করছে। কোথাও বিশাল আকারের পাখি বানানো হচ্ছে। প্রজাপতি, ফুল কত কী বানাচ্ছে! এ ধরনের নানা রকম কর্মযজ্ঞের মধ্যে সময় কেটে যেত। চারুকলার সময়টা আমার জীবনের অসাধারণ সময়।’