‘আমরা ম্যারাডোনাকে ভালো না বেসে থাকতে পারিনি’

ডিয়েগো আরমান্ডো ম্যারাডোনা। তাঁর জন্য সবার হৃদয়ে বিশেষ জায়গা ছিল। সেই হৃদয়ের এক পাশে যদি থাকে তাঁর খেলা দেখে সাজানো ভালোবাসার অযুত ডালি, আরেক পাশে তাঁর জন্য দুশ্চিন্তা। সব ছাপিয়ে দুশ্চিন্তাই শেষ কথা হয়ে দাঁড়াল। 'ফুটবলের ঈশ্বর' যিনি, বয়সের ক্যালেন্ডারে ৬০, তাঁর জন্য একটা ক্ষুদ্র সংখ্যা।

বিশ্বকাপ হাতে ম্যারাডোনা,১৯৮৬
ছবি: সংগৃহীত

তবুও জীবনে যা চেয়েছেন, যেভাবে চেয়েছেন, তার সবটুকু নির্যাস নিয়ে চিরবিদায় বললেন ম্যারাডোনা। তাঁর জীবন দেখে যে কেউ ঈর্ষা করে বলবে, এভাবেও বেঁচে থাকা যায়!
ম্যারাডোনার মৃত্যুতে এখনো কাঁদছে আর্জেন্টিনা, নাপোলি থেকে শুরু করে বিশ্বের নাম না জানা পাড়ার গলির ছোট্ট ছেলেটা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন হলিউড, বলিউড, টালিউড, ঢালিউডসহ বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র কারখানার তারকারা। এই যে সারা বিশ্বকে এক সুতায় শোকের ফুলে গাঁথা, এই না হলে আন্তর্জাতিকতা। দেখে নেওয়া যাক, কী বললেন টেলিভিশন, ডুব, নো ল্যান্ডস ম্যানের নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।  

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশি এই পরিচালক তাঁর ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, 'ম্যারাডোনার সঙ্গে সঙ্গে আমার শৈশবের একটা বড় অংশও বিদায় নিল। আমি কোনোকালে আর্জেন্টিনার সমর্থক ছিলাম না, নই। বরং বিপরীত ক্যাম্পেই আমার ঘরবাড়ি। আমাদের কাজ মূলত আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় হলেই সম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে তাঁর বদনাম করতে, কত খারাপ খেলে এইটা প্রমাণ করতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া। কিন্তু গোপনে আমরা ম্যারাডোনার প্রেমে পড়া থেকে নিজেদের থামাতে পারিনি। আমাদের হৃদয় নীরবে চিৎকার করে ঠিকই বলত, তাঁর মতো কেউ নেই। কিছু সাধারণ মরিচা ধরা গাড়ির ভেতর তিনি যেন ছিলেন চকচকে পোরশে। একাই খেলার ভাগ্যের মোড় ঘুরিয়ে দিতেন। তিনি এক পাগলাটে, বদমেজাজি জাদুকর, যিনি স্বর্গের সিঁড়ি বেয়ে নেমে এসেছিলেন। তিনি এক অভ্যুত্থানের নাম। বিদায় ম্যারাডোনা। আপনাকে ভালো না বেসে থাকতে পারিনি।

ম্যারাডোনা দু পায়ের জাদুতে মাত করেছিলেন ফুটবলপ্রেমীদের।