উৎসবে মাটির ঘ্রাণ

জাতীয় নাট্যশালায় ‘১ম আন্তর্জাতিক মৃত্তিকালগ্ন নাটে্যাৎসব’র উদ্বোধনীতে সমবেত পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো
জাতীয় নাট্যশালায় ‘১ম আন্তর্জাতিক মৃত্তিকালগ্ন নাটে্যাৎসব’র উদ্বোধনীতে সমবেত পরিবেশনা l ছবি: প্রথম আলো

দেহবল্লরীতে বহু বছরের পুরোনো নিজস্ব নাচের মুদ্রা, বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে পাহাড়-জল-জঙ্গলের মানুষের বুলি, সব মিলিয়ে অন্য রকম এক আয়োজন জাতীয় নাট্যশালায়। শীত পুরোপুরি আসার আগেই এই আয়োজন দিয়ে জমে উঠল রাজধানীর নাট্যাঙ্গন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে শুরু হওয়া এই আয়োজনের পোশাকি নাম, ‘১ম আন্তর্জাতিক মৃত্তিকালগ্ন নাট্যোৎসব, ঢাকা’। সকল জাতিসত্তার মাঝে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও সহনশীল বিশ্ব নির্মাণের আকাঙ্ক্ষায় এ উৎসবের আয়োজন করেছে ‘সম্প্রীতি নাট্যোৎসব পর্ষদ’।
পাহাড়ি জনপদের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল উৎসবের পরিবেশ। সন্ধ্যায় নাট্যশালার মঞ্চের এক পাশে প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সম্মানিত অতিথি ছিলেন আইটিআইয়ের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, নাট্যজন আতাউর রহমান, নির্দেশক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক জয়শ্রী কুণ্ডু ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাট্যনির্দেশক প্রবীর গুহ। স্বাগত বক্তব্য দেন পর্ষদের সদস্যসচিব কামাল বায়েজীদ। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক ও পর্ষদের আহ্বায়ক লিয়াকত আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী মৃত্তিকালগ্ন এই নাট্যোৎসব সৃজনশীল সাংস্কৃতিক চর্চাকে আরও গতিশীল করবে বলে মন্তব্য করেন।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করে সংস্কৃতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের সংস্কৃতিবিনিময়ের মাধ্যমে উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। পাশাপাশি আরও বিকশিত হবে পরস্পরের জানাশোনা।
উদ্বোধনী সন্ধ্যায় ছিল না কোনো নাটকের প্রদর্শনী। আলোচনার পর মঞ্চে প্রথমে পরিবেশিত হয় ভারতের আসামের সংগীত দল স্ততির যন্ত্রসংগীতের পরিবেশনা। পাঁচ শিল্পীর দলটি অনবদ্য সুরের কোরাসে নেতৃত্ব দেয় বেহালা। আর ঢোল-তবলা, মাদল ও খঞ্জনির সহযোগে দলটি পরিবেশন করে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত থেকে শুরু করে ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম দেখা পাইলাম না’, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’সহ কিছু অসমিয়া গানের সুর। শিল্পকলা একাডেমীর পরিবেশনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষৃদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সমন্বিত নৃত্য পরিবেশনাটিও ছিল মনমাতানো। ‘সম্প্রীতি নৃত্য’ শীর্ষক পরিবেশনায় নাচের ছন্দে তুলে ধরা হয় দেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার বৈচিত্র্যময় উপস্থাপনা।