নজর কাড়ল বাংলাদেশের নাচ ও গান

উৎসবের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ প‍্যাভিলিয়নে গান করেন বাউল শফি মণ্ডল। সঙ্গে ছিল সাধনার শিল্পীদের নাচ l ছবি: প্রথম আলো
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ প‍্যাভিলিয়নে গান করেন বাউল শফি মণ্ডল। সঙ্গে ছিল সাধনার শিল্পীদের নাচ l ছবি: প্রথম আলো

পোশাকের আনুষ্ঠানিকতা ও জাঁকজমকের জন্য নৃত্যশিল্পীদের অভিজাত ও নয়নাভিরাম দেখায়। দেহের অভিব্যক্তি ও মুদ্রা যুক্ত করে ভাবের উপস্থাপনায় তা হয়ে ওঠে নৈসর্গিক। ভারতের মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহোয় বসেছে সেই ভুবনমোহিনীদের হাট। সারা পৃথিবী থেকে সেখানে যোগ দিয়েছেন নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যপ্রেমীরা।
গত সোমবার সেখানে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব ‘খাজুরাহো ড্যান্স ফেস্টিভ্যাল’, পৃথিবীর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক শাস্ত্রীয় নাচের আসর।
ঐতিহাসিক শহরটিতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক আসেন সেখানকার মন্দিরগুলো দেখতে। সংখ্যায় গোটা ত্রিশেক। তেমনই ভগ্নপ্রায় একগুচ্ছ সুদৃশ্য মন্দিরের গা ঘেঁষে খোলা মাঠে আয়োিজত হয়েছে উৎসবের ৪৩তম আসর। সাজানো হয়েছে পৌরাণিক সাজে। এ বছর উৎসবে অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ।
উদ্বোধনী দিনে মূল মঞ্চে শুরুতে ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী অনুজ মিশ্রর কত্থক। এ ছাড়া ওডিশি ও কত্থক পরিবেশন করেন সঞ্চিতা ভট্টাচার্য ও জয়শ্রী আচার্য। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও ছিল তিনজন শিল্পীর ওডিশি ও কত্থক পরিবেশনা। মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুর জেলার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই আয়োজনে থাকবে ভরতনাট্যম, ছৌ, মোহিনীআট্টম, কুচিপুড়ি ও কথাকলি নৃত্য।
সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করে উৎসবস্থল ঘুরে আসেন উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী সাংস্কৃতিক সংগঠন সাধনার শিল্পীরা। শোভাযাত্রায় ছিল রণপা, বাউল, ঢোল, লাঠিয়াল, রিকশার রেপ্লিকা, বর-কনেসহ বাংলার ঐতিহ্যবাহী প্রায় সবকিছু। পরে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের মঞ্চে রাইবেশে লাঠিখেলা দিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা।
গতকাল সেখানে ছিল শফি মণ্ডলের বাউলগানের সঙ্গে নৃত্য। সাদা পোশাকে নৃত্যশিল্পীরা ‘হৃদ-মাঝারে রাখব’, ‘মিলন হবে কত দিনে’, ‘আমি কোথায় পাব তারে’ গানগুলোর সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন। কোরিওগ্রাফিতে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে শহীদ মিনারের আবহ তৈরি করে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বাংলার এই নাচ ও গান নজর কেড়েছে স্থানীয় মানুষ ও পর্যটকদের।
আগামী চার দিন বিকেলে রবীন্দ্রসংগীত ও নজরুলসংগীতের সঙ্গে নৃত্য, কত্থক ও মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন তাঁরা। উৎসবের শেষ দিন মূল মঞ্চে থাকবে কল্পতরু বাংলাদেশের শিল্পী অমিত চৌধুরীর পরিচালনায় ভরতনাট্যম পরিবেশনা।
সোমবার বিকেলে উদ্বোধনের কিছু আগে জানা গিয়েছিল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মধ্যপ্রদেশে। তিনিই উদ্বোধন করবেন সেটি। শেষমেশ সময় হয়ে ওঠেনি তাঁর।