আজ শুরু ১ম আন্তর্জাতিক মৃত্তিকালগ্ন নাট্যোৎসব

প্রস্তুতি চূড়ান্ত। সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমীর ভেতরে বাইরে সাজ সাজ রব। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই শত শত সংস্কৃতি অনুরাগীর উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে একাডেমী প্রাঙ্গণ। আজ এখানেই শুরু হতে যাচ্ছে ১ম আন্তর্জাতিক মৃত্তিকালগ্ন নাট্যোৎসব। শুধু মাত্র ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নাটক নিয়ে এই প্রথমবারের মতোই দেশে এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে এই নাট্যোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। আট দিনব্যাপী এ উৎ​সবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এবং এ উৎ​সবের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক ও নাট্য পর্ষদের আহ্বায়ক লিয়াকত আলী সভাপতিত্ব করবেন। স্বাগত ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন উৎসবের সদস্যসচিব নাট্যজন কামাল বায়েজীদ। এ ছাড়া, এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ঢাকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরণ।
কেন এই উৎ​সব? জানতে চাইলে লিয়াকত আলী বলেন, রূপবৈচিত্র্যময় এ পৃথিবীতে বৃহৎ জাতিগোষ্ঠী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী— সবারই রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। পারস্পরিক সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য এবং সহনশীল বিশ্ব নির্মাণে সংস্কৃতি বিনিময় অপরিহার্য। আর সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি জোরালো ক্ষেত্র হচ্ছে নাটক। এই লক্ষ্যে নিজস্ব সংস্কৃতির আবহে তৈরি নাটক নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে এ উৎস​বের।
তিনি জানান, সম্প্রীতি নাট্যোৎসব পর্ষদ আয়োজিত প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই উৎ​সবে বাংলাদেশের ৭টি এবং ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মৃত্তিকালগ্ন জাতি গোষ্ঠীর ৯টি নাট্যদল অংশ নিচ্ছে। এ দুই দেশের ১৬টি নাট্যদলের প্রযোজনা নিয়ে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিতব্য এই আয়োজনটি জাতীয় নাট্যশালার মূল হল, পরীক্ষণ থিয়েটার হল ও নন্দন মঞ্চে একযোগে এই উৎ​সব অনুষ্ঠিত হবে।
সম্প্রীতি নাট্যোৎসব পর্ষদের সদস্যসচিব কামাল বায়েজীদ জানালেন, এই উৎসবে বাংলাদেশের চাকমা, মণিপুরি, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, গারো, মারমা, ওঁরাও, এবং ভারতের অসমিয়া, খাসি, মণিপুরি, ত্রিপুরা, মিজো, ঝাড়খন্ড ও ছে মৃত্তিকালগ্ন গোষ্ঠীর নাট্যদলসমূহ তাদের প্রশংসিত নাটক মঞ্চস্থ করবে। ইতিমধ্যে এসব দলের বেশির ভাগ প্রতিনিধি ঢাকায় চলে এসেছেন।
কামাল বায়েজীদ আরও জানান, প্রতিদিন তিন পর্যায়ে পরিবেশনা থাকবে। বিকেল ৪টায় একাডেমীর নন্দন মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে আমন্ত্রিত দেশি ও বিদেশি নাট্যদলসমূহের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পরিবেশনা সব দর্শকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এরপর সন্ধ্যা ৬টায় পরীক্ষণ থিয়েটার হলে বাংলাদেশের মৃত্তিকালগ্ন সম্প্রদায়ের পরিবেশনায় নাটক এবং সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে প্রদর্শিত হবে ভারতীয় নাট্যদল সমূহের নাটক।