ফিরে দেখা

>

আগামীকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ‘হল অব ফ্রেমে’ বসছে ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৭’-এর আসর। প্রথম আয়োজনটি বসেছিল ১৯৯৯ সালের ১২ মার্চ। দেশের চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও সংগীতাঙ্গনের তারকাদের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কারের ২০তম আসর বসছে এবার। তার আগে পেছন ফিরে দেখা যাক কেমন ছিল সেই আয়োজন এবং কোন তারকারা হয়েছেন সেরা! আজ ছাপা হলো মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের ফিরে দেখার দ্বিতীয় কিস্তি।

তারকা জরিপ
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের শুরু থেকেই চলছে তারকা জরিপ পুরস্কার। পাঠকের ভোটে সেরা নির্বাচিত হন টিভি, চলচ্চিত্র ও সংগীতাঙ্গনের তারকারা। চলুন জেনে নিই সেই রকম সেরার কিছু নাম।

গান
১৯৯৮ সালে প্রথম আয়োজনের সেরা গায়িকার পুরস্কার পেয়েছিলেন সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। ২০০৫ ও ২০০৬ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন সামিনা চৌধুরী। এ ছাড়া ২০০৮ সালে পেয়েছিলেন কৃষ্ণকলি। এদিকে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার আয়োজনের প্রথম বছর সেরা গায়কের পুরস্কার পেয়েছিলেন তপন চৌধুরী। পরের দুই বছর পেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। ২০০৭ সালে পেয়েছেন বালাম। ২০১১ সালে আরিফিন রুমী এবং ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালের পুরস্কারগুলো পেয়েছেন যথাক্রমে জেমস, তাহসান ও ইমরান।

নাটক (সমালোচক)
সমালোচক পুরস্কার হিসেবে ২০০১ সালে সেরা টিভি চিত্রনাট্যকারের পুরস্কার পেয়েছিলেন রতন পাল। ২০০৩ ও ২০০৪ সালে পেয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। ২০০৫ সালে কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ২০০৬ সালে মাসুম রেজা, ২০০৭ সালে লিটু সাখাওয়াত, ২০১০ সালে ইফতেখার ফাহমি, ২০১১ সালে মনোয়ার কবীর, ২০১২ সালে আজাদ আবুল কালাম, ২০১৩ সালে পান্থ শাহরিয়ার, ২০১৪ সালে মনিরুল ইসলাম রুবেল, ২০১৫ সালে আশরাফুল চন্‌চল এবং ২০১৬ সালে সারওয়ার রেজা জিমি।

সেরা টিভি নির্দেশক হিসেবে ২০০১ সালে গিয়াস উদ্দিন সেলিম পেয়েছিলেন এই পুরস্কার। ২০০৫ সালে আবদুল্লাহ রানা, ২০০৬ সালে মেজবাউর রহমান সুমন, ২০১১ সালে আশরাফুল চঞ্চল, ২০১৩ সালে ওয়াহিদ আনাম, ২০১৪ সালে অমিতাভ রেজা, ২০১৫ সালে রেদওয়ান রনি এবং ২০১৬ সালে সাগর জাহান।

সেরা টিভি অভিনেত্রী হিসেবে আফসানা মিমি পুরস্কার পেয়েছিলেন ২০০১ সালে। পরের বছর রিচি সোলায়মান। ২০০৩ সালে ইলোরা গহর এবং ২০০৪ সালে সুবর্ণা মুস্তাফা। ২০০৫ সালে শমী কায়সার এবং ২০০৬ সালে জয়া আহসান। অভিনেত্রী মুনিরা মিঠু পেয়েছিলেন ২০০৮ সালে এবং পরের বছর পেয়েছিলেন নওয়া মুনির দিহান। ২০১০ সালে পেয়েছিলেন দীপান্বিতা হালদার। ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে যথাক্রমে পেয়েছিলেন তারিন, ফারজানা ছবি ও সানজিদা প্রীতি। সেরা অভিনেতা হিসেবে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় পুরস্কার পেয়েছিলেন ২০০২ সালে। ২০০৪ সালে পেয়েছিলেন সঞ্জীবন শিকদার। ২০০৫ সালে আলী যাকের এবং ২০০৬ সালে আনিসুর রহমান মিলন। এস এম মহসীন ও আবুল হায়াত পেয়েছিলেন যথাক্রমে ২০০৭ ও ২০১১ সালে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে খন্দকার লেলিন এবং ২০১৬ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন আফরান নিশো।

চলচ্চিত্র (সমালোচক)
২০০৩ সাল থেকে চলচ্চিত্রের জন্য সমালোচক পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। এ বছর সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় আধিয়ার চলচ্চিত্রটি। এরপর যথাক্রমে পরের বছরগুলোতে সেরা চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে শঙ্খনাদ, হাজার বছর ধরে, আয়না, স্বপ্ন ডানায়, চন্দ্রগ্রহণ, থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার, রানওয়ে, গেরিলা, ঘেটুপুত্র কমলা, মৃত্তিকা মায়া, বৃহন্নলা, ছুয়ে দিলে মন অজ্ঞাতনামা। সেরা পরিচালক হিসেবে ২০০৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পুরস্কার পেয়েছেন সাইদুল আনাম টুটুল (আধিয়ার), তৌকির আহমেদ (জয়যাত্রা), কোহিনূর আক্তার সুচন্দা (হাজার বছর ধরে), তৌকির আহমেদ (রূপকথার গল্প), শাহীন-সুমন (ধোঁকা), মুরাদ পারভেজ (চন্দ্রগ্রহণ), মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার), আবু সাইয়িদ (অপেক্ষা), নাসির উদ্দিন ইউসুফ (গেরিলা), হুমায়ূন আহমেদ (ঘেটুপুত্র কমলা), মোহাম্মদ হাননান (শিখণ্ডী কথা), মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (পিপড়াবিদ্যা), মোরশেদুল ইসলাম (অনিল বাগচীর একদিন), অমিতাভ রেজা (আয়নাবাজি)।

এই পুরস্কার প্রবর্তনের শুরু থেকেই সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন যথাক্রমে শাওন, অপি করিম, শশী, সোহানা সাবা, পূর্ণিমা, বিদ্যা সিনহা সাহা মিম, তিশা, মিরানা জামান, জয়া আহসান, শামীমা নাজনীন, নাজনীন চুমকি, মৌসুমী, জাকিয়া বারী মম ও সাঁজবাতি এবং অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন যথাক্রমে ফেরদৌস, রিয়াজ, চঞ্চল চৌধুরী, শাকিব খান, রাইসুল ইসলাম আসাদ, মামুনুর রশীদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, চৌধুরী যাওয়াত আফনান, তারিক আনাম খান, আরিফিন শুভ, আরেফ সৈয়দ ও চঞ্চল চৌধুরী।

বিচারকমণ্ডলীর বিশেষ পুরস্কার পেয়েছেন বেশ কয়েকজন। ২০০১ সালে চিত্রগ্রাহক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন খসরু মাহমুদ, ২০০৩ সালে অভিনেতা অভিনয়শিল্পী হিসেবে আহমেদ রুবেল, নাজমা আনোয়ার, নেহাল কোরাইশী (চিত্রগ্রাহক), শিশুতোষ চলচ্চিত্র দূরত্ব। ২০০৫ সালে অভিনেতা রওনক হাসান, মাহফুজুর রহমান খান (চিত্রগ্রাহক) শিবলী মহম্মদ (সেরা নৃত্যশিল্পী) মনির খান (গান)। ২০০৬ সালে মনিরুল ইসলাম মাসুম (চিত্রগ্রাহক), মাকসুদুল বারী (চিত্রগ্রাহক), মুনমুন আহমেদ (সেরা নৃত্যশিল্পী), কুমার বিশ্বজিৎ (সেরা সংগীতশিল্পী)। ২০০৭ সালে ফজলুর রহমান বাবু, শামীম আরা নীপা (সেরা নৃত্যশিল্পী) বাপ্পা মজুমদার (সেরা সংগীতশিল্পী)। ২০০৮ সালে পরিচালক হিসেবে এস এ হক অলীক, শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় (সেরা নৃতশিল্পী), দীপ্ত (সেরা সংগীতশিল্পী)। ২০০৯ সালে রাশেদ উদ্দিন আহমেদ তপু এবং ২০১৪ সালে রূপসজ্জাকর হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন মোহাম্মদ ফারুক।

অন্যান্য পুরস্কার
১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সেরা ব্যান্ডের পুরস্কার পেয়েছে এলআরবি। পরের বছর থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রমিথিউস পেয়েছে এই পুরস্কার। এ ড়া ২০০৬ সালে সোলস, অর্থহীনের ঘরেও আছে এই পুরস্কার। সেরা পুরুষ মডেল হিসেবে ছয়বার পুরস্কার পেয়েছেন নোবেল। এ ছাড়া সাব্বির আহমেদ, চঞ্চল চৌধুরী ও প্রয়াত কাজী জামালউদ্দিন পেয়েছেন এই পুরস্কার।

সেরা নারী মডেল হিসেবে চারবার পুরস্কার পেয়েছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ। এ ছাড়া তিশা, মোনালিসা ও দীঘি এই পুরস্কার পেয়েছেন দুবার করে। সেরা উপস্থাপক হিসেবে ১৯৯৮ সালে পুরস্কার পেয়েছেন হানিফ সংকেত। সেরা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান পাঁচবার নিবার্চিত হয়েছে ‘ইত্যাদি’ এবং একবার দেশজুড়ে। এই বিভাগে এখন আর পুরস্কার দেওয়া হয় না।

গ্রন্থনা: আনন্দ প্রতিবেদক