আয়নাবাজি:আমার ছয়চরিত্রের সবই আলাদা

আয়নাবাজিতে অভিনয়ের জন্য ১৫ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন চঞ্চল চৌধুরী।  ছবি: কবির হোসেন
আয়নাবাজিতে অভিনয়ের জন্য ১৫ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: কবির হোসেন

এক টেলিভিশন চ্যানেল থেকে আরেক টেলিভিশন চ্যানেল। অনুষ্ঠান থেকে অনুষ্ঠান। গত কয়েক দিন এভাবেই সময় কাটছে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর। আগামীকাল মুক্তি পাচ্ছে আয়নাবাজি। এই ছবিতে ছয়টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

শোনা যাচ্ছে, আয়নাবাজিতে আপনার বেশ কয়েকটি চরিত্র।

হ্যাঁ, আমি ছয়টি চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই ছয়টি চরিত্রের প্রতিটি আলাদা। পোশাক-পরিচ্ছদ, মেকআপ, কণ্ঠ—সবই আলাদা।

এতগুলো চরিত্রে ঢুকতে সমস্যা হয়নি?

একটু তো সমস্যা ছিল। খুব দ্রুত এক চরিত্র থেকে আরেক চরিত্রে যেতে হয়েছে। পরিচালকের কাছে আমার একটা দাবি ছিল, যেহেতু আমাকে ছয়টি চরিত্রে অভিনয় করতে হবে, তাই যেন একজন ভালো মানের মেকআপ আর্টিস্ট নেওয়া হয়। তিনি আমার কথা রেখেছিলেন। কলকাতা থেকে মোহাম্মাদ আলী নামে খুব ভালো একজন মেকআপ আর্টিস্ট আনা হয়েছিল। তাঁর সহযোগিতায় খুব দ্রুত নিজেকে বদলে নিয়েছি।

আপনার অভিনীত ‘মনপুরা’ ব্যবসাসফল সিনেমা। কী মনে হচ্ছে, ‘আয়নাবাজি’ কি ‘মনপুরা’কে ছাড়িয়ে যাবে?

মনপুরা আর আয়নাবাজি—দুটো দুই ধরনের সিনেমা। আসলে দর্শকের রেসপন্স, তাঁদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা, হল ব্যবস্থাপনা, ডিস্ট্রিবিউশন—সবকিছুর ওপর একটা ছবির ভালোমন্দ নির্ভর করে। সে ক্ষেত্রে মনপুরাকে ছাড়িয়েও যেতে পারে আয়নাবাজি। আর কাজ হিসেবে আমি বলতে পারি, মনপুরার চেয়ে অনেক বেশি পরিণত কাজ হয়েছে আয়নাবাজিতে। মেকিং, সিনেমাটোগ্রাফি, অভিনয়—মানে পুরো প্রোডাকশনটাই পরিণত। একটু বুঝিয়ে বলি, মনপুরায় অভিনয় করার সময় আমার অভিনয় সম্পর্কে যে ধারণা ছিল, সেটি নিশ্চয় এই সাত বছরে কিছুটা পরিণত হয়েছে। আমি এটাই বোঝাতে চেয়েছি।

‘আয়নাবাজি’তে অভিনয় করতে গিয়ে নাকি ভাত ছেড়েছিলেন?

হা হা হা। চরিত্রের জন্য আমি সাড়ে তিন মাস ভাত খাইনি। শুটিংয়ের আগে এক মাস এবং শুটিংয়ের সময় আড়াই মাস। শুধু তা-ই নয়, প্রতিদিন ভোরে ইনস্ট্রাক্টর এসে দুই ঘণ্টা করে ব্যায়াম করাতেন। আড়াই মাস এভাবে চলেছে। এত কিছুর পরে আমার ওজন কমেছিল ১৫ কেজি।

‘আয়নাবাজি’র গল্প কি ফাঁস করে দেবেন একটু?

গল্প তো বলা যাবে না। শুধু এতটুকু বলতে পারি, এই গল্পটি সবার জন্য। সবাই খুব সহজে বুঝবেন। একজন গ্রামের মানুষকে গল্প যেভাবে আকর্ষণ করবে, শহরের মানুষকেও করবে। সব ধরনের দর্শক দেখবেন—এটা আমার বিশ্বাস। মনপুরা তো গ্রামের ছবি, তাই বলে শহরের মানুষ কি দেখেননি?

কিন্তু ছবিতে এমন কী আছে, যার জন্য হলে যাবেন সবাই?

এটি একটি মৌলিক গল্প। বাংলাদেশের মানুষের গল্প। ঢাকা শহরের ঘটনা। আর অমিতাভ রেজা একজন স্বনামধন্য মেধাবী নির্মাতা। তাঁর প্রথম নির্মাণ দেখার জন্য অবশ্যই হলে যাবেন সবাই। আর আমরা তো খুব বেশি ভালো সিনেমা পাই না। একটা ভালো কিছু পেলে অবশ্যই হলে গিয়ে সেটি দেখা দরকার। আয়নাবাজি কমেডি ধাঁচের গল্প। মানুষ সিনেমা হলে ঢুকলে শেষ না করে উঠবেন না। আর পুরো সিনেমাটির ব্যাপারে আমি বলব, যে চরিত্রে যাঁকে দরকার, ঠিক তাঁকেই নিয়েছেন অমিতাভ। একই ঘটনা ঘটেছে লোকেশনের বেলাতেও। তাই সবার কাছে আমার অনুরোধ, একটা পরিচ্ছন্ন মৌলিক গল্পের ছবি দেখার জন্য হলে আসুন। নির্মাণের জায়গা থেকে আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। বাকি কাজ দর্শকদের। তাঁরা যদি হলে আসেন, তবেই আমাদের শ্রম সার্থক হবে।

সাক্ষাৎকার: আনন্দ প্রতিবেদক