১৯ দিন পর বাসায় ফিরলেন জুয়েল আইচ

জুয়েল আইচ

১৯ দিন হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসাধীন ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। আজ শনিবার সকালে তিনি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। প্রথম আলোকে বাসায় যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জুয়েল আইচের স্ত্রী বিপাশা আইচ। তিনি বললেন, জুয়েলের কোভিড-১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট আগেই এসেছে। এরপরও চিকিৎসকেরা তাঁকে কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখেন। অবশেষে আজ চিকিৎসকেরা বাসায় যাওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছেন। বিপাশা আইচ বলেন, ‘শরীর যদিও কিছুটা দুর্বল, কিন্তু জুয়েল পুরোপুরি সুস্থ। খাওয়াদাওয়া স্বাভাবিক।’
৪ নভেম্বর থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন জুয়েল আইচ। শুরুতে গুরুত্ব না দিলেও পরে জ্বরের মাত্রা বাড়তে থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি কোভিড-১৯ পরীক্ষা করান, পাশাপাশি বুকের সিটি স্ক্যান করান। পরীক্ষার ফল হাতে পেয়ে জানতে পারেন, তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ। তাঁর ফুসফুসও সংক্রমিত হয়।

শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ১২টায় তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সন্তোষজনক সেবা না পাওয়ায় হাসপাতাল বদলাতে বাধ্য হয় তাঁর পরিবার। পরদিন তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ।

সপরিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন জুয়েল আইচ। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও জুয়েল আইচকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুয়েল আইচ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন। করোনাকালে বই পড়ে সময় কাটাচ্ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। পড়ছিলেন ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ নিয়ে।

বাংলাদেশের নন্দিত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ অবসরে বাঁশি বাজান, ছবি আঁকেন। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ফেসবুকে মাস্ক পরে নিজের একটি ছবির সঙ্গে তিনি পোস্ট করেন ‘করোনা মারার জাদু’ নামে একটি ছড়া।

সিঙ্গাপুর পলিটেকনিক অডিটোরিয়ামে মেয়ে খেয়াকে নিয়ে ‘বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের জাদু’ দেখান জুয়েল আইচ
সংগৃহীত।

সেখানে তিনি লিখেছিলেন,‘কালোজিরা মধু/ করোনা মারার জাদু/ গরম জলে লেবু/ কোভিড হবে কাবু/ কাঁচা রসুন খেলে/ ভাইরাস যাবে চলে/ নিমপাতার চা/ গরম-গরম খা/ সব ওষুধের দাদা/ নামটি তার আদা/ তুলসীপাতা মেথি/ বিশ্বজোড়া খ্যাতি/ লবঙ্গ তেজপাতা/ ফুসফুসে হলে ব্যথা/ এলাচি দারুচিনি/ খাবে প্রতিদিনই/ বাষ্প পানির ভাপ/ শুকনো কাশি মাফ/ করলে বেশি দান/ শান্তি পাবে প্রাণ।’
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৩ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন জুয়েল আইচ।