ঘরের বস টয়া, শাওন তাহলে কী?

‘আমরা আমাদের জীবনসঙ্গীকে গ্রান্ডেট ধরে নিই। সে তো আছেই, থাকবেই। তার সঙ্গে যেমন ইচ্ছা তেমন আচরণ করা যায়। এমন ভাবনা থেকেই শুরু হয় সম্পর্কের তিক্ততা।’ ক্লোজআপ ‘ভালোবাসার দিনে ভালোবাসার গল্প’ সিজন-৫-এর এক স্টুডিও অনুষ্ঠানে নিজের সম্পর্কের চমৎকার টিপস নিয়ে এ কথা বলেন মডেল ও অভিনয়শিল্পী মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া। ভালোবাসার সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার জন্য এটাকেই প্রধান কারণ হিসেবে মনে করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন টয়ার স্বামী, অভিনেতা সায়েদ জামান শাওন। অভিনেতা পরিচয়ের বাইরে শাওন পেশায় একজন কেবিন ক্রুও।
নিজেদের সম্পর্কের, ভালোবাসার রসায়ন জানতে চাইলে দুজনই জানান, টয়া বলেন, ‘ও তো থাকছেই—এমন ভাবনার কারণে জীবনসঙ্গীর প্রতি একধরনের অবহেলা চলে আসে। এ থেকেই খিটিমিটি শুরু হয়। আমি শাওনকে বলেছি, আমরা যেমন অফিসের বসকে সবচেয়ে বেশি সমঝে চলি, ভালো ব্যবহার করি, তেমনি জীবনসঙ্গীর সঙ্গেও তেমনটা আচরণ করি, তাহলে তিক্ততাগুলো কাছ ঘেষতে পারে না। আমরা দুজনই এটা মেনে চলি। চমৎকার আছি।’

সম্পর্কের সুন্দর রসায়ন এবং ভালো থাকার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের প্রথম প্রস্তাব এবং বিয়ের ঘটনা বর্ণনা করেন এই দম্পতি। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ক্লোজআপ ও প্রথম আলো ডটকম আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁরা শোনান নিজেদের জীবনের গল্প।

শাওন বলেন, ‘আমাদের বিয়ে হয় ২৯ ফেব্রুয়ারি। এটা প্ল্যান করেই হয়। তিন বছর আগে আমার জন্মদিনে টয়া আমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য জন্মদিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে। আর আমি দ্বিগুণ সারপ্রাইজ ফেরত দেয়ার জন্য সেদিনই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিই। আমাদের দুই পরিবারই এই মজার বিয়ের প্রস্তাবটায় সহায়তা করে।’
প্রথম পরিচয়, বন্ধুত্ব ও বিয়ে নিয়ে একের পর এক প্রশ্নের মাধ্যমে এই জুটির কাছ থেকে তাদের নানা অজানা কথা দর্শকের সামনে তুলে ধরেন অনুষ্ঠানের সঞ্চালক নীল হুরেজাহান।

সম্পর্কের চমৎকার রসায়ন, চমকপ্রদভাবে বিয়ের প্রস্তাবসহ বিয়ের পর কতটুকু প্রেম টিকে আছে—জানতে চান উপস্থাপক। শাওন জানান, ‘বিয়ের আগে তো আসলে খুব বেশি প্রেম করা হয়নি। আমি ওকে সরাসরিই বলেছিলাম, আসলে প্রেম করে সময় নষ্ট করার সময় আমার নেই। আমি বিয়ে করব এবং বিয়ের পর প্রেম হবে। আমাদের ভাবনা মতো বিয়ের পরেই প্রেম বেশি হচ্ছে। আমাদের বিয়ের পরপরই শুরু হয়েছিল কোভিড-১৯। তো, গৃহবন্দী ওই সময়টাতে পরস্পরকে বুঝতে পেরেছি খুব বেশি।’

প্রেম তো বাড়লই, টক-ঝাল-মিষ্টির মতো ঝগড়াঝাঁটির খবর জানাতে গিয়ে টয়া বললেন, ‘একসঙ্গে থাকতে গেলে তো ঝামেলা লাগেই। ঝামেলা লাগলে তখন আমি তেমন কথা বলি না। কিন্তু শাওন যেভাবেই হোক ঝগড়া মিটমাট করে ফেলে। আমিও মিলে যাই। ঝগড়া বাড়তে দিই না আমরা দুজনের কেউই।’

ভালোবাসার দিনে ভালোবাসার গল্প করতে এসে দুজনের যে দিকগুলো ভালো, সেটা প্রকাশ করতে গিয়ে টয়ার কাছ থেকে জানা গেল শাওনের মানবিকতার কথা। সুন্দর আচরণের কথা। দায়িত্বশীলতার কথা। আর শাওন জানালেন, টয়া কোনো সমস্যা ছেড়ে দেয় না, সমাধান করে। টয়া খুবই রসবোধসম্পন্ন একজন মানুষ।

অন্যদিকে, নেতিবাচক আচরণের প্রসঙ্গে দর্শক জেনে যাবেন শাওনের সময় নিয়ে গড়িমসি ভাব আর টয়ার রাগলে একেবারে চুপ হয়ে যাওয়ার কথা। অনুষ্ঠানের শেষে দর্শকদের উদ্দেশে এই দম্পতি জানান, কাছের মানুষের যত্ন নিতে হবে। সেইসঙ্গে ভালো রাখতে হবে নিজেকেও। কারণ, আগে নিজেকে ভালো রাখলে, ভালোবাসলে সঙ্গের মানুষটিকেও ভালো রাখা যায়।