নাসির আলী মামুনের জন্মদিনে 'তার আলো তার ছায়া'

নাসির আলী মামুনের জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত তার আলো তার ছায়া বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা ষ ছবি: প্রথম আলো
নাসির আলী মামুনের জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত তার আলো তার ছায়া বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা ষ ছবি: প্রথম আলো

ছোটবেলায় তাঁর নিজের কোনো ক্যামেরা ছিল না। কিন্তু গভীর আগ্রহ ছিল ছবি নিয়ে। এক বন্ধুর দাদার ক্যামেরা দিয়ে প্রথম ছবি তোলেন। তিনি আজকের খ্যাতিমান আলোকচিত্রশিল্পী নাসির আলী মামুন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে কেমন করে আজকের এ অবস্থানে এলেন সেসব ঘটনা উঠে এসেছে তার আলো তার ছায়া বইয়ে। মামুনের সাক্ষাৎকারভিত্তিক এ বই লিখেছেন মুনেম ওয়াসিফ।
গতকাল সোমবার বিকেলে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের গ্যালারি নিত্য উপহারে নাসির আলী মামুনের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে তার আলো তার ছায়া বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বইটি প্রকাশ করেছে শ্রাবণ প্রকাশনী। অনুষ্ঠান আয়োজন করে ওয়েব ম্যাগাজিন বইনিউজ ২৪ ডট কম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কবি বেলাল চৌধুরী বলেন, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির সূচনা করেন নাসির আলী মামুন। তাঁর অনুসন্ধানী ক্যামেরায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রেষ্ঠ মানুষের দুর্লভ মুহূর্তগুলো বন্দী হয়ে আছে। আলোকচিত্রশিল্পে তিনি নতুন এক ঘরানার সূচনা করেন।
নাসির আলী মামুন বলেন, ‘প্রথম দিকে আমি ধার করে ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলতাম। দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। আমার শৈশব কেটেছে ভীষণ কষ্টে। রং পেনসিলই হাতে পাইনি, সেখানে ক্যামেরা তো অনেক দূরের কথা।’ তিনি বলেন, ‘যাঁরা আমার ক্যামেরার সামনে বসেছেন, তাঁদের জন্যই আজ পরিচিতি লাভ করেছি। আজ তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম, কবি রবিউল হুসাইন, মুহম্মদ নুরুল হুদা, হাবিবুল্লাহ সিরাজী, মুনেম ওয়াসিফ ও প্রকাশক রবীন আহসান।
ম্যান্ডেলার আরোগ্য কামনায় আরাধনা
বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত নেতা দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রিটোরিয়ার মেডিক্লিনিক হার্ট হাসপাতালে। বয়োবৃদ্ধ এই নেতার আরোগ্য কামনায় প্রার্থনা করছেন সারা বিশ্বেই অসংখ্য মানুষ। বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদও এই শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের আরোগ্য কামনা করে আয়োজন করেছিল ‘আমাদের আরাধনা’ নামে এক বিশেষ অনুষ্ঠান।
গতকাল সোমবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পরিষদের শিল্পীদের সম্মেলক কণ্ঠে ম্যান্ডেলার ওপর রচিত গান ‘জয়তু জয়তু নেলসন ম্যান্ডেলা’ ও ‘কালো কালো মানুষের দেশে এই কালো মাটিতে’ গান দুটি পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এরপর ছিল ম্যান্ডেলার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা। পরিষদের সভাপতি শিল্পী ফকির আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন মুহাম্মদ সামাদ, গোলাম কুদ্দুছ, ঝুনা চৌধুরী, হাসান আরিফ ও মানজার চৌধুরী। আলোচকেরা বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলা সারা বিশ্বেই মুক্তিকামী মানুষের কাছে বর্ণবাদ ও ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামের জীবন্ত প্রতীক। তিনি যেমন ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন, তেমনি আমাদেরও রয়েছে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ইতিহাস। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ম্যান্ডেলার সংগ্রাম প্রেরণা জুগিয়েছে। তাঁর সংগ্রামী জীবন নিয়ে এ দেশে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। তাঁকে নিয়ে রচিত হয়েছে গণসংগীত ও কবিতা। এভাবে আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতিকেও প্রভাবিত করেছেন। আমাদের দেশে সফরেও এসেছিলেন তিনি।
পরে গণসংগীত পরিবেশন করেন উদীচী, ক্রান্তি, ঋষিজ, বহ্নিশিখা, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, স্বভূমি লেখক-শিল্পীকেন্দ্র, মংলু শিল্পীগোষ্ঠী, আনন্দন, ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সংগীত একাডেমি ও সারগাম সংগীত একাডেমির শিল্পীরা। সন্ধ্যার আঁধার ঘনিয়ে এলে ‘আগুনের পরশমণি’ গানটির সঙ্গে মোমবাতি প্রজ্বালন করে তাঁর আরোগ্য কামনা করা হয়।
নেত্রকোনায় আঞ্চলিক সাহিত্য সম্মেলন
বাংলা একাডেমীর আয়োজনে কাল মঙ্গলবার নেত্রকোনা জেলার সার্কিট হাউস মিলনায়তেন দিনব্যাপী আঞ্চলিক সাহিত্য সম্মেলন ও চন্দ্রকুমার দে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অধ্যাপক যতীন সরকার। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করবেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক আনিস মাহমুদ। সকালে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে ‘চন্দ্রকুমার দে: জীবন ও সাহিত্য’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সন্তোষ সরকার। বিকেলে দ্বিতীয় অধিবেশনে ‘নেত্রকোনার সাহিত্য এবং নেত্রকোনার সংস্কৃতি’ বিষয়ে দুটি পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন খায়রুল হক ও পল্লব চক্রবর্তী। সন্ধ্যায় থাকবে স্থানীয় কবিদের কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ইকেবানা প্রতিযোগিতা বাংলাদেশ জাতীয় ইউনেসকো ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন গত শুক্রবার মহাখালীর হোটেল অবকাশে দিনব্যাপী জাপানি রীতিতে ফুল সাজানোর ‘ইকেবানা প্রতিযোগিতা’র আয়োজন করে। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইকেবানা বিশেষজ্ঞ মালেকা খান। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া ও ক্লাবের মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী। এই প্রতিযোগিতায় ৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। ইউনেসকো ক্লাব অষ্টমবারের মতো এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সন্ধ্যায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের মিনিস্টার হিরোইউকি মিনামি।