শুধু মৌসুমী হামিদেরই নন, তাঁর মা–বাবার পছন্দের অভিনয়শিল্পী আফজাল হোসেন। তাঁরা টেলিভিশনে আফজাল হোসেনকে দেখলেই কিশোরী মেয়ে মৌসুমী হামিদকে বলতেন, ‘আমাদের সাতক্ষীরার গুণী অভিনেতা তিনি, দেশের গর্ব।’ এভাবে শৈশব থেকে আফজাল হোসেনের সঙ্গে প্রথম পরিচয়। একটু বড় হওয়ার পর মৌসুমী নিজেও অভিনেতা আফজাল হোসেনের অভিনয়ের প্রেমে পড়েন। মৌসুমীর একসময় অভিনয়ে যাত্রা শুরু হয়। তার পর থেকে ইচ্ছা ছিল আফজাল হোসেনের সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করার। এ জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে এক যুগ।
অবশেষে ‘যাপিত জীবন’ সিনেমা সেই সুযোগ করে দিল। মৌসুমী হামিদ বলেন, ‘আফজাল হোসেন ভাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছা অনেক দিনের। কিন্তু কোনোভাবেই সুযোগ হচ্ছিল না। এ জন্য আমাকে ১২–১৩ বছর অপেক্ষা করতে হলো। তিনি যেমন ভালো অভিনেতা, তেমনি ভালো একজন মানুষ। অভিনয় নিয়ে তাঁর কাছ থেকে নতুন অনেক কিছু শিখছি। একজন গুণী অভিনেতার সান্নিধ্যে থাকলে প্রতিমুহূর্তে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা কিছু শেখার থাকে। এমন সুযোগ আমার জন্য অনেক বড় সৌভাগ্যের।’
‘যাপিত জীবন’ উপন্যাসের পটভূমি ভাষা আন্দোলন ঘিরে। গল্পের নায়ক থাকে জাফর। তাকে দেখা যায়, বাঙালি জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব করতে। কাহিনি যত এগোতে থাকে ততই বোঝা যায়, বাঙালির শিকড় ও চিন্তার প্রতিচিত্র হয়ে ওঠে ‘যাপিত জীবন’। এই উপন্যাস একসময় হয়ে ওঠে বাংলা ও বাঙালির শিকড়ের অস্তিত্বের কথা। জাফরকে দেখা যায় বাঙালির বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে ভাষা ও মাটির জন্য কথা বলতে। তবে সিনেমার কোন চরিত্রে অভিনয় করছেন, তা এখনো বলতে চান না মৌসুমী হামিদ। তিনি জানালেন, ‘সময়টাই আমাদের গল্পের নায়ক। এখানে চরিত্রের চেয়ে মানবিক যে প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে, সেটা আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। যে কারণে সিনেমাটি করছি।’
সেলিনা হোসেনের উপন্যাস থেকে এর চিত্রনাট্য করেছেন যৌথভাবে অনিমেষ আইচ ও ইমতিয়াজ হৃদয়। বাংলাদেশ সরকারের ২০২১-২২ অর্থবছরের অনুদান পাওয়া এই ছবিতে অভিনয় করছেন ডলি জহুর, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, আফজাল হোসেন, গাজী রাকায়েত, আজাদ আবুল কালাম, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, ইমতিয়াজ বর্ষণ, আশনা হাবিব ভাবনা, মৌসুমী হামিদ প্রমুখ।