আসুন, এই দুর্ধর্ষ, চিরনবীন যুবকটির সঙ্গে পরিচিত হই

সীমিত গণ্ডিবদ্ধ জীবনের একঘেয়েমি থেকে ঘরকুনো বাঙালিকে বের করে আনতে চেয়েছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন। সৃষ্টি করেছিলেন দুর্দান্ত, দুঃসাহসী এক স্পাই। ‘মাসুদ রানা’। ৫৬ বছর পাঠককে নিয়ে স্বপ্নের এক আশ্চর্য মায়াবী জগতে বিচরণ করেছেন...

‘মাসুদ রানা’ সিরিজের প্রথম তিনটি বইয়ের প্রচ্ছদ
কোলাজ: একটু থামুন
  • ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে। কাহিনি সাজাতে ১৯৬৫ সালে মোটরসাইকেলে করে চট্টগ্রাম, কাপ্তাই ও রাঙামাটি ঘুরে আসেন কাজী আনোয়ার হোসেন। এরপর সাত মাস সময় নিয়ে লিখলেন ধ্বংস পাহাড়। পরের বই ভারত নাট্যমও মৌলিক রচনা।

  • তৃতীয় বই স্বর্ণমৃগ থেকে বিদেশি কাহিনির ছায়া অবলম্বনে শুরু হয় ‘মাসুদ রানা’ লেখা। এখনো তা-ই চলছে। প্রথম দুটি বইয়ের বাইরে আর একটা মৌলিক ‘মাসুদ রানা’ লিখেছিলেন, নাম পিশাচ দ্বীপ

  • ‘মাসুদ রানা’র কাহিনি সংগ্রহ করা হয় ইয়ান ফ্লেমিং, অ্যালিস্টেয়ার ম্যাকলিন, জেমস হেডলি চেজ, রবার্ট লুডলাম, ফ্রেডরিক ফোরসাইথ, উইলবার স্মিথসহ অনেক লেখকের বই থেকে। মূল কাহিনির কাঠামোতে সংযোজন-বিয়োজন করে দাঁড় করানো হয় একেকটা নতুন ‘মাসুদ রানা’।

  • ‘মাসুদ রানা’র প্রথম দিকের বইগুলোর প্রকাশক ছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিন।

  • বন্ধু গীতিকার মাসুদ করিমের নামের প্রথম অংশ ও আর নিজের প্রিয় ঐতিহাসিক চরিত্র রানা প্রতাপের নামের প্রথম অংশ মিলিয়ে ‘মাসুদ রানা’ নামটি তৈরি করেন কাজী আনোয়ার হোসেন।

মাসুদ রানার সেই চিরচেনা পরিচিতি
ছবি: সংগৃহীত
  • ‘মাসুদ রানা’র প্রথম চরিত্র-পরিচিতি দেওয়া হয় ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত রানা! সাবধান!! বইয়ে। সেই পরিচিতি অবশ্য এখনকার মতো ছিল না।

  • ২০১৬ সালে দেওয়া সাক্ষাৎকার অনুযায়ী রানা সিরিজে কাজী আনোয়ার হোসেনের প্রিয় বই স্বর্ণমৃগ, বিস্মরণশত্রু ভয়ংকর

  • ১৯৭৪ সালে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ১১তম বই বিস্মরণ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল চলচ্চিত্র মাসুদ রানা। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা। চিত্রনাট্য লিখেছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন নিজেই।

  • মাসুদ রানার প্রিয় অস্ত্র ওয়ালথার পিপিকে।

মাসুদ রানার মতো চরিত্র সৃষ্টি করে ৫৬ বছর পাঠককে নিয়ে স্বপ্নের এক আশ্চর্য মায়াবী জগতে বিচরণ করেছেন ‘কাজীদা’
অলংকরণ: সব্যসাচী মিস্ত্রি, কোলাজ: একটু থামুন
  • কাহিনির রানা সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর। এখন কাজ করেন বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স (বিসিআই) নামের কাল্পনিক সংস্থায়, যেখানে তার সাংকেতিক নাম এমআর-নাইন। রানা এজেন্সি নামক একটি গোয়েন্দা সংস্থারও তিনি কর্ণধার, তবে সেটি তার ‘কাভার’।

  • সিরিজের সহযোগী চরিত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রানার বস মেজর জেনারেল রাহাত খান (অব.), সহকর্মী সোহেল চৌধুরী, সোহানা চৌধুরী, গিলটি মিঞা। খল চরিত্রের মধ্যে আছে প্রফেসর কবীর চৌধুরী, উ সেন। সাংবাদিক বন্ধু রাহাত খানের নামে মেজর রাহাত চরিত্রটির নামকরণ করেছিলেন চরিত্রগুলোর স্রষ্টা।