ব্যথা ছাড়া কীভাবে চড় দিতে হয়, তা আমি আগেই শিখে নিয়েছি

ঈদুল ফিতরে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে ওয়েব ফিল্ম ‘৭ নাম্বার ফ্লোর’। ছবিটি মুক্তির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এটিকে অভিনয়শিল্পী শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সুন্দর প্রত্যাবর্তন বলেও অভিহিত করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার যখন জয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তিনিও এমনটাই মনে করছেন বলে জানালেন।
ঈদুল ফিতরে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে ওয়েব ফিল্ম ‘৭ নাম্বার ফ্লোর’।
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

‘৭ নাম্বার ফ্লোর’ নিয়ে যেমন সাড়া পাচ্ছেন, তেমনটা কি ভেবেছিলেন?

এত দিন বিরতির পর এত সাড়া পাব, আশা করিনি। এক্সপেরিমেন্টাল ছিল না। নাটকে অভিনয়ের গ্যাপের পর আমি তো উপস্থাপনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তাই উপস্থাপনায় এখন কনফিডেন্টলি যেকোনো কিছু বলতে পারি। অভিনয় নিয়ে এমনটা ছিল না। ‘৭ নাম্বার ফ্লোর’ আমাকে অভিনয়ের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে।

প্রশ্ন :

তার মানে এখন কি আগের মতো নিয়মিত অভিনয় করবেন?

আমার পক্ষে তো মাসের ৩০ দিন অভিনয় করা সম্ভব হবে না। অভিনয়ের যে গ্যাপ তৈরি হয়েছিল, আশা করি, তা আর হবে না। এখন মাঝেমধ্যে অভিনয় করব। ভালো গল্প ও অবশ্যই ভালো নির্মাতা হলে। তবে এখন অভিনয়ের সঙ্গে কোনো আপস করব না।

ছবিটি মুক্তির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এটিকে অভিনয়শিল্পী শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সুন্দর প্রত্যাবর্তন বলেও অভিহিত করেছেন
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

এর আগে কি কম্প্রোমাইজ করতেন?

তা করতে হতো। এবার আমার অভিনয়ের শেষ ইনিংস। বয়স তো হয়েছে। অল্প বয়স থেকে অভিনয় করছি। শুরুতে টানা ১২ বছর অভিনয়ে কাটালাম। এরপর তিন বছরের বিরতি। আবার অভিনয়। তারপর আবার পাঁচ বছরের বিরতি। এরপর তো শুরু করলাম উপস্থাপনা। এখন আমার ৪৫ বছর বয়স, সে হিসাবে এটাকে লাস্ট ইনিংস তো বলতেই হবে। যেটা সত্য, এটা না বলে উপায় আছে!

প্রশ্ন :

‘৭ নাম্বার ফ্লোর’ চলচ্চিত্রের দৃশ্যে যেভাবে সহশিল্পীদের চড়থাপ্পড় মারলেন, কেউ কষ্ট পাননি তো?

নায়িকারা কখনোই আমার দ্বারা কষ্ট পায় না। ব্যথা ছাড়া কীভাবে চড় দিতে হয়, তা আমি আগেই শিখে নিয়েছি।

প্রশ্ন :

কবে শিখলেন, কারা শেখালেন?

এটা তখন শিখেছি, যখন নায়িকারাও আমাকে পর্দায় এভাবে চড় মারত।

প্রশ্ন :

কোন কোন নায়িকা আপনাকে চড় মারতেন?

এগুলো মনে নেই আমার, স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গেছে। আজকাল কিছুই মনে রাখতে পারি না। ‘গজনি’ সিনেমায় আমির খানের একটা অসুখ হয়েছিল না, ১৫ মিনিট আগের কথা ভুলে যায়। আমারও একই অবস্থা।

৭ নাম্বার ফ্লোর–এর পোস্টার
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

কিন্তু আপনার চড় খাওয়ার ঘটনা তো ১২ বছর আগের।

১২ বছর আগে আমাকে কে না চড় মেরেছে। ওহ! মনে পড়ছে। অপু বিশ্বাস, শাবনূর, পূর্ণিমাও থাপ্পড় মেরেছে। আর নাটকের অভিনয়শিল্পীরা তো মেরেছেই।

প্রশ্ন :

এবার আবার ‘৭ নাম্বার ফ্লোর’ প্রসঙ্গ। নিশ্চয় অনেক পরিচালক আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

প্রচুর সাড়া পাচ্ছি, এটা তো ঠিক। এটাও ঠিক, পরিচালকেরাও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অনেক পরিচালককে তো আমি চিনিও না। তবে এটা চূড়ান্ত, কোরবানির ঈদে ‘৭ নাম্বার ফ্লোর’–এর পরিচালক রায়হান রাফির সঙ্গে নতুন প্রজেক্ট করছি। ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের ফোন আসছে।

প্রশ্ন :

দুই নায়িকা—বুবলী ও তমা মির্জার সঙ্গে অভিনয় করলেন। কাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমার কাছে দুজনকেই দুর্দান্ত পারফর্মার মনে হয়েছে। দুজনই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। পরিচালকও দুই নায়িকাকে পর্দায় যেভাবে ব্যালেন্স করেছে, এটা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

‘ফ্লোর নম্বর ৭’ সিনেমায় বিশেষ একটি চরিত্রে হাজির হচ্ছেন অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন :

দুজনকে নম্বর দিতে হলে কাকে কত দেবেন?

আমি তো আসলে ডিরেক্টর নই। তাই নম্বর দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

প্রশ্ন :

কিন্তু আপনি তাঁদের তুলনায় তো অভিনয়ে অনেক সিনিয়র এবং অভিজ্ঞতাও বেশি। তা ছাড়া আপনি পরিচালকও।

নম্বর দেওয়ার বিষয় থাকলে বুবলী পাবে ৪৯.২০, তমা মির্জা ৪৯.২১। ভাঙা পা নিয়ে তমা শুটিং করেছে, অনেক স্ট্রাগল করেছে, তাই ওকে এগিয়ে রাখলাম। আমার চোখের সামনে তমার পা ভেঙে ফুলে গিয়েছিল, সেই অবস্থায় সে শুটিং করেছে। কী পরিমাণ ডেডিকেশন থাকলে এটা করতে পারে, তা আমি জানি। আর বুবলী আমাকে মুগ্ধ করেছে বলেই কিন্তু ৪৯.২০ দিয়েছি। সে যে এত দুর্দান্ত অভিনয়শিল্পী, এটা আমার জানা ছিল না। হয়তো পা ভাঙলে বুবলীও এমনটাই করত।