খেলার মাঠে আমরা দেখেছি, কোনো ম্যাচে আকস্মিকভাবে হেরে গেলে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ে। আবার প্রত্যাশিত কিন্তু অভাবনীয় বিজয়েও চোখ ভরে পানি আসে। আমরা একে বলি ‘আনন্দাশ্রু’। কিন্তু কান্নার কথা তো দুঃখের সময়। আনন্দে কেন চোখে পানি আসবে?
এ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মনস্তত্ত্ববিদেরা একমত হয়েছেন যে আনন্দাশ্রু বলে কিছু নেই। দুঃখ-বেদনায়ই কেবল বুক ফেটে কান্না আসে। তাহলে আনন্দের অশ্রুকে কীভাবে আমরা ব্যাখ্যা করব?
আনন্দের অশ্রু আদতে পুঞ্জীভূত বেদনারই বহিঃপ্রকাশ। অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কষ্টের সময় চোখের পানি চেপে রাখতে পারে, যদিও এ জন্য বেশ মনস্তাত্ত্বিক বল প্রয়োগ করতে হয়। বাইরে কিছু বোঝা যায় না, কিন্তু ভেতরে ভেতরে কান্না চাপা থাকে। এ অবস্থায় যখন এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে শঙ্কার কারণ নেই, বিজয় এসে গেছে, তখনই সেই চেপে রাখা কান্না অশ্রুধারায় বেরিয়ে আসে। মুখে হাসি কিন্তু চোখে পানি। এই অশ্রু আদতে কিছুক্ষণ আগের সম্ভাব্য কষ্টের অবদমিত অনুভূতির প্রকাশ।
আমরা যখন কোনো সিনেমা দেখে, প্রতি মুহূর্তে বিয়োগান্তক পরিণতির আশঙ্কায় টানটান উত্তেজনায় থাকি এবং শেষ দৃশ্যে সব বিপদ কেটে যেতে দেখি, তখনো কান্না আসে। আনন্দের দৃশ্যগুলো সব সময় শৈশবের দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন সবাই বিশ্বাস করে যে আনন্দময় ভবিষ্যৎই জীবন। এ কারণেই শিশু-কিশোরেরা আনন্দে খুব কমই কাঁদে। কারণ, তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সব সময় আশাবাদী। কিন্তু বড়দের ব্যাপার আলাদা।