সুশান্তের মৃত্যু মামলায় নতুন মোড়, গ্রেপ্তার এক বন্ধু

সিদ্ধার্থ পিঠানি ও সুশান্ত সিং রাজপুত
সংগৃহীত

বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্যজনক মৃত্যু মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁর বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানিকে। এই বলিউড অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে মাদক ও স্বজনপ্রীতিকে দায়ী করা হলেও ক্রমেই মামলা মোড় নিচ্ছে নতুন দিকে। শুরু থেকেই সিদ্ধার্থের ওপর ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো এনসিবির নজর ছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার এনসিবি হায়দরাবাদ থেকে সিদ্ধার্থকে গ্রেপ্তার করে। ভারতীয় স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এমনটি প্রতিবেদন করেছে। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই সিবিআই ও এনসিবি একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিদ্ধার্থকে। এবার গ্রেপ্তার করা হলো। তাঁকে মুম্বাইয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

গত বছর হঠাৎ বলিউডে শোকের ছায়া নামে। ১৪ জুন বান্দ্রায় নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ। অভিযুক্ত ও সুশান্তের বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানি একই ফ্ল্যাটে সুশান্তের সঙ্গে থাকতেন। বলিউড এই অভিনেতার রহস্যজনক মৃত্যুর পরে তাঁর অনেক বন্ধুর ওপরেই পুলিশ নজর রাখছিল।
সুশান্তের মৃত্যুর পরে বলিউডে ড্রাগ ব্যবসা ও স্বজনপোষণ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। আলোচনা শুরু হয় দেশজুড়ে। মৃত্যু নিয়ে তদন্তে তলব করা হয় সুশান্তের সঙ্গে বন্ধুদের। তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীসহ একের পর এক অভিনেতা, পরিচালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়। বলিউড অভিনেত্রী ও সুশান্ত সিং রাজপুতের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে সুশান্তের পরিবার। গত বছর সেপ্টেম্বরে মাদকসংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রিয়া। প্রায় এক মাস কারাবন্দী থাকার পর জামিন পান তিনি।

সুশান্ত ও রিয়া।
ইনস্টাগ্রাম

বলিউড এই অভিনেতার মৃত্যুর পর মাদকসংশ্লিষ্টতায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে নাম ওঠে বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানির। সুশান্তের মৃত্যুর পর রিয়ার কল রেকর্ড থেকে দেখা গিয়েছিল ওই বছর সিদ্ধার্থের সঙ্গে প্রায় ১০০ বার কথা হয়েছে রিয়ার। বন্ধুর মৃত্যুর পর সুশান্তকে নিয়ে তদন্তকারী সংস্থা এবং সংবাদমাধ্যমের কাছে একাধিকবার কথা বললেও রিয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান সিদ্ধার্থ।

সুশান্ত সিং রাজপুত
ইনস্টাগ্রাম

জানা গেছে, ফ্ল্যাটে সুশান্তের ঝুলন্ত মৃতদেহ সিদ্ধার্থ পিঠানি দেখে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। কিছুদিন আগেই বিয়ে করেছেন সিদ্ধার্থ। সিবিআইয়ের তদন্তে সুশান্তের পরিচারকের বয়ান অনুযায়ী সিদ্ধার্থই প্রথম সুশান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেছিলেন।
এনসিবির কর্মকর্তা সমীর ওয়াংখেড়ে মুম্বাইয়ের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শিগগিরই আদালতে তোলা হবে সিদ্ধার্থকে। মাদকসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে। অতীতেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল এনসিবি ও সিবিআই। এবার সিদ্ধার্থের গ্রেপ্তারি কি ফাঁস করবে নয়া কোনো তথ্য? অভিনেতার মৃত্যুরহস্যের নতুন কোনো দিক উঠে আসবে কি? সেই অপেক্ষায় সবাই।

১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি পাটনায় জন্ম সুশান্তের। একসময় দিল্লিতে চলে আসে তাঁর পরিবার। দিল্লি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও ভর্তি হন। কিন্তু সেই সময় থেকেই থিয়েটারের দিকে ঝোঁকেন তিনি। নাচও শেখেন। তার জন্য পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি।

এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি ছবির পোস্টার
সংগৃহীত

২০১৩ সালে ‘কাই পো চে’ ছবি দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে সুশান্ত সিং রাজপুতের। একই বছরে মুক্তি পায় ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’। ২০১৬ সালে ‘ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ মুক্তির পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সুশান্তকে। শুধু ক্যারিয়ার আর লাইফ নয়, ব্যক্তিগতভাবেও সুশান্ত ছিলেন মেধাবী।
বক্স অফিসে তাঁর শেষ ছবি ছিল ‘ছিঁছোড়ে’। অবশ্য নেটফ্লিক্সের ছবি ‘ড্রাইভ’-এ শেষবার দেখা গিয়েছে তাঁকে।