গাড়িতে সিটবেল্ট বাঁধা বাধ্যতামূলক। তবে বাস কি গাড়ির বাইরে? এমন প্রশ্নের কারণ হলো বাসে তো সিটবেল্ট থাকে না। তাহলে বাসের যাত্রীরা সিটবেল্ট বাঁধবে কীভাবে? নাকি শুধু ব্যক্তিগত গাড়িতেই লাগবে, বাসে লাগবে না। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে।
কোনো কোনো পত্রিকায় বলা হয়েছে, বাসযাত্রীদেরও সিটবেল্ট বাঁধতে হবে! কিন্তু তাহলে তো আগে সব বাসে সিটবেল্ট লাগাতে হবে। বাসে কেন সিটবেল্ট থাকে না? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে প্রথমে দেখব কেন সিটবেল্ট দরকার।
খুব দ্রুত গতিতে চলার সময় হঠাৎ ব্রেক করলে বা কেনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খেলে নিউটনের গতি সংক্রান্ত প্রথম সূত্র অনুযায়ী গাড়ি থেমে গেলেও যাত্রীরা প্রচন্ড বেগে সামনের দিকে ছুটে যাবে। সিটবেল্ট বাঁধা না থাকলে যাত্রীরা এ সময় সামনে ছিটকে পড়তে পারেন এবং আঘাত পেতে পারেন। এ জন্যই সিটবেল্টের দরকার।
তবে বাসের মতো বড় গাড়িগুলো দুর্ঘটনায় পড়লেও যাত্রীরা ধাক্কা কিছুটা সামলে উঠতে পারেন, সেজন্যই হয়তো বাসে সিটবেল্ট সাধারণত থাকে না। তবে আরও অন্তত দুটি কারণ আছে।
প্রথমত স্কুলবাসগুলোতে শিশুরা সিটবেল্ট বাঁধতে চায় না। এমনকি সিটবেল্ট খুলে নিয়ে ওরা মারামারির হাতিয়ার হিসেবে ওগুলো ব্যবহার করতে পারে। তাই শিশুদের বাসে সিটবেল্ট বিপজ্জনক।
দ্বিতীয়ত, সিটবেল্টের জন্য বাড়তি ব্যয় করতে বাসমালিকেরা সহজে রাজি হন না। নানা বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড ১৯৮৭ সালের মার্চে সিদ্ধান্তে আসে যে স্কুলবাসে সিটবেল্টের দরকার নেই।
কারণ, সিটবেল্ট দুর্ঘটনায় যত শিশুকে বাঁচাতে পারবে, তার প্রায় দ্বিগুন মারা যায় প্রতিবছর বাসে ওঠা-নামার সময় দুর্ঘটনার কারণে। তাই তারা বরং সিটবেল্টের ব্যবস্থা করতে যত টাকা বাড়তি লাগত, তা দিয়ে বাসচালকদের প্রশিক্ষণ ও বাসের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করার সুপারিশ করে।
শুধু স্কুলবাসের শিশুরাই নয়, সাধারণ রুটে চলাচলকারী বাসের যাত্রীরাও সিটবেল্ট বাঁধতে আপত্তি করে। সে কারণেই হয়তো বাসে সিটবেল্ট থাকে না।
তবে আন্তজেলা মহাসড়কে যেসব বাস চলে, তাতে সিটবেল্ট থাকা ও ব্যবহার করা উচিত। এতে দুর্ঘটনায় জীবন রক্ষার সম্ভাবনা বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্য ও নগরে বাসে যাত্রীদের সিটবেল্ট বাঁধা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে এটা চলবে কি না, বলা মুশকিল।