
যাত্রাগানের সনাতনী কনসার্ট, বর্ণিল নৃত্য-গীত আর মনমাতানো অভিনয় দেখে মুগ্ধ হলো ঢাকার নাগরিক দর্শক। শিশু-যুবা, নারী-পুরুষ সব শ্রেণীর উপস্থিতি ছিল শিল্পকলার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে। ঢাকার দেশ অপেরা ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই হলে দুই দিনের যাত্রাগানের আয়োজন করে। ‘জাগরণী যাত্রা উৎসব’ শীর্ষক এই আয়োজনে প্রথম দিন ২০ ডিসেম্বর লোকনাট্য গোষ্ঠী পরিবেশন করে ঐতিহাসিক যাত্রাপালা বর্গী এলো দেশে। পালার নির্দেশনা দেন তাপস সরকার।
দ্বিতীয় দিন দেশ অপেরা মঞ্চে আনে নবাব সিরাজউদ্দৌলা। এ পালার নির্দেশনায় ছিলেন মিলন কান্তি দে। পরদিন একই হলে জয়যাত্রাও সিরাজউদ্দৌলা মঞ্চস্থ করে। এটি দেশ অপেরা আয়োজিত উৎসবের আওতাভুক্ত না হলেও পর পর একই হলে তিন দিন যাত্রাপালার আসর বসাতে দর্শক বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে তা উপভোগ করেছেন।
নাগরিক জীবনে যাত্রাগানের এই আয়োজন দর্শকের মধ্যে দারুণ উৎসাহ জাগিয়েছে। জয়যাত্রার পালা নির্দেশক ও নাম ভূমিকার অভিনেতা হাবিব সারোয়ার অভিনয় শেষে দর্শকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাঁর কাছে বহু দর্শক এমন যাত্রাগান হলে তা দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এর আগে জয়যাত্রার উদ্যোগে একই হলে যাত্রাবিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অতিথিদের মধ্যে রামেন্দু মজুমদার, এস এম মহসীন, তপন বাগচী, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ পরিশীলিত পালা মঞ্চায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিন দিনের যাত্রাগানের প্রথম দিন দেশ অপেরা তিনজন গুণী ব্যক্তিত্বকে অমলেন্দু বিশ্বাস স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করায় অনেক নাট্যজন-দর্শক দেশ অপেরার প্রশংসা করেছেন। অনেক দর্শক প্রতিবেদকের কাছে অনুভূতি প্রকাশ করে বলেছেন, এমন প্রযোজনায় তিন দিনে তৃপ্তি মেটে না। দর্শক আরও যাত্রা দেখতে চান।
যাত্রাশিল্পে এক বছর
এ বছর যাত্রাশিল্পে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে দুজন শিল্পীর মৃত্যু এবং পুরোনো দলের কয়েকজন মালিকের যাত্রাবিমুখতায় শিল্পাঙ্গনে হতাশা নামে। আসার কথা, কিছু নতুন দলের মালিক শিল্পকলায় নিবন্ধিত হয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ দল গঠন করে মাঠে নেমেছেন, অল্প কজন প্রযোজনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে তিন মাস ধরে যাত্রা চালাচ্ছেন আশুলিয়া ও শিমরাইলে দুটি প্যান্ডেলে জনৈক রমজান আলি মিয়া ও রহম আলী।