১০ বছর পরে লাভলু-বৃন্দাবন-চঞ্চলদের চমক

এই দলের সমন্বয়ে নির্মিত নাটকগুলো এখনো দর্শকের কাছে জনপ্রিয়।ছবি : সংগৃহীত

বৃন্দাবন দাসের লেখা নাটক। সেই নাটকের নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু। নাটকের প্রধান চরিত্র চঞ্চল চৌধুরী। এই তিনের সফল মেলবন্ধন তৈরি হয়েছিল টেলিভিশন নাটকের সফল একটি দল। দলটি আবারও ছোট পর্দায় ফিরছে ১০ বছর পর। ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন তাঁদের চ্যানেল আইয়ের পর্দায় দেখা যাবে।

‘হাড়কিপটে’ ধারাবাহিক নাটকে ঘিরে কিছুটা মান–অভিমান হয়েছিল ১০ বছর আগে। তাঁদের মধ্যে কথা, যোগাযোগ সবই হতো, কিন্তু একসঙ্গে কাজটাই হয়ে ওঠেনি। এ ছাড়া বাজেট কমের কারণে এই জুটির নাটক পর্দায় দেখা যায়নি।

‘হাড়কিপটে’ ধারাবাহিক নাটকে ঘিরে কিছুটা মান–অভিমান হয়েছিল ১০ বছর আগে

এ নিয়ে দর্শকদের মতোই নির্মাতা, অভিনেতা ও চিত্রনাট্যকারের আফসোস ছিল। নাটকের এই কলাকুশলীদেরও প্রিয় ছিল আগের কাজগুলো।

দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ফেরা প্রসঙ্গে নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু জানান, গত বছর থেকেই তাঁরা ফেরার উদ্যোগ নিচ্ছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে বারবার পেছাতে হচ্ছিল পরিকল্পনা। অবশেষে লকডাউনের আগেই শুটিং শেষ করেছেন ‘বায়ুচড়া’ নাটকের। ইতিমধ্যে নাটকটির প্রমোশনের সংলাপ দর্শকদের আগ্রহী করেছে।

সালাহউদ্দিন লাভলু

নাটকটির নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘আমাদের জুটি নিয়ে দর্শকদের সব সময় একটা আগ্রহ দেখেছি। একসময় সারা দেশের মানুষ টেলিভিশনে নাটক দেখেছেন। অনেকে সিডি কিনি দেখেছেন। গত বছর করোনার লকডাউনের সময় থেকে লক্ষ করেছি, আমাদের আগের নাটকগুলোই ঘরবন্দী দর্শক টেলিভিশন ও ইউটিউবে আগের মতোই আগ্রহ নিয়ে দেখছেন। আমাদের বোঝাপড়া ভালো ছিল। আমরা সব সময়ই দর্শকদের নিখুঁত বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তখন আমরা সবাই মিলি উদ্যোগ নিই আবার ফেরার।’

দলটি ‘সাকিন সারিসুরি’, ‘আলতা সুন্দরী’, ‘সার্ভিস হোল্ডার’, ‘গরুচোর’, ‘ঢোলের বাদ্য’, ‘ঘরকুটুম’, ‘পত্রমিতালি’সহ বেশ কিছু সফল নাটক উপহার দিয়েছে। এই সফলতাই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল চিত্রনাট্যকার বৃন্দাবন দাসের কাছে।

বৃন্দাবন দাস। ছবি সংগৃহীত।

দীর্ঘ এক দশকে দর্শকদের নাটক দেখার রুচি অনেক বদলে গেছে। নাটকের তরুণ দর্শক তৈরি হয়েছে। নাটকের গল্পেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। সেগুলো মাথা নিয়েই তিনি লিখতে বসে যান নাটকটি। ‘বায়ুচড়া’ নিয়ে বৃন্দাবন দাস বলেন, ‘বাজেটসহ কিছু সংকটে আমাদের আগে কাজ করা হয়নি। এবার সেই গ্রামীণ পটভূমির নাটক দিয়েই ফিরছি। আমাদের জুটি হিসেবে দর্শক পছন্দ করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে দর্শক কীভাবে নেবেন, সেটাই ভাবছি। তবে এটুকু বলতে পারব, দর্শক একেবারেই হতাশ হবেন না।’
নতুন এই জুটির কাজ নিয়ে আশাবাদী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তিনি নাটকের শুটিং শুরু হওয়ার আগে জানিয়েছিলেন, বর্তমান নাটকের মানের যে অবস্থা, সেখানে দর্শক আগের নাটকগুলোই বারবার দেখছেন। এখন ভালো মানের নাটক কম তৈরি হচ্ছে। নাটকের মধ্য দিয়ে দর্শকদের সুস্থ বিনোদন দিতেই তাঁরা ফিরছেন।

তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা একটা সময় যে ধরনের নাটক করেছিলাম, সেটাই পরে ভাঁড়ামির পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর অনুকরণ এখনো চলছে। সেখান থেকে বের হয়ে দর্শকদের কীভাবে বিনোদন দেওয়া যায়, সেই চেষ্টাই আমাদের থাকবে।’

অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী

সালাহউদ্দিন লাভলু, বৃন্দাবন দাস ও চঞ্চল চৌধুরী—তিনজনকে প্রায়ই দর্শকদের কাছে শুনতে হতো, কেন আপনারা একসঙ্গে নাটক করছেন না। দেশ–বিদেশ থেকে সালাহউদ্দিন লাভলু প্রায়ই ভক্তদের ফোন পান। তাঁদের একটাই দাবি, আবার আপনারা একসঙ্গে নাটক নির্মাণ করেন। এ নিয়ে অনেক ভক্ত সালাহউদ্দিন লাভলু ও বৃন্দাবন দাসকে নানা হুমকি দিয়েছেন। এই চিত্রনাট্যকার এবং নির্মাতা মনে করেন, দর্শকদের ভালোবাসাতেই তাঁরা ফিরছেন। ‘বায়ুচড়া’ নাটকটি ঈদের দ্বিতীয় দিন ৭টা ৪০ মিনিটে চ্যানেল আইতে দেখা যাবে।

‘বায়ুচড়া’ নাটকের ইউনিটের একাংশ
সংগৃহীত