প্লেন বিধ্বস্ত হলেও ব্ল্যাকবক্স কেন অক্ষত থাকে

উড়োজাহাজ পরিবহন ব্যবস্থায় ১৯৫০ সাল থেকে ব্ল্যাকবক্স রাখার নিয়মটি চালু আছে
আনস্প্ল্যাশ

এটা তো সবারই জানা, প্লেনের ব্ল্যাকবক্স কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সব প্লেনেই ব্ল্যাকবক্স থাকে। এসব বক্স প্লেন চলার সময় বিভিন্ন তথ্য ধারণ করে রাখে। ব্ল্যাকবক্সের সংখ্যা এক বা ক্ষেত্রবিশেষে দুটি হয়। একটি ককপিটে পাইলটদের কথোপকথন ধারণ করে, যা ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (সিভিআর) নামে পরিচিত। অপরটি প্লেন চলাচলের বিভিন্ন তথ্য ধারণ করে, যা ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (এফডিআর) নামে অভিহিত।

উড়োজাহাজ পরিবহন ব্যবস্থায় ১৯৫০ সাল থেকে ব্ল্যাকবক্স রাখার নিয়মটি চালু আছে। আগে টেপ রেকর্ডারে তথ্য ধারণ করা হতো, এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে বেশি সময় ধরে অনেক বেশি তথ্য সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা হয়েছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বিধ্বস্ত প্লেনের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করে সেখানে পাইলটদের শেষ মুহূর্তের কথাবার্তা, বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ, প্লেন চালনার বিভিন্ন তথ্য জানা সম্ভব হয় বলেই এ ব্যবস্থা। যন্ত্রগুলোতে ঘটনার পূর্ববর্তী অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের কথোপকথন এবং প্রায় ৫০টি সূচকে ফ্লাইট ডেটা সংরক্ষিত থাকে।

ব্ল্যাকবক্সের ব্যবচ্ছেদ
সংগৃহীত

ভবিষ্যতে কোনো দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য তথ্যগুলো জানা খুবই দরকার। দুর্ঘটনায় প্লেন ধ্বংস হয়ে গেলেও যেন ব্ল্যাকবক্স টিকে থাকে সে জন্য ওগুলো প্রচণ্ড তাপ, আঘাত বা চাপ সহিষ্ণু করে তৈরি করা হয়। সাগরে ডুবে গেলেও যেন তথ্য–ধারণ যন্ত্রগুলোর কিছু না হয় সে ব্যবস্থাও থাকে। পানির নিচ থেকে যন্ত্রগুলো তাদের অবস্থান জানানোর জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংকেত পাঠাতে থাকে। সাগরের প্রায় ১৪ হাজার ফুট নিচ থেকেও এভাবে ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা যায়। উদ্ধারের পর তথ্য বিশ্লেষণের জন্য যন্ত্রগুলো কোনো পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল ট্র্যান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের হেড অফিসে আছে অত্যাধুনিক কম্পিউটার, যা ব্ল্যাকবক্সের তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করে। নামে ব্ল্যাকবক্স হলেও সাধারণত যন্ত্রগুলোর রং কমলা হয়ে থাকে। প্লেন দুর্ঘটনার পর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পুড়ে কালো হয়ে যায় বলেই সম্ভবত ওদের নাম হয়েছে ব্ল্যাকবক্স।

আরও পড়ুন