বিদেশে শুটিং, বিদেশিদের নিয়ে শুটিং, দুটোতেই লাগবে অনুমতি
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীর অংশগ্রহণ নতুন কোনো ঘটনা নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এই রীতি চালু আছে। গল্পের প্রয়োজনে দেশের বাইরে শুটিংও সাধারণ প্রবণতা হয়ে উঠেছে। সরকারের পূর্বানুমতি ছাড়া এখন থেকে আর এসব করা যাবে না। গত ৩১ মে এ–সংক্রান্ত একটি নীতিমালা নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
দেশীয় চলচ্চিত্রে বিদেশি অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী, সংগীতজ্ঞ, সংগীতশিল্পী ও বিজ্ঞাপনে বিদেশি শিল্পীর অংশগ্রহণসংক্রান্ত নীতিমালা ২০২১ (সংশোধিত)–এ বলা হয়েছে, বিদেশে শুটিং করতে হলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে যন্ত্রপাতিসহ বাংলাদেশ ও বিদেশি অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীর অনুমোদন নিতে হবে। যাচাই-বাছাই করে একটি কমিটি সুপারিশ করবে। কমিটি বিদেশে শুটিংয়ের প্রয়োজন আছে কি না, খরচের বিবরণ যথাযথ কি না ইত্যাদি বিবেচনা করবে। একইভাবে বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীদের দেশের চলচ্চিত্রে কাজ করতে হলে অবশ্যই পূর্বানুমতি লাগবে।
কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র)। সদস্য হিসেবে থাকবেন একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (চলচ্চিত্র), জননিরাপত্তা বিভাগের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি। সদস্যসচিব হিসেবে থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (চলচ্চিত্র-১)।
বিজ্ঞাপনচিত্রে বিদেশি শিল্পীদের অভিনয়ের বিষয়ে বেশ কিছু নীতিমালা হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপনে প্রতি বিদেশি শিল্পীর জন্য ২ লাখ টাকা ফি (ভ্যাট ও আয়কর ছাড়া) এবং বিজ্ঞাপন প্রচারের সময় টিভি চ্যানেলকে প্রতি বিজ্ঞাপনের জন্য এককালীন ২০ হাজার টাকা করে ফি দিতে হবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, কোনো কাজের জন্য বিনা পারিশ্রমিকে বিদেশি শিল্পী চুক্তিবদ্ধ করা যাবে না। সম্পাদিত চুক্তিপত্রে পারিশ্রমিকের পরিমাণ ও পরিশোধের পদ্ধতি উল্লেখ করতে হবে। আর বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীদের সম্মানি দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আয়কর ও ভ্যাটের আওতাভুক্ত হবে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে চিত্রনাট্য পেশ করার সময় বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিপত্রের নোটারাইজড কপিসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি জমা দিতে হবে। বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীদের গতিবিধির দৈনিক বিবরণ আগে থেকেই লিখিতভাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় অথবা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনকে জানাতে হবে। শিডিউল পরিবর্তন হলেও জানাতে হবে। আর সবাইকে মন্ত্রণালয় থেকে ওয়ার্ক পারমিট গ্রহণ করতে হবে।
কোনো শর্ত লঙ্ঘিত হলে সরকার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, তা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। নীতিমালা দ্রুতই কার্যকর হবে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।এ