ঈদ উপহার
আহসান হাবীবের প্রিয় ৭ কৌতুক
ব্যক্তিজীবনে দারুণ কৌতুকপ্রিয় বলেই দীর্ঘ দিন ধরে এসব নিয়ে তাঁর জীবনযাপন এবং কাজকারবার। ভীষণ সিরিয়াস মুহূর্তেও তাঁর মাথায় উঁকি দেয় দারুণ রসাত্মক একটা কৌতুক। বাজারে তাঁর কৌতুক সংকলনের সংখ্যা কম নয়। ফলে তাঁর প্রিয় কৌতুক নিয়ে আগ্রহ আছে সবার মধ্যে। প্রথম আলোর অনুরোধে ৭টি প্রিয় কৌতুকের সঙ্গে কার্টুন আঁকলেন ‘গ্র্যান্ডফাদার অব জোকস’ আহসান হাবীব।
১.
এক সরকারি কর্মকর্তা জরুরি ফাইল নিয়ে আরেক অফিসে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়ে পা দিয়ে একটা শামুককে থেঁতলে ফেললেন।
‘এটা কেন করলেন?’ পাশ থেকে একজন জানতে চাইলেন, ‘নিরীহ শামুকটা আপনাকে কী করেছিল?’
‘ফাজিলটা সকাল থেকে আমার পায়ে পায়ে আছে।’
২.
চৌধুরী সাহেব বিরাট বড়লোক। তবে জন্ম থেকে তাঁর দুটি কান নেই। তো তিনি তাঁর অফিসে নিজের জন্য একজন ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়োগ দেবেন বলে ঠিক করলেন। দরখাস্তদাতাদের মধ্য থেকে তিনজনকে বাছাই করা হলো। ডাকা হলো প্রথমজনকে। চৌধুরী সাহেব বললেন—
: যার পর্যবেক্ষণ ভালো, তাকেই আমি আমার সহকারী নিয়োগ করব। এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলো, কী তোমার পর্যবেক্ষণ?
: স্যার, আপনার দুই কান নেই। শুনে চৌধুরী সাহেব রেগে গিয়ে প্রথম লোকটিকে বের করে দিয়ে দ্বিতীয়জনকে ডাকলেন। তাকে বললেন—
: আমাকে দেখে তোমার প্রথম পর্যবেক্ষণ কী?
: স্যার, আপনার দুই কান নেই। শুনে এবারও চৌধুরী সাহেব রেগে গিয়ে দ্বিতীয় লোকটিকে বের করে দিলেন। এরপর ডাক পড়ল তৃতীয়জনের। তাকে তিনি বললেন—
: আমাকে দেখে তোমার কী পর্যবেক্ষণ?
: আপনি কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন।
উত্তর শুনে খুশি হলেন চৌধুরী সাহেব। বললেন, ‘কীভাবে বুঝলে?’
: স্যার, আপনার দুই কান নেই। চশমা পরবেন কীভাবে?
৩.
: পিটি পরীক্ষায় ফেল করেছিস মানে? পিটিতে কেউ ফেল করে? হাত–পা নাড়ালেই তো পাস। কী হয়েছিল, খুলে বল।
: প্রথমে স্যার বললেন, ‘ডান পা তোলো।’ আমি তুললাম। তারপর স্যার যখন বাঁ পা তুলতে বললেন, আমি বললাম, ‘বাঁ পা তুলে আমি আছাড় খেয়ে পড়ব নাকি?’ তখনই স্যার ফেল করিয়ে দিলেন। এতে আমার ভুলটা কোথায়?
৪.
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনীর এক প্লাটুন কমান্ডার তাঁর বাহিনীকে ব্রিফিং করছিলেন, ‘মনে রেখো, সামনেই আছে তোমার শত্রু, যে তোমাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তোমাদের হত্যা করতে চায়। দিনের পর দিন তিল তিল করে তোমাদের ক্ষতি করে চলেছে, সেই যুদ্ধের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত...।’
এই সময় এক সৈন্য লাফিয়ে উঠে বললেন, ‘হায় ঈশ্বর, আমাদের বাবুর্চি তাহলে জার্মানদের হয়ে কাজ করছে!’
৫.
ডাক্তার ও রোগীর কথোপকথন।
ডাক্তার: আপনার জন্য একটা খারাপ খবর ও একটা ভালো খবর আছে। কোনটা আগে শুনতে চান?
রোগী: খারাপ খবরটাই আগে শুনি।
ডাক্তার: আপনার যে রোগ হয়েছে, তাতে করে আপনার সব প্রিয় খাবার বন্ধ।
রোগী: যেমন?
ডাক্তার: এখন থেকে আপনার চকলেট, মিষ্টি, আইসক্রিম, চা-কফি, পিৎজা, চিকেন, বিফ, ফ্রায়েড রাইস, মাটন—সব বন্ধ।
রোগী: হায় ঈশ্বর, তাহলে খাব কী?
ডাক্তার: শুধু সবুজ শাকসবজি খাবেন এবং বাকি জীবন এই খেয়েই বাঁচতে হবে।
রোগী: বলেন কি? বাকি জীবন শুধু এসবই খেতে হবে?
ডাক্তার: হ্যাঁ। তবে ভালো খবর হচ্ছে, এই খাবার আপনাকে আর মাত্র মাস দুয়েক খেলেই হবে।
৬.
ম্যাজিশিয়ান মজনু একটা জাহাজের নিজস্ব জাদুকর। সে জাহাজে জাদু দেখিয়ে বেড়ায়। জাহাজের যাত্রীদের বিনোদন দেয়। কিন্তু, মুশকিল হচ্ছে ক্যাপটেনের ময়না পাখিটা। হয়তো মজনু জাদু দিয়ে একটা ডিম অদৃশ্য করে দিল, তখন পাশ থেকে ময়না বলে ওঠে, ডিমটা ওর কোটের হাতায় লুকানো। কিংবা হয়তো মজনু একটা খরগোশকে সবার চোখের সামনে অদৃশ্য করে দিল, তখন ময়না পাখি বলে ওঠে, খরগোশটা টেবিলের নিচে। এভাবে তার সব জাদুই পাখিটা ফাঁস করে দেয়। এ কারণে মজনু ময়নার ওপর মহা খ্যাপা। কিন্তু যেহেতু জাহাজের ক্যাপটেনের ময়না, তাই সে কিছু বলতে পারে না।
তো একদিন সমুদ্রে প্রচণ্ড ঝড় উঠল। সেই ঝড়ে জাহাজ ডুবে গেল। একটা ভাসমান তক্তা ধরে মজনু কোনো রকমে ভেসে রইল। ওই তক্তায় সেই ময়নাও ছিল। মজনু ভাবল, এই সুযোগ। এই ব্যাটাকে চুবিয়ে মারতে হবে। তখনই ময়না বলে উঠল, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, আমি হার মানলাম তোমার জাদুর কাছে। এখন বলো, জাহাজটা কোথায় লুকিয়েছ?’
৭.
এক ভদ্রমহিলা গেছেন শাড়ি কিনতে, বিয়েতে যাবেন বলে নতুন একটা শাড়ি কিনবেন তিনি। একের পর এক শাড়ি দেখিয়ে যাচ্ছেন বিক্রেতা, কিন্তু কোনোটাই ওই নারীর পছন্দ হচ্ছে না। বিক্রেতা শেষে খুব রঙিন একটা শাড়ি দেখিয়ে বললেন, ‘এটা নিয়ে যান আপা, এটা আপনাকে খুব মানাবে। বিয়েতে পরবেন বললেন না?’
: হ্যাঁ।
: কার বিয়ে আপা?
: আমার ভাগনির।
: বিয়ের জন্য একেবারে পারফেক্ট, নিয়ে যান। আপনি ফরসা তো, খুব মানাবে। আঁচলটা দেখেন।
: হ্যাঁ, ভালোই তো লাগছে।
: ভালো মানে! এই শাড়ি পরলে আপনার বয়স ১০ বছর কমে যাবে।
: কী বললেন? তাহলে নেব না!
: কেন আপা?
: যে শাড়ি খুলে ফেললে বয়স ১০ বছর বেড়ে যায়, সেই শাড়ি আমি পরি না।