অভিনয় করাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট

ফেরদৌসী মজুমদার
ফেরদৌসী মজুমদার

ফেরদৌসী মজুমদার বললেন, নাটকে অভিনয় করাই ছিল নাকি তাঁর নিজের টার্নিং পয়েন্ট। আরও বললেন, ‘নাটকে অভিনয় করব, এটা কখনোই ভাবিনি। মঞ্চে প্রথম অভিনয় করার পর অন্য রকম স্বাদ পেলাম। নাটকের প্রতি এই আকর্ষণই আমাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে।’
মঞ্চের ওই নাটকের নাম ডাক্তার আবদুল্লাহর কারখানা। লিখেছেন শওকত ওসমান। মঞ্চস্থ হবে ইকবাল হলে (এখন জহুরুল হক হল)। ভাই মুনীর চৌধুরী (নাট্যকার-শহীদ বুদ্ধিজীবী) ফেরদৌসীকে বললেন, ‘এটা এমন কোনো বিষয় না। রোবটের চরিত্র। তুই যেভাবে কথা বলিস, সেভাবে বললেই হবে। হনহন করে মঞ্চে যাবি, সংলাপ বলবি, নেমে আসবি, ব্যস।’
কিন্তু অভিনয়ের কথা শুনেই ফেরদৌসী মজুমদারের আত্মারাম খাঁচা ছেড়ে যাওয়ার জোগাড়। আঁতকে উঠে বললেন, ‘বাবা আমাকে মেরে ফেলবেন।’
মঞ্চে তাঁকে যেতেই হলো। সেদিন মঞ্চের ঘটনা প্রসঙ্গে ফেরদৌসী মজুমদার বললেন, ‘আমি তো অভিনয় জানি না, কিছুই বুঝি না। কী করব জানি না। সেদিন কী করেছিলাম, এখনো তা মনে করতে পারছি না। প্রায় ১৫ মিনিটের মতো মঞ্চে ছিলাম। শুধু মনে হচ্ছিল, বাবা আমাকে মেরেই ফেলবেন। বাবা ছিলেন ভীষণ রক্ষণশীল। নাটকের কথা তাঁকে তো বলাই যেত না। আর আমিই মঞ্চে অভিনয় করেছি! পরে মঞ্চ থেকে নেমে আসার পর ভালোই লেগেছে। অন্যরাও বেশ উৎসাহ দিলেন।’
ডাক্তার আবদুল্লাহর কারখানার পর ফেরদৌসী মজুমদার অভিনয় করেন থিয়েটারের সুবচন নির্বাসন নাটকে। ১৯৭৪ সালে নাটকটি লিখেছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। এরপর একের পর এক দর্শকনন্দিত নাটকে অভিনয় করেন তিনি।
গোড়ার দিকে নিজের উল্লেখযোগ্য কাজ প্রসঙ্গে ফেরদৌসী মজুমদার বলেন, ‘ভারতের দিল্লিতে আমরা একটি নাটক করেছিলাম। নাম এখনো কৃতদাস। কর্মজীবী এক নারীর গল্প। সে সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম। তুমুল দাপুটে এক চরিত্র। এটি মঞ্চায়নের পর দিল্লির কয়েকটি বড় পত্রিকায় আমাকে নিয়ে খবর বেরিয়েছিল। একটার শিরোনাম ছিল “ইলেকট্রিফায়িং বাংলাদেশ”। আসলে আমি প্রতিটি নাটকেই প্রবল ভালোবাসা থেকে অভিনয় করি। নাটকগুলোই আমার প্রাণ।’
আর টিভি নাটকে নিজের টার্নিং পয়েন্ট বলতে উল্লেখ করলেন বরফ গলা নদী নাটকের তালাকপ্রাপ্ত মহিলা আর সংশপ্তক ধারাবাহিকের ‘হুরমতি’র কথা। বললেন, ‘হুরমতিকে এখনো দর্শক মনে রেখেছে। এতটা সাড়া পাব, তা কিন্তু আগে ভাবিনি।’