জলদস্যুদের সামনে সিনেমার শিল্পীরা

‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবিতে অভিনয় করবেন নুসরাত ফারিয়া ও সিয়াম আহমেদ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবিতে অভিনয় করবেন নুসরাত ফারিয়া ও সিয়াম আহমেদ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

১ নভেম্বর ‘সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত দিবস’। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনটিকে ‘সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই জলদস্যু মুক্ত করার দুঃসাহসিক সব গল্প নিয়ে এবার তৈরি হচ্ছে সিনেমা। নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’। আগামীকাল শুক্রবার ‘সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত দিবস’-এর এক বছর পূর্তি হবে। সকালে বাগেরহাট স্টেডিয়ামে জলদস্যু মুক্ত দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সিনেমাটির লোগো উন্মোচন ও শিল্পীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। জানা গেছে, সেই অনুষ্ঠানে সিনেমাটির প্রায় বেশির ভাগ শিল্পী উপস্থিত থাকবেন।

‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবির পরিচালক দীপংকর দীপন জানিয়েছেন, ‘যে অনুষ্ঠানে “অপারেশন সুন্দরবন” ছবির শিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে, সেখানে এরই মধ্যে আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুরা থাকবেন। আরও থাকবেন কোস্টগার্ড আর সুন্দরবন ঘিরে গড়ে ওঠা বনজীবীরা। অনুষ্ঠানে ছবিটির মুক্তির তারিখও ঘোষণা করা হবে।

‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবিতে অভিনয় করবেন রিয়াজ, সিয়াম আহমেদ, রোশান, নুসরাত ফারিয়া, তাসকিন, মনোজ মিত্র, দীপু ইমাম, শেখ এহসানুর রহমান প্রমুখ। এরই মধ্যে ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তাঁরা।

ছবিতে সিয়াম আহমেদ একজন র‌্যাব কর্মকর্তা। সিয়াম বলেন, ‘আমাদের পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনীর সদস্যরা দেশের জন্য, দেশের স্বার্থে অনেক কিছু ত্যাগ করেন। সেই ধরনের একটি চরিত্র সায়েম। এই চরিত্রে কাজ করার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য গর্বের।’

চরিত্রটির জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করছেন? সিয়াম বলেন, ‘এর আগে র‌্যাব সদর দপ্তরে চরিত্রটির ওপর কয়েকটি কর্মশালা করেছি। এ ধরনের চরিত্রের জন্য কৌঁসুলি হতে হয় আর মেধা খাটাতে হয়। শুটিংয়ের আগে আগে আরও কিছু প্রশিক্ষণ হবে।’

ছবিতে নুসরাত ফারিয়া একজন বাঘ গবেষক। চরিত্রটি করার সুযোগ পেয়ে দারুণ খুশি। তিনি বলেন, ‘খুবই শক্তিশালী চরিত্র। দীপংকর দীপনের “ঢাকা ২০৪০” নামে আরেকটি ছবির শুটিং চলছে। আমি মনে করি, দুটি ছবির চরিত্র পরিচালকের কাছ থেকে আমার জন্য বড় উপহার।’

‘অপারেশন সুন্দরবন’ যৌথভাবে প্রযোজনা করছে র‌্যাব ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ও থ্রি হুইলার। ছবির গল্প লিখেছেন গবেষণা উন্নয়ন একটি দল (আরডিটি)। চিত্রনাট্য লিখেছেন যৌথভাবে নাজিম উদ-দৌলা ও দীপকংর দীপন।

দীপংকর দীপন বলেন, ‘গত বছর এপ্রিল মাসে কাজটি করার প্রস্তাব আসে র‌্যাব থেকে। বিষয়টি নিয়ে সিনেমা করা যাবে কি না, তা গবেষণা করে বুঝতেই ছয় মাস লেগে যায়। যেহেতু সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত করতে ১০ বছর লেগেছে। সেই বিষয়গুলো থাকতে হবে। পাশাপাশি সুন্দরবনকে ঘিরে বহু মানুষের জীবনজীবিকার বিষয় আছে। সবমিলে কাজটি সহজ নয়। পরে এক বছর গবেষণা করে একটা জায়গায় এসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কাজটি করব।’

ছবির গল্প প্রসঙ্গে দীপংকর দীপন জানান, জলদস্যু নিধনের জন্য অভিযান চালাতে গিয়ে র‍্যাব বুঝতে পারে, এর শিকড় অনেক গভীরে। যাদের সঙ্গে খুলনা, বাগেরহাট, পাথরঘাটা, রামপাল, মোংলা, সাতক্ষীরা অঞ্চলের অনেক মানুষ জড়িত। সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়ার চারণক্ষেত্র। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। র‍্যাব তখন গভীরে ঢোকার চেষ্টা করে। কাজটি করতে গিয়ে তারা চমকে যায়। যা তাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়। এভাবে গল্প এগিয়ে যাবে।

পরিচালক জানান, আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ফ্লাইটে যশোর রওনা হয়েছেন ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এরপর সড়কপথে তাঁরা সুন্দরবন যাবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ছবিটির শুটিং শুরু হবে। গভীর সমুদ্র ও সমুদ্রের ধার ঘেঁষে মান্দারবাড়ি চর, বঙ্গবন্ধু চর, পত্নীর চর আর কটকার চরে শুটিং হবে।