মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পেলেন সৈয়দ আব্দুল হাদী

২০২৩ সালের মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পেলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার ২০২২-এর ২৪তম আসরে তাঁর হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।

সৈয়দ আব্দুল হাদীর হাতে সম্মাননা, ক্রেস্ট ও চেক তুলে দেন শিল্পী রুনা লায়লা। এ সময় মঞ্চে ছিলেন স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। কানায় কানায় পরিপূর্ণ মিলনায়তনের সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানান বরেণ্য এ শিল্পীকে।

পুরস্কার প্রাপ্তির পর মাইক্রোফোন হাতে সৈয়দ আব্দুল হাদী বলেন, ‘আমি আনন্দে বাকরুদ্ধ। এতটা ভালোবাসা কোথায় রাখি, কিভাবে রাখি, কিভাবে প্রকাশ করি। যে সম্মানের সঙ্গে ভালোবাসা নেই, অথবা যে ভালোবাসার সঙ্গে সম্মান নেই—আমি তার কোনটাতেই আমার আগ্রহ নেই। মেরিল–প্রথম আলোর পুরস্কারে দুটোই দেওয়া হয়েছে। আমি সানন্দচিত্তে সবিনয়ে এই সম্মান গ্রহণ করছি।’

সম্মাননার সঙ্গে প্রাপ্ত দুই লক্ষ টাকা দরিদ্র মেধাবি শিক্ষার্থীদের জন্য পরিচালিত প্রথম আলো ট্রাস্টের তহবিলে দেওয়ার ঘোষণা দেন আব্দুল হাদী।

 এর আগে সন্ধ্যা ছয়টায় জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে ভরতনাট্যম, কত্থক ও মণিপুরি নাচ দিয়ে পরিবেশনা শুরু হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় তারকাদের উপস্থিতিতে এ আয়োজন পরিণত হয়েছে মিলনমেলায়। হাজির হয়েছেন নবীন, প্রবীণ ও খ্যাতিমান সব তারকা। অনুষ্ঠানে নবীন প্রজন্মের চার শিল্পী রাজীব, সাব্বির, অপু আমান ও কিশোর শোনান সৈয়দ আব্দুল হাদীর গাওয়া গানের অংশবিশেষ।
৮৩ বছর বয়সী হাদী পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সংগীত সাধনা করছেন।  ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসত’, ‘চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘যেও না সাথি’, ‘আমি তোমারই প্রেম ভিখারি’, ‘চক্ষের নজর এমনি কইরা’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তে তুমি’, ‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’, ‘আউল বাউল লালনের দেশে’, ‘মনে প্রেমের বাত্তি জ্বলে’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’–এর মতো বহু জনপ্রিয় গানে প্রাণ দিয়েছেন হাদী।
সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০০ সালে একুশে পদক দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। চলচ্চিত্রে গান গেয়ে সেরা গায়ক ক্যাটাগরিতে সৈয়দ আব্দুল হাদী জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচবার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি। পড়াশোনাকালে গানে আবির্ভাব ঘটে তাঁর। ১৯৬৪ সালে ‘ডাকবাবু’ সিনেমায় প্রথমবার একক কণ্ঠে গান করেছেন আব্দুল হাদী। পাশাপাশি সুরকার ও সংগঠক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর।
১৯৪০ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আব্দুল হাদী। বেড়ে উঠেছেন আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কলকাতায়। শৈশবেই গান শিখেছেন তিনি।