ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা সমর্থকদের জন্য কথায় জেতার আরও কিছু কৌশল

মাঠে-ঘাটে-হাটে-বাটে তো বটেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোও রীতিমতো ‘গোলযোগ’ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকদের খোঁচাখুঁচিতে। যারা কেবল ফুটবলীয় যুক্তিতর্ক দিয়ে খোঁচাখুঁচিতে সুবিধা করতে পারছেন না, তাঁদের জন্য কিছু কার্যকর (কু)যুক্তি বের করল ‘একটু থামুন’...

আপনি যখন আর্জেন্টিনার সমর্থক

ছবি: এএফপি
  • ‘এ’ ফর আর্জেন্টিনা, ‘বি’ ফর ব্রাজিল। এই সিম্পল জিনিস থেকেই প্রমাণিত হয় কারা ‘এ’ গ্রেড আর কারা ‘বি’ গ্রেড।

  • কে, কেমন সেটা তার নাম দেখেই খানিকটা আন্দাজ করা যায়। আর্জেন্টিনা নামটাই তো বেশ ওজনদার। লিখতে গেলে গুনে গুনে ইংরেজি নয়টা লেটার লাগে। আর ব্রাজিল লিখতে লাগে কয়টা? মাত্র ছয়টা। সো, নামে কে ভারী?

  • সমগ্র আমেরিকা অঞ্চলের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ‘আকনকাগুয়া’র অবস্থান কোথায়? আর্জেন্টিনায়। আর তা মাথা উঁচু করে পৃথিবীর তাবৎ চাপাবাজ ব্রাজিলিয়ান সাপোর্টারদের জানিয়ে দিচ্ছে, প্রকৃত অর্থে কারা শীর্ষে, কারা সেরা। ‘শীর্ষ’ জিনিসটাই আসলে আর্জেন্টিনার মজ্জাগত।

  • আমাজন জঙ্গলের পাশে বলেই ব্রাজিলিয়ানদের স্বভাব-চরিত্র অনেকটা বুনো-টাইপের। আফসোস হয় সেসব অবুঝ মানুষের জন্য, যারা এই সভ্য জগতের বাসিন্দা হয়েও সাপোর্ট করে কিনা একটা জঙ্গলের টিমকে।

  • পৃথিবীর দীর্ঘতম, মনোমুগ্ধকর, চমৎকার, দৃষ্টিনন্দন, আন্দেজ পর্বতমালা আর্জেন্টিনার বুকে অবস্থিত। আর ব্রাজিলে আছে একগাদা জঙ্গল। শুধু কাপ-পিরিচের সংখ্যা দিয়েই সেরা হওয়া যায় না, সেরা হতে গেলে যে চমৎকার পর্বতমালাও থাকতে হয়, সেটা কে বোঝাবে এদের!

আপনি যখন ব্রাজিল সমর্থক

ছবি: রয়টার্স
  • ‘বি’ ফর বাংলাদেশ, ‘বি’ ফর ব্রাজিল। বাংলাদেশের পতাকার রং সবুজ, ব্রাজিলের পতাকার রঙেও সবুজ আছে। অতএব যারা ব্রাজিলকে সাপোর্ট করে না, সোজা বাংলায় তাদের দেশপ্রেমের মধ্যে বিরাট ফাঁক আছে।

  • ফুটবল বাদ দিলেও ব্রাজিল সব র‍্যাঙ্কিংয়েই আর্জেন্টিনার ওপরে। নামে বড় না হোক, ব্রাজিল কাজেকর্মে বিশাআআআল। আয়তনের দিক দিয়ে আমাদের ব্রাজিলের র‍্যাঙ্কিং বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম, আর হারজেন্টিনা, থুক্কু আর্জেন্টিনা অষ্টম। জনসংখ্যার দিক দিয়েও ব্রাজিল আছে পাঁচে। আর এখানে আর্জেন্টিনা তো টপ টেনেই নেই! তাহলে কোন যুক্তিতে তারা নিজেদের সবদিক দিয়ে সেরা মনে করে!

  • পৃথিবীর সবচেয়ে বড়, দুর্গম, রোমাঞ্চকর বনাঞ্চল আমাজনের নাম কে না জানে। এই আমাজনের শতকরা ৬০ ভাগই পড়েছে ব্রাজিলে। অথচ আর্জেন্টিনায় এর ছিঁটেফোটাও নেই। বিশাল আমাজনের ভূ-প্রাকৃতিক প্রভাব রয়েছে ব্রাজিলের খেলোয়াড়, সমর্থকদের মধ্যেও। এ জন্যই ব্রাজিলের খেলোয়াড়, সমর্থকেরা সাহসী, রোমাঞ্চপ্রিয়, উদ্যমী আর আর্জেন্টিনার ওরা লুতুপুতু টাইপের। হবেই বা না কেন? তাদের তো আর মায়াময় আমাজন নেই! আছে কিনা আন্দেজ নামের কঠিন কঠিন কতগুলা টিলা!

  • আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ব্রাজিলের অর্থনীতি দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ, বাজার বিনিময়ের ভিত্তিতে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম ও ক্রয়ক্ষমতা সমতার ভিত্তিতে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম অর্থনীতি। বলা বাহুল্য, এসব ক্ষেত্রে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের ধারেকাছেও নেই। ডিয়ার আর্জেন্টিনা সাপোর্টার, একটি দেশের প্রধান চালিকাশক্তি হলো এর অর্থনীতি। আপনার অর্থনীতিই যদি মজবুত না হয়, আপনি যতই ‘আমরা সেরা আমরা সেরা’ বলে চেঁচান না কেন সেটা জাস্ট ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা ছাড়া আর কিছু নয়।

  • কাপ জেতা ছাড়া ব্রাজিল যে কত কিছুতে শীর্ষে, তার ইয়ত্তা নেই। ব্রাজিল আখ উৎপাদনে শীর্ষে, চিনি উৎপাদনে শীর্ষে, কফি উৎপাদনে শীর্ষে। এ থেকেই পরিষ্কার যে ব্রাজিল খুবই শীর্ষমনা! আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা একমাত্র গলাবাজিতেই ওয়ার্ল্ডস নম্বর ওয়ান!