শিল্পীদের কপিরাইট সুরক্ষায় বিএলসিপিএস

প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএলসিপিএস’র সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা
প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএলসিপিএস’র সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা

দেশের গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের কপিরাইটসহ অন্যান্য স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য কাজ করবে বাংলাদেশ লিরিসিস্টস, কম্পোজার্স অ্যান্ড পারফর্মারস সোসাইটি (বিএলসিপিএস)। কপিরাইট অফিস থেকে সম্প্রতি নিবন্ধন নিয়েছে সংস্থাটি। আজ আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু উপলক্ষে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় নবগঠিত সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সভাপতি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন বলেন, সংগীতশিল্পীদের অর্থনৈতিক ও নৈতিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘সিস্যাক’ ও ‘ওয়াইপো’র কনভেনশন অনুযায়ী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কপিরাইট সোসাইটিগুলো সংগীত স্রষ্টাদের প্রাপ্য রয়্যালটি নিশ্চিতকরণে কাজ করছে। কিন্তু, আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরেই অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, টিভি চ্যানেল, এফএম রেডিওসহ বিভিন্ন মাধ্যম এবং ওয়েবসাইটে প্রচারিত কাজ থেকে শিল্পীরা রয়্যালটি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিএলসিপিএস সংগীতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার রয়্যালটি আদায়ের লক্ষ্যেই গঠন করা হয়েছে বলেও জানান সাবিনা ইয়াসমীন। তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে শিল্পীদের গান ব্যবহারের অনুমোদন এবং রয়্যালটি প্রদানের জন্য এই সংস্থাটির কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। যেহেতু এই সংস্থা শিল্পীদের প্রাপ্য টাকা সংগ্রহ এবং বিতরণের দায়িত্ব নেবে, সে জন্য আমরা সংগীতসংশ্লিষ্ট সকলকে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে বামবা ও এলসিএসগিল্ডসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন ধারার সংগীতকর্মীরা এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।’

বিএলসিপিএসের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে তিনি জানান, ‘এই সংস্থা অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে সিস্যাক নির্ধারিত ফরম্যাট অনুসরণ করে পরিচালিত হবে। শিল্পীদের প্রাপ্য রয়্যালটি অর্জনে আমরা যে বঞ্চনার শিকার হয়েছি, তা থেকে মুক্ত হয়ে আমরা ভবিষ্যত্ প্রজন্মের জন্য অর্থনৈতিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’

সুরকার আলাউদ্দীন আলী বলেন, ‘শিল্পীরা সাধারণত উদাসীন হন। শিল্পীরা তাঁদের অধিকার আদায়ের জন্য যুদ্ধ করতে পারবেন না। আবার মানববন্ধন করাও তাঁদের পক্ষে সম্ভব না। তাই তাঁদের এ ধরনের একটি সংস্থার কথা ভাবতে হলো।’
সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক হামিন আহমেদ বলেন, ‘শিল্পীরা যে যেই মতের হোক না কেন, বিএলসিপিএস অধিকার আদায়ে বাংলাদেশের সব শিল্পীকে এক ছাতার নিচে আনতে কাজ করবে।’

কপিরাইট ও মেধাস্বত্ব আইন অনুযায়ী গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীরা কীভাবে সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছেন এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে মতবিনিময় করা হয় সম্মেলনে। সভাপতি সাবিনা ইয়াসমীন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক হামিন আহমেদ, সংগীতশিল্পী ফোয়াদ নাসের বাবু, মাকসুদ, আইয়ুব বাচ্চু, শুভ্র দেব, টিপু (ওয়ারফেজ), শাফিন আহমেদ, মনির খান, শিরোনামহীন ব্যান্ডের তুহিন ও জিয়া এবং বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যান্ড আইপি ফোরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিএলসিপিএসের আইনি পরামর্শক এ বি এম হামিদুল মিজবাহ প্রমুখ।