নজরুলের 'পুতুলের বিয়ে'

‘খেলি আয় পুতুল-খেলা/ বয়ে যায় খেলার বেলা সই...।’ গান দিয়ে শুরু পুতুলের বিয়ে নাটকটি। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা ভবন মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় এই নাটক। নজরুল চর্চা কেন্দ্র ‘বাঁশরী’ প্রযোজনায় নাটকটি পরিবেশনা করে ঢাকা আর্ট থিয়েটার।
কাজী নজরুল ইসলামের লেখা নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন শামস শাহরিয়ার। নজরুলের গাননির্ভর নাটকটির সংগীত পরিচালনা করেছেন মো. বাবুল হোসাইন।
পুতুলের বিয়ে নাটকটির কাহিনি এগিয়ে গেছে শিশুদের পুতুল বিয়ে দেওয়ার খেলা নিয়ে। কমলি, টুলি, পঞ্চি, গেদি, বেগম, ঠাকুরমা, কমলির দাদামণি ও পুরুত ঠাকুর—এই কয়েকটি চরিত্রের মধ্য দিয়ে ঘুরেফিরে নাটকের সংলাপ।
কমলির দুটি ছেলে পুতুল। বড় ছেলের নাম ফুচুং। তার গড়ন চীনাদের মতো। কমলি তার এই পুতুলটির জন্য কোথাও মেয়ে খুঁজে পায় না। শুধু ‘মন্দ চেহারা’র জন্য। ফুচুংকে জামাই করার ব্যাপারে কনের মা পঞ্চির মন্তব্য, ‘পঞ্চির বেডি অত হস্তা না! ওই চীনা অলম্বুসডারে জামাই করবনি। ওডা দেখবার যেমন ভূতের লাহান, নামও তেমনি রাখছে ফুচুং!’
নাটকের অন্য দুটি চরিত্র টুলি ও গেদি। ওদেরও ঘরে বিবাহযোগ্য কনে। তারপরও তারা কেউ কমলির চীনা পুতুলটার সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি নয়। প্রয়োজনে মেয়েকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলতেও তারা রাজি। কমলির অন্য ছেলে ডালিম কুমার। সে দেখতে খুবই সুন্দর। ওকে মেয়ের জামাই বানানোর জন্য সব মেয়ের মায়েরা উদ্গ্রীব। এ নিয়ে ঝগড়াও বেধে যায় মায়েদের মাঝে!
অভিনয়শিল্পীদের কথা বলা, ঝগড়া করা, বিয়ের আয়োজন করা—সবকিছুই অত্যন্ত প্রাণবন্ত এবং জীবনঘেঁষা।
নাটকে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন সানাম ফয়েজ, কানিজ ফাতিমা, তাবাসসুম মুন্নী, কাশপিয়া সুলতানা, মেহেদি হাসান প্রমুখ।
পুতুলের বিয়ে নাটকটিতে দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য বিষয়টি এসেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে। এ নাটকেই শোনা যায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিমূলক একটি গান, ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি ফুল হিন্দু-মুসলমান, মুসলিম তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ’।