আমাদের মাঝের আঙুলটি লম্বা কেন?

কোনো কিছু শক্ত মুঠিতে ধরতে হলে মাঝের আঙুলটির ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে
ছবি: পেক্সেলস

আমরা বলি, হাতের পাঁচ আঙুল সমান হয় না। অর্থাৎ এটা তো দেখাই যাচ্ছে; এর আবার কারণ কী? আর তা ছাড়া সব সমান হলে চলবে কেন? কথাটি ঠিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ছোট-বড় হওয়ার পেছনের কারণ কী? এর কোনো নিশ্চিত উত্তর জানা না গেলেও বলা যায়, জীবনের প্রয়োজনেই মাঝের আঙুলটি লম্বা হয়েছে।

ধারণা করা হয়, যেহেতু কোনো কিছু শক্ত মুঠিতে ধরতে হলে মাঝের আঙুলটির ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে, সে কারণেই এর হাড় শক্ত ও একটু লম্বা। মানুষের দীর্ঘ বিবর্তনের ধারায় মাঝের আঙুলটি লম্বা হয়েছে। আদিম মানুষ মূলত গাছের ফলমূল খেয়ে বাঁচত।

আদিম যুগে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য মাঝের আঙুলটি একটু লম্বা হওয়া দরকার ছিল
ছবি: পেক্সেলস

তাদের এক গাছ থেকে আরেক গাছে লাফ দিয়ে যাওয়ার সময় শক্ত করে ডাল ধরার প্রয়োজন ছিল। এ সময় হাতের মুঠির মাঝের আঙুলটির সামর্থ্যের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করত। সোজা কথায় বলা যায়, সেই যুগে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য মাঝের আঙুলটি একটু লম্বা হওয়া দরকার ছিল।

হয়তো অনেক মানুষের মাঝের আঙুলটি লম্বা ছিল না। ফলে তাদের পক্ষে ফলমূল জোগাড় করে বেঁচে থাকা কঠিন হতো এবং তারা বংশ বিস্তারের আগেই মারা পড়ত। এভাবে শুধু সেসব মানুষের বংশধরেরাই টিকে থাকে, যাদের মাঝের আঙুলটি লম্বা। হাতের সব মাংসপেশি মাঝের আঙুলের হাড়ের চারপাশ ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে।

কোনো কিছু ধরতে হলে মাঝের আঙুলটির মাধ্যমে পুরো হাতের জোর প্রয়োগ করা সম্ভব হয়
ছবি: পেক্সেলস

ফলে কোনো কিছু ধরতে হলে এই আঙুলটির মাধ্যমে পুরো হাতের জোর প্রয়োগ করা সম্ভব হয়। সে তুলনায় তর্জনী একটু ছোট এবং বুড়ো আঙুল ও তর্জনী মিলে অপেক্ষাকৃত সূক্ষ্ম কাজ, যেমন সুইয়ে সুতা পরানো, পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার প্রভৃতি করা হতো। আর মাঝের আঙুলটি একটু লম্বা আকৃতির হওয়ায় অপেক্ষাকৃত বেশি বলপ্রয়োগের কাজ করার গুরুদায়িত্ব তার ওপরই বর্তায়।

আরও পড়ুন