সুপারহিরোরা কেমন ছিলেন
>মা শিল্পী, আর বাবা লেখক—টম হার্ডির পেশা অভিনয় হবে সেটা বোধ হয় আগে থেকে কেউ বুঝতে পারেনি। তবে হ্যাঁ, মডেলিং জগতে নাম লিখিয়ে ধীরে ধীরে অভিনয়ের দিকে ঝুঁকতে শুরু করলেন এই অভিনেতা। বলছিলাম বর্তমান সময়ের আলোচিত-সমালোচিত, মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের নতুন সংযোজন ভেনম-এর কথা। এক টম হার্ডিই নন, মার্ভেলের সুপারহিরো হিসেবে আমরা যাঁদের চিনি, তাঁদের অনেকের শুরুটাই হয়েছিল খুব সাধারণ। কারও জীবন ছিল ভীষণভাবে অন্য রকম। পরিচিত সুপারহিরোদের অতীতকে দেখে নেওয়া যাক একবার।
পেইন্টার হতে চেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন আমেরিকা
টিনএজে ক্রিস ইভানস, মানে ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’ হতে চেয়েছিলেন চিত্রশিল্পী। মা ছিলেন শিল্প নির্দেশক। মায়ের জন্যই ক্রিসের মনে আর্টের প্রতি ভালোবাসা জন্মে। ক্যাপ্টেন আমেরিকা বা অ্যাভেঞ্জার্সই শুধু নয়, মারভেলের কমিকসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ফ্যান্টাস্টিক ফোর, স্কট পিলগ্রিম ভার্সেস দ্য ওয়ার্ল্ড ছবিগুলোতেও দেখা গেছে ক্রিসকে। অথচ ছোটবেলায় এসব কমিকস নাকি তাঁর একেবারেই ভালো লাগত না! এমনকি প্রথম যখন ক্যাপ্টেন আমেরিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব আসে, তিনি তা করতে চাননি। পাছে এর সাফল্য তাঁর ব্যক্তিজীবনে প্রভাব ফেলে। অবশ্য ভুল কিছু যে ভেবেছিলেন, তা নয়।
আয়রনম্যান নেশাগ্রস্ত ছিলেন
অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা বাবা রবার্ট ডাউনি সিনিয়রের ছেলে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র বিখ্যাত হয়েছেন পর্দার ‘আয়রনম্যান’ হিসেবে। অথচ এই সুপারহিরো ছোটবেলায় নেশায় আসক্ত ছিলেন। পরে বাবার কয়েকটি চলচ্চিত্রে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। সবকিছু পাল্টে যায় চ্যাপলিন ছবিটি করার পর। চার্লি চ্যাপলিনের চরিত্রে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। মাঝে কিছুদিন আবার অভিনয় থেকে সরে গেলেও পরবর্তী সময়ে আবার সিংগিং ডিটেকটিভ, ট্রপিক থান্ডার চলচ্চিত্রগুলোর মাধ্যমে ফিরে আসেন রবার্ট। এরপর তাঁর হাতে আসে আয়রনম্যান চলচ্চিত্রটি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন হয়নি।
কুস্তিতে ভালো ছিলেন হাল্ক
ছোটবেলা থেকেই শব্দ চিনতে, যোগাযোগ করতে সমস্যা হতো রাফেলোর। মা ছিলেন হেয়ার স্টাইলিস্ট। কুস্তিতে স্কুলে ভালো ছিলেন তিনি। অবশ্য পরবর্তী সময়ে অভিনয়ের সঙ্গে পরিচয় ঘটে তাঁর, আর একটু একটু করে ছোটখাটো সব চরিত্রে অভিনয়ের পর হাল্ক হিসেবে পরিচিত হন তিনি।
রেসলার স্টার লর্ড
ছোটবেলায় রেসলিংয়ে বেশ ভালো ছিলেন ক্রিস প্র্যাট। তবে কোনো কিছুতেই খুব বেশিদিন মন ধরে রাখতে পারেননি এই অভিনেতা। কলেজ শুরু করে অর্ধেকে ছেড়ে দেন তিনি। টিকিট বেচা, স্ট্রিপার হিসেবে কাজ করা—কোনোটাই বাদ রাখেননি তিনি এরপর। ক্রিস প্র্যাটের তখন থাকার ঘর ছিল না। ১৯ বছর বয়স তখন প্র্যাটের। তখন একদিন হোটেলে কাজ করার সময় পরিচালকের চোখ পড়ে তাঁর ওপর। হরর চলচ্চিত্রের জন্য অভিনয় করেন ক্রিস। সেই শুরু। এরপর একটু একটু করে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন ক্রিস। প্রথমে স্টার লর্ডের চরিত্রে অভিনয় করতে চাননি এই অভিনেতা। তবে পরে গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সিকে না বলতে পারেননি।
উলভারিনের ইচ্ছে ছিল সাংবাদিক হওয়ার
বিখ্যাত হওয়ার আগে নিজের দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতেই হিমশিম খেতে হতো ‘উলভারিন’, অর্থাৎ হিউ জ্যাকম্যানের। টিনএজে একটি গ্যাসস্টেশনের রাতের শিফটে বছরের পর বছর কাজ করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বাচ্চাদের পার্টিতে ক্লাউন সাজতেন। কমিউনিকেশনের ওপর পড়াশোনা করছিলেন। ইচ্ছে ছিল ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হবেন। কিছু ক্রেডিট কম ছিল বলে ড্রামাটিকস (নাট্যকলা) কোর্স নেন। সবাই জানেন, বাকিটা ইতিহাস!
সাদিয়া ইসলাম, হলিউড রিপোর্টার, আইএমডিবি, সিবিআর অবলম্বনে