ব্যোমকেশ না ফেলুদা?

প্রশ্নটা এর আগেও আবীর চট্টোপাধ্যায়ের সামনে এসেছিল। হয় ব্যোমকেশ, নয় ফেলুদা—যেকোনো একটা বেছে নিতে হবে। অথচ আবীর চান দুটো চরিত্রই করতে। কিন্তু এবার আবারও তাঁর সামনে একই প্রশ্ন।
ব্যোমকেশ ও ফেলুদা চরিত্রে আবীর চট্টোপাধ্যায়
ব্যোমকেশ ও ফেলুদা চরিত্রে আবীর চট্টোপাধ্যায়

বাঙালি গোয়েন্দা চরিত্র বেশ কয়েকটি থাকলেও বরাবরই তর্ক জমেছে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ ও সত্যজিৎ রায়ের প্রদোষ মিত্র ওরফে ‘ফেলুদা’ নিয়ে। এই দুই গোয়েন্দা চরিত্রের কে সেরা, এটা বরাবরই আলোচনার বিষয় ছিল। তাই এ দুটি চরিত্র যখন পর্দায় আসে, তখনই বক্স অফিসে সাফল্য কুড়িয়ে নেয়।
ফেলু মিত্তিরের স্রষ্টা হয়েও সত্যজিৎ রায় ব্যোমকেশকে নিয়ে একটি ছবি করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে ‘চিড়িয়াখানা’ ছবিটিতে ব্যোমকেশের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন মহানায়ক উত্তমকুমার। সেই ‘চিড়িয়াখানা’ গল্পটি নিয়ে এবার অঞ্জন দত্ত বানিয়েছেন ‘ব্যোমকেশ ও চিড়িয়াখানা’। ব্যোমকেশ যিশু সেনগুপ্তর এই ছবি মুক্তি পাচ্ছে দুর্গাপূজায়। ইতিমধ্যে ইউটিউবে এর ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে।
ব্যোমকেশ নিয়ে একের পর এক ছবি করে চলেছেন অঞ্জন দত্ত। প্রথম তিনটি ছবি ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ (আদিম রিপু, ২০১০), ‘আবার ব্যোমকেশ’ (চিত্রচোর, ২০১২) ও ‘ব্যোমকেশ ফিরে এলো’তে (বেণীসংহার, ২০১৪) তাঁর ব্যোমকেশ ছিলেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সত্যজিৎপুত্র সন্দীপ রায় আবীরকে ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করান। ‘বাদশাহী আংটি’ ছবিতে দর্শক ফেলুদা হিসেবে আবীরকে পান।

২০১৪-এর ১৯ ডিসেম্বর টালিউডের পর্দায় একসঙ্গে হানা দেয় ব্যোমকেশ বক্সী ও ফেলুদা। দুটো আলাদা শিবির থেকে এক আবীর দুটো ভিন্ন চরিত্রে আসেন দর্শকদের সামনে। এই ঘটনায় বেজায় চটে যান অঞ্জন। একই মানুষ ব্যোমকেশ ও ফেলুদার চরিত্রে—এটা মেনে নিতে পারেন না তিনি। তাই অঞ্জনের ব্যোমকেশ ছবি থেকে আবীর বাদ পড়েন। আগমন ঘটে যিশুর। অঞ্জন দত্ত এতটাই বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন যে নিজের পরিচালিত ব্যোমকেশের চতুর্থ ছবিকে দিলেন প্রথম ছবির নাম ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ (২০১৫)।
আবীরও বসে থাকলেন না। পরিচালক অরিন্দম শীল আবীরকে নিয়ে বানালেন ‘হর হর ব্যোমকেশ’ (বহ্নি-পতঙ্গ, ২০১৫)। এ ছবিও ব্যবসাসফল হলো। এখন তিনি আরেকটি ব্যোমকেশ ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। অরিন্দম শীল পরিচালিত এই সিনেমার নাম ‘ব্যোমকেশ পর্ব’। শরদিন্দুর ‘অমৃতের মৃত্যু’ কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত।

এদিকে আবীর আবার ব্যোমকেশ ছবিতে অভিনয় করায় এবার ফেলুদা ছবি থেকেও নাকি তাঁকে বাদ দিচ্ছেন সন্দীপ রায়। যুক্তি দিলেনও সেই একই। ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘একই মানুষ ফেলুদা আর ব্যোমকেশ দুটো চরিত্রে অভিনয় করছে, এটা আমারও খারাপ লাগে। শুধু আমারই নয়। আমি তো কেবল আমার ভালো লাগার জন্য ছবি করি না। দর্শকেরও একই মানুষকে ব্যোমকেশ আর ফেলুদা ভাবতে অসুবিধে হচ্ছে।’
সন্দীপ আবীরকে বলেছেন, শুধুই ফেলুদা চরিত্রে অভিনয় করতে। এখন কী করবেন আবীর?