‘আমি ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে আছি নিজের যোগ্যতায়’

ভৌতিক গল্প তাঁকে টানে না। কিন্তু আবিদ মল্লিকের ‘প্রচলিত’ সিরিজের পর্ব ‘হাতবদল’–এর চিত্রনাট্য পড়েই রাজি হয়ে যান ইয়াশ রোহান। গত সপ্তাহে এটি ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে। ‘এদিকে নেটওয়ার্কের বাইরে’র পরে ত্রিভুজ প্রেমের গল্প নিয়ে নাটক ‘সে বসে আছে’তে দেখা গেল তাঁকে। কাজ ও ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে গতকাল তাঁর সঙ্গে কথা বলল বিনোদন
ইয়াশ রোহান
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন

প্রশ্ন :

আপনার নামের আগে প্রায়ই ‘রোমান্টিক নায়ক’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

সবার আগে আমি একজন অভিনেতা। আমি কখনোই রোমান্টিক নায়ক হতে চাই নাই। কিন্তু আমি অনেক বেশি লাভ স্টোরিতে কাজ করেছি। সেই জায়গা থেকে দর্শকদের কাছে একটি পছন্দের জায়গা ক্রিয়েট হয়েছে। তারা আমার রোমান্টিক গল্পগুলো পছন্দ করেন। পরিচালকেরা রোমান্টিক গল্পগুলোতে বেশি কাস্টিং করেন।

প্রশ্ন :

রোমান্টিক থেকে ভৌতিক গল্প ‘হাতবদল’ কতটা প্রত্যাশা পূরণ করেছে?

আমি কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে হরর গল্পে বুঁদ হয়ে থাকি না। বলা যায়, এই জনরার গল্প পছন্দ না। আমাদের এখানে সেই রকম কাজ হয় না। কিন্তু হরর গল্পে কাজ করার মজা আছে। ‘প্রচলিত’–এর গল্প নিয়ে অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। আমার সহ–অভিনেতা ছিল একটি কুকুর! আমি কুকুর পছন্দ করি। কাজটি নিয়ে দর্শকেরা পছন্দ করেছেন, প্রশংসা করেছেন। দর্শকদের কথা, আমাকে অন্যভাবে দেখতে পেয়েই খুশি।

‘হাতবদল’–এ ইয়াশ রোহান। ছবি: চরকির সৌজন্যে

প্রশ্ন :

‘সে বসে আছে’তে খাইরুল বাসার আর আপনি আবার একসঙ্গে...

আমরা ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ করে তুমুল সাড়া পেয়েছি। দীর্ঘ একটা সময় পরে আবার একসঙ্গে কাজ করলাম। মিজানুর রহমান আরিয়ান ভাইয়ের পরিচালনায় আমরা দুই বন্ধু কাজ করেছি। বাশার আমার ভালো বন্ধু। আমাদের সিংকটা ভালো। নাটকে দুজনই একটি মেয়ের প্রেমে পড়ি। কিন্তু গল্পটি ভিন্নভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের কাজটি নিয়ে দর্শকেরা কথা বলছেন। এটা ভালো লাগছে।

প্রশ্ন :

আপনার ফেসবুক পোস্টে বেশির ভাগ স্ট্যাটাস ফুটবল খেলা নিয়ে। সম্প্রতি শেষ হলো বিশ্বকাপ ক্রিকেট। ক্রিকেট নিয়ে কোনো পোস্ট দিলেন না?

আমার ক্রিকেট নিয়ে কোনো আগ্রহই নেই। আমি ফুটবলের ভক্ত। আমার পছন্দের ম্যাচগুলো মিস করি না। আর আমি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করি। এখানের কাজের খবর তেমন শেয়ার করি না। আমার পেজে কাজের খবর শেয়ার করি।

প্রশ্ন :

‘পরাণ’-এর সাফল্যের পর আপনার ক্যারিয়ার কি আরও ভালো অবস্থায় যেতে পারত বলে মনে করেন?

আমার এমন কিছু কখনোই মনে হয়নি। আমার মনে হয়েছে, আমি যতটুকু ডিজার্ভ, ঠিক সেভাবেই ক্যারিয়ার এগিয়েছে। আমি এর থেকে কমও আশা করিনি, বেশিও আশা করিনি। আমি আমার পথেই হাঁটছি।

প্রশ্ন :

আপনার বাবা নরেশ ভূঁইয়া ও মা শিল্পী সরকার অপু। কেউ কি বলেছেন, অভিনয়শিল্পী দম্পতির সন্তান হিসেবে আপনি বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন?

আমার মা-বাবা দুজনই অভিনয়শিল্পী। এই ধরনের পরিবার থেকে আসলে কথা শুনতেই হবে। এই ধরনের কথা শোনার কারণও আছে। কিছু কথা শুনেছি। কিন্তু এগুলো ম্যাটার করে না। ইন্ডাস্ট্রি এমন একটা জায়গা দর্শক কাউকে পছন্দ না করলে টিকে থাকা কঠিন। দর্শকদের এক্সপেক্ট করতে হবে, এখানে ভালো কাজ আর পরিশ্রম একজনকে টিকিয়ে রাখে। সে ক্ষেত্রে মা-বাবা আর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড যা–ই হোক লাভ নেই। আমি এখনো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি, ফেবার করছি। আমি ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে আছি নিজের যোগ্যতায়। মা-বাবার যোগ্যতায় না।

‘পরাণ’–এ মিম ও ইয়াশ রোহান
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

সহকর্মীরা এসব নিয়ে কিছু বললে কী বলেন?

এটা যদি কেউ কিছু বলে থাকে তাহলে সে বলুক। এতে আমার কিছু যায় আসে না। আমাকে চ্যালেঞ্জ নিয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে। এখানে এলাম দেখলাম আর জয় করলাম—এই রকম কোনো দিনই কেউ করতে পারেনি। কারণ, অভিনয় করতে করতেই শিল্পী পরিণত হন। কেউ কোনো দিন প্রথম কাজে এসে দুনিয়া কাঁপিয়ে দেয়নি। কাজ করতে করতে একটা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যেকোনো কিছু করতে গেলে চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে, আমার কাছে এটা লার্নিং।

প্রশ্ন :

আপনার মা আপনাকে শৈশব থেকেই দিলীপ কুমার নামে ডাকতেন, এই নামে আর কে আপনাকে ডাকেন?

শৈশব থেকে আমার মা–ই শুধু আমাকে দিলীপ কুমার ডাকতেন। আর কেউ কোনো দিন দিলীপ কুমারের সঙ্গে তুলনা করেননি।

ইয়াশ রোহান
ফেসবুক