হানিমুনে গিয়ে কোথাও ছবি তুলতে পারিনি

নাজিরা মৌফেসবুক থেকে

সাতটি ধারাবাহিক নাটক, সিনেমা ও মডেলিং নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন অভিনেত্রী নাজিরা মৌ। করোনা পরিস্থিতিতে সবই স্থগিত। এর মধ্যে জানা গেল তিন মাস আগে বিয়ে করেছেন তিনি। হানিমুন, ঘরসংসার ও অভিনয়ের ব্যস্ততা নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

প্রশ্ন :

তিন মাস হলো বিয়ে করেছেন, আগে জানাননি কেন?

মিডিয়ার অনেকে তো বিয়ে করে বছরের পর বছর লুকিয়ে রাখেন। আমি মাত্র তিন মাস (হাসি)। আসলে বিয়ে করেছি এতে লুকানোর কিছু নেই। একটু হুট করেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। পরিকল্পনা না থাকায় সেভাবে কাউকে জানানো হয়নি। বিয়ের দুই দিন পরেই ছুটতে হয়েছিল শুটিংয়ে।

একটু হুট করেই আমাদের বিয়ে হয়েছে
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

বিয়ের পরে নতুন উপলব্ধি কী?

বিয়ে করে এখনো কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। হুট করেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি, সংসার, দায়দায়িত্ব এখনো ঘাড়ের ওপর এসে পড়েনি। বিয়ে করেই ছুটতে হয়েছে শুটিংয়ে। শ্বশুরবাড়ি গিয়েছি এক মাস পরে।

প্রশ্ন :

তিন মাসের পরিচয়, এরপরে বিয়ে। নিজেদের কতটা চেনার সুযোগ হয়েছে?

আজ হোক, কাল হোক বিয়ে তো করতে হবেই। সো হোয়াই নট টু ডে। অনেকেই বলবে, তিন–চার মাসে একটা মানুষকে কী চিনতে পারছ? এখন এমনও তো হয় ১০–১২ বছর প্রেম করে বিয়ে করেন। সেই সংসার দুই বছর টেকে না। এটা ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

হানিমুনের জন্য দুবাই আমার একটুও পছন্দ নয়
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

হানিমুনে দুবাই গেছেন শুনলাম। দুবাই কেন পছন্দ করলেন?

হানিমুনের জন্য দুবাই আমার একটুও পছন্দ নয়। করোনার কারণে ইউরোপের কোনো দেশে যেতে পারছিলাম না। বাধ্য হয়ে দুবাই যেতে হয়। হানিমুনের অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো না। হানিমুনে গিয়ে কোথাও ছবি তুলতে পারিনি। যেখানে ঘুরতে যাই, মাস্ক একবারের জন্য খোলা যাবে না। খুললেই ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা। তবে দ্বিতীয় হানিমুন অবশ্যই গ্রিসে যাব।

প্রশ্ন :

ভালোবাসি কথাটা কে প্রথম বলেছিল?

সে-ই প্রথম বলেছিল ভালো লাগার কথা। নাটকের মতো আই লাভ ইউ বলেনি। সে (তাঁর স্বামী মিজানুর রহমান) বলেছিল, তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে। আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেছি। আমি সম্পর্কটাকে আগাতে চাই। আমরা কি দুই পরিবারে কথা বলব। আমি বাবা–মায়ের অমতে বিয়ে করব না। এ জন্য আমিই প্রথম বাবাকে সব খুলে বলি, শুনে বাবা বলেন, তুমি প্রেম করছ? আমি বলি, বাবা প্রেম না, তবে প্রেমের কাছাকাছি। পরে সব শুনে বাবা রাজি হন। দুজনের পরিবারই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।

অভিনয়শিল্পী নাজিরা মৌ
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

আপনি কখন বুঝেছিলেন সে আপনার প্রেমে পড়েছে?

বন্ধুদের সঙ্গে গিয়ে যখন আড্ডা দিতাম, তখন সে মাঝেমধ্যে আসত। তখনই তার তাকানো, কথা বলা, সারল্যে আমি বুঝতে পারি সে আমার প্রেমে পড়েছে। আমি আমার এক বন্ধুর কাছে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারি সে সত্যিই আমার প্রতি দুর্বল। সে বন্ধু আবার তাকেও বলে, নাজিরা আপনাকে পছন্দ করে। পরে তাকে আমার মোবাইল নম্বর দিয়ে ফোন দিতে বলি। প্রথমে এসএমএস পরে কথা বলা বাড়তে থাকে।

প্রশ্ন :

আপনার ‘নন্দিনী’ সিনেমার কী খবর?

সিনেমাটির শুটিং শেষ। এখনো ডাবিং, সম্পাদনা ও কালারের কাজ বাকি আছে। পরবর্তী শুটিংয়ের কাজ হবে ভারতে। কাজ শেষে পরিস্থিতি বুঝেই মুক্তি পাবে। করোনার কারণে সাতটি ধারাবাহিকের কাজ বন্ধ আছে। স্বাভাবিক হলেই শুটিং শুরু করব।

হানিমুনের জন্য দুবাই আমার একটুও পছন্দ নয়
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

আপনার চলচ্চিত্রের সংখ্যা মাত্র একটি। আর কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি কেন?

বেশ কিছু বাণিজ্যিক সিনেমায় অভিনয় করার কথা হয়েছিল। এই মুহূর্তে নাচ–গানের সিনেমা কম করতে চাই। বিকল্প ধারার সিনেমায় ভালো গল্প পেলে অবশ্যই অভিনয় করব।

প্রশ্ন :

সাতটি ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন, এক ঘণ্টার নাটকে কম দেখা যায় কেন?

এক ঘণ্টার নাটকেও কাজ করি। কিন্তু ধারাবাহিকটা বেশি করা হয়। ঈদের জন্য অনেকগুলো নাটকে অভিনয় করার কথা ছিল, করোনার কারণে শুটিং করতে পারব কি না জানি না।

‘নন্দিনী’ চলচ্চিত্রে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তের বিপরীতে অভিনয় করেছেন নাজিরা মৌ। ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

রাম্প মডেলিং দিয়ে আপনার ক্যারিয়ার শুরু, মডেলিং এখন করছেন না কেন?

নাটকে ব্যস্ত হওয়ার কারণে মডেলিং খুব একটা করা হয়নি। ভবিষ্যতে করার আর ইচ্ছে নেই।

প্রশ্ন :

‘নন্দিনী’ চলচ্চিত্রে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তের বিপরীতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

আগে থেকে তাঁকে চিনতাম না। তাঁর সঙ্গে ঠিকমতো অভিনয় করতে পারব কি না, তা ছাড়া বড় পর্দায় আমার প্রথম কাজ। সবদিক থেকে আমি একটু নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু শুটিংয়ে ইন্দ্রনীলদা খুবই সহযোগিতা করেছেন। শুটিং শেষ করেই দুজন একসঙ্গে রিহার্সাল করতাম। কীভাবে অভিনয় করতে হবে তিনি আমাকে দেখিয়ে দিতেন।

নাজিরা মৌ
ছবি: সংগৃহীত