যখন রান্নার চল ছিল না, তখন প্রাগৈতিহাসিক মানুষ সারা দিন মুখে খাবার নিয়ে দাঁত দিয়ে কামড়াত। ফলে তাদের চোয়াল ছিল বড়। আর সে জন্য মাথায় মস্তিষ্কের জন্য জায়গা ছিল কম। ফলে বুদ্ধিও কম। তাই বলা যায়, আধুনিক মানুষের বিকাশে রান্না করা খাবারের অবদান আছে। কিন্তু সেটাই কি একমাত্র কারণ? না, তা নয়।
কোনো খাদ্যে তাপ দিলে শর্করা ও অ্যামিনো এসিডের জটিল অণু ভেঙে নতুন নতুন আণবিক সম্মিলনের ফলে মধুর সুগন্ধি ও স্বাদ তৈরি হয়। ৩২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপে চিনি গলে যায়, আর ৩৩৫ ডিগ্রিতে বাদামি রং ধারণ করে সুগন্ধি ছড়াতে শুরু করে। তাপে এ ধরনের পরিবর্তনকে বলে ‘পিঙ্গলিকরণ বিক্রিয়া’ (ব্রাউনিং রিঅ্যাকশন)।
শর্করার কার্বন, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন বাতাসের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে শত শত যৌগ তৈরি করে, যা বিভিন্ন গন্ধ ও স্বাদের খাদ্য হিসেবে আমাদের কাছে সমাদৃত। খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে কাঁচা মাংস, গম বা চাল প্রভৃতিতে মাত্র কয়েকটি সুস্বাদু উপাদান রয়েছে, কিন্তু রান্না করা মাংসে থাকে অন্তত ৬০০ ধরনের সুগন্ধি উপাদান।
এই স্বাদই মানুষকে আকর্ষণ করেছে। শুধু কাঁচা ফলে আকর্ষণীয় স্বাদ ও গন্ধ থাকে। আদিম মানুষ যখন দেখেছে, আগুনে রান্না করা খাবার স্বাদে-গন্ধে ফলের মতোই আকর্ষণীয়, সম্ভবত তখনই সে তার প্রতি আগ্রহী হয়েছে।