শাহরুখ খানকে ঘিরে আমার বড় হয়ে ওঠা

অনন্যা পান্ডে
অনন্যা পান্ডে
>অনন্যা পান্ডে এখন বলিউডের এক জনপ্রিয় নাম। গত সপ্তাহ পর্যন্ত এই নবাগতার মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির সংখ্যা ছিল মাত্র দুই। সম্প্রতি পতি পত্নী অর ওহ ছবি মুক্তির মধ্য দিয়ে সেই সংখ্যা এখন তিনে দাঁড়াল। মুদাসসর আজীজ পরিচালিত এই ছবিতে অনন্যার অভিনয় এরই মধ্যে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। ভারতের মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে বলিউড সুন্দরী অনন্যা পান্ডের মুখোমুখি প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য

দেবারতি ভট্টাচার্য: এই অল্প সময়ের মধ্যে আপনার নিজস্ব পরিচয় তৈরি হয়েছে। এখন আপনার পরিচয় শুধু চাঙ্কি পান্ডের কন্যা হিসেবে নয়।
অনন্যা পান্ডে: প্রত্যেকের জীবনে স্বপ্ন থাকে। আমি ছোট থেকে অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলাম। ধীরে ধীরে সেই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। লোকে আমাকে আমার কাজের কারণে চিনছে। ভালো লাগছে এই ব্যাপারটা। তবে সত্যি বলতে কী, চাঙ্কি পান্ডের কন্যা হওয়ায় আমি গর্ববোধ করি। আমি সব সময় চাই আমাকে সবাই চাঙ্কি পান্ডের মেয়ে হিসেবেই জানুক।

অনন্যা পান্ডে
অনন্যা পান্ডে

দেবারতি: আপনার তো মনে হয় খুদে ভক্তের সংখ্যা বেশি। কেমন লাগে বিষয়টা?
অনন্যা: হ্যাঁ, শিশুদের মধ্যে আমার একটা জনপ্রিয়তা আছে। ওদের ভালোবাসা আমাকে প্রেরণা জোগায়। খুদে ভক্তদের দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। আমার বয়স যখন ১০, তখন আমার কারিনা কাপুরকে দারুণ লাগত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমার পছন্দ বদলেছে। কিন্তু ছেলেবেলার সেই ভালো লাগা একই রয়ে গেছে।

দেবারতি: অতিরিক্ত রোগা হওয়ার জন্য আপনাকে বারবার ট্রলের শিকার হতে হয়, অনেকে উপহাস করেন। কীভাবে নেন এসব মন্তব্য?
অনন্যা: হ্যাঁ, ফিগারের জন্য আমাকে নানান কটু কথা শুনতে হয়। অনেকে আমাকে নিয়ে বিদ্রূপ করে। তবে এসব কথা আমি পাত্তা দিই না। আমি নিজেকে ভালোবাসি। এটাই শেষ আর আসল কথা।

দেবারতি: বলিউডের সফল দম্পতিদের মধ্যে আপনার বাবা-মা একজন। তাঁদের সফল দাম্পত্যের রসায়ন কী বলে আপনার মনে হয়?
অনন্যা: আমার বাবার মতো মজার মানুষ কম দেখেছি। যেকোনো পরিস্থিতি বাবা খুব সুন্দরভাবে সামাল দেন। সব সময় হাসি–মজায় বাড়ি মাতিয়ে রাখেন। আমি মনে করি, আমার মা–বাবার সফল দাম্পত্যের আসল রসায়ন হলো বন্ধুত্ব। আমার মা–বাবাও ঝগড়া করেন। কিন্তু পরমুহূর্তে আবার তাঁদের হাসিঠাট্টা করতে দেখি। তাঁরা বেশিক্ষণ ঝগড়া করে থাকতে পারেন না। আমার জন্মের আগেই বাবা একজন স্টার। মাঝে একটা সময় অভিনয় থেকে তিনি বিরতি নেয়েছিলেন। তখন দেখেছি, বাবা কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতেন। জীবনের প্রতি সব সময় তিনি ইতিবাচক আর আশাবাদী। বাবাকে কখনো হাল ছাড়তে দেখিনি। এটা আমার জন্য খুবই প্রেরণাদায়ক। সুযোগ পেলে বাবা বেকিং করেন। কেক, পেস্ট্রি, ব্রাউনি, কাপ কেক খুব ভালো বানান। তবে মা রান্না করতে পারেন না।

দেবারতি: স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছবির পর শাহরুখ খান আপনাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। এরপর তাঁর কাছ থেকে আর কোনো প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন?
অনন্যা: শাহরুখ খানকে ঘিরে আমার বড় হয়ে ওঠা। ইদানীং তাঁর সঙ্গে কথা হয়নি। তবে স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছবি দেখে তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। তাঁর কাছ থেকে অভিনয়ের প্রশংসা পাওয়া আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। আমি মনেপ্রাণে চাই শাহরুখ খানের সঙ্গে কাজ করতে। নিশ্চয় একদিন না একদিন সেই সুযোগ আসবে। সুহানা (শাহরুখ খানের মেয়ে) এখন পড়াশোনা করছে। সে–ও কিন্তু অভিনেত্রী হিসেবে দুর্দান্ত। শানায়া (সঞ্জয় কাপুরের মেয়ে) এখন সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করছে। আমরা এই তিন বন্ধু এক হলে শুরু হয় ফিল্মি আড্ডা। আমরা শুধুই সিনেমা নিয়ে কথা বলি।

দেবারতি: শেষ প্রশ্ন, কার্তিক আরিয়ানের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব নিয়ে কী বলতে চান? আপনাদের প্রেম নিয়ে কিন্তু গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে…

অনন্যা: আমাদের মধ্যে দারুণ বন্ধুত্ব। আমাদের রসায়ন দুর্দান্ত। কার্তিক যেকোনো সাহায্যের জন্য সব সময় প্রস্তুত। ও কখনো শুধু নিজের কথা ভাবে না। কখনো শুধু নিজের সংলাপগুলো মনে রাখে না। শুটিংয়ের সময় কার্তিক পুরো দৃশ্যটা নিয়ে ভাবে। সে তার সহশিল্পীর সংলাপগুলোও পড়ে। এটা একজন অভিনেতা হিসেবে বিরাট ব্যাপার।