ফাইনাল নিয়ে চরম দ্বিধায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া

কোলাজ: একটু থামুন

‘প্রথমে শুনলাম, ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠল, ওরা ফাইনাল খেলবে। এরপর শুনি, ইতালি আর ইংল্যান্ড ফাইনালে উঠল! এখন নাকি এরাই ফাইনাল খেলবে! আসলে ভাই, ফাইনাল খেলবেটা কারা? খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে দিন কাটাচ্ছি।’ এভাবেই নিজের দ্বিধার কথা জানাচ্ছিলেন এ সময়ের আলোচিত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক তরুণ।

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে ফাইনাল হবে শুনেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুবসমাজের একাংশ তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে একমুহূর্তও দেরি করেননি। অনেকে এটাকে নেতিবাচক চোখে দেখলেও এটি মূলত বিশ্ববাসীর প্রতি একটা বার্তা ছিল। বাংলাদেশের কথা নাহয় বাদই দিন, আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া যে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার চেয়েও শক্তিশালী, এটা ইতিমধ্যে পৃথিবী জেনে গেছে। কারণ, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফাইনাল নিয়ে দেশ দুটিতে এখনো কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কিন্তু ঘটেছে।

তবে সব ছাপিয়ে এখন একটাই শঙ্কা কাজ করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ঘিরে। চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বে দিন কাটাচ্ছেন সেখানকার অনেক মানুষ। কয়েকটি অবিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনেকে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি কোন কোন দল আসলে ফাইনাল খেলবে। তাই কোনো দলের হয়ে নতুন করে সংঘাতেও জড়াতে পারছেন না তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক যুবক জানান, ‘চরম অস্বস্তিতে আছি, ভাই। কোনো দলের হয়ে মারামারিও করতে পারছি না। কারণ, কোন দুই দল যে ফাইনাল খেলবে, এটাই এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। সেদিন ঢাকার এক বন্ধু ফোন করে বলল ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনাল খেলবে। এরপর চট্টগ্রাম থেকে আরেক বন্ধু ফোন করে বলল ইতালি-ইংল্যান্ড ফাইনাল খেলবে! আরে ভাই, ফাইনাল কি চার দল মিলে খেলতে পারে?’

যার মন চায়, সে-ই ফাইনাল খেলুক। আমরা আর এগুলারে কেয়ার করি না। যদি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফাইনাল দেখতে না পারি, তাইলে করোনার পর নেইমার আর মেসিরে কিন্যা আইনা আমগো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্লাবে খেলামু।

এদিকে একদল মানুষকে দেখা গেল, তারা চরম খেপে আছেন। মূলত কারা ফাইনাল খেলবে, সেটা নিয়ে এখনো নিশ্চিত হতে না পারায় বাকি পৃথিবীর মানুষের ওপর তারা চরম বিরক্ত। অনেকে আবার নতুন পরিকল্পনাও এঁটে বসে আছেন। এমনই এক পরিকল্পনাবিদ বলেন, ‘যার মন চায়, সে-ই ফাইনাল খেলুক। আমরা আর এগুলারে কেয়ার করি না। যদি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফাইনাল দেখতে না পারি, তাইলে করোনার পর নেইমার আর মেসিরে কিন্যা আইনা আমগো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্লাবে খেলামু। এটাই আমাগো ফাইনাল। একজন ব্রাজিল, আরেকজন আর্জেন্টিনা।’

নেইমার ও মেসিকে কিনে এনে কী খেলাবেন? মারামারি, ফুটবল নাকি অন্য কিছু? এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ‘ধুর মিয়া, ফুটবল খেলামু কিসের লাইগা? ফুটবল খেলে সময় নষ্ট করার মানুষ আমরা না। পাবজি আর ফ্রি ফায়ার খেলামু দুইটারে দিয়া। আমগো এলাকার যুবকদের কাদাপানিতে নেমে ফুটবল খেলার টাইম নাই। সবাই স্মার্টফোনে গেমস খেলে। শুনছি নেইমার-মেসিও ভালো খেলোয়াড়। তাই ওদের এনে এলাকার পোলাপানরে ট্রেনিং দেওয়ামু ভাবতেছি!’

কারা ফাইনাল খেলবে, তা পত্রপত্রিকা পড়লে বা টিভি দেখলেই জানা যায়—এটা জানাতেই একজন বলেন, ‘অন্যদের মতো আমাদের এত আজাইরা সময় নাই। পত্রিকা পড়ে কিংবা নিউজ দেখে জানার পেছনে সময় ব্যয় না করে আমরা ভালো কিছুর পেছনে সময় ব্যয় করি৷ যাই, একটা বাঁশ কেটে আনি। না না, অন্য কিছু ভাববেন না, ফুটবল মাঠের গোলপোস্ট হিসেবে কাজে লাগবে!’