গোপালের সান্ত্বনা
গোপালের এক বন্ধুর বাবার শ্রাদ্ধে গোপাল নিমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছে। কিছু একটা বলতে হয় তাই গোপাল বলল, ‘ভাই, তোমার বাবার কীভাবে মৃত্যু হলো?’
বন্ধু বলল, ‘বেকায়দায় বল্লমের খোঁচা খেয়ে মারা গিয়েছেন।’
গোপাল বলল, ‘কোথায় খোঁচা লেগেছিল?’
বন্ধু বলল, ‘চোখের একটু দূরে।’
গোপাল বলল, ‘দুঃখ কোরো না ভাই, তবু চোখটা তো বেঁচে গিয়েছে। চোখে লাগলে কী হতো বলো তো? চোখ বলে কথা! ভগবানের অশেষ দয়া বলতে হবে।’
মামা-ভাগনে সমাচার
একদিন ঠাট্টা করে গোপালের মামা গোপালকে বললেন, ‘তোর কি বিশ্রী চেহারা রে! ভূতের চেহারাও তো তোর চেয়ে ভালো। আয়নায় একবার নিজেকে দেখেছিস?’
ছাড়বার পাত্র নয় গোপালও। সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিল, ‘কী আর করা যাবে বলো, শাস্ত্রেই আছে, মামার চেহারাই তো ভাগনে পায়। তুমি যেমন তোমার মামার মতো দেখতে, আমিও তেমনি তোমার মতো দেখতে। এর জন্য আমি আর কোনো আক্ষেপ করি না।’
পঞ্চাশ পয়সায় কি ঘি-ভাত?
এক কাজে গোপাল গ্রামে গেছে। গোপাল এসেছে জানতে পেরে গ্রামের মেয়ে-বউরা ভিড় করল। গোপালের কাছে তারা হাসির গল্প শুনতে চাইল। গোপাল জানাল, পয়সা ছাড়া সে গল্প বলে না। একজন মহিলা গোপালের হাতে পঞ্চাশটা পয়সা তুলে দিল। গোপাল ট্যাঁকে পয়সা গুঁজে গল্প শুরু করল, ‘এক রাজা ছিল। তাঁর দুই রানি। সুয়োরানি আর দুয়োরানি। রাজা একদিন হঠাৎ অন্দরমহলে ঢুকে দেখলেন, দুই রানি মনের আনন্দে পান্তাভাত খাচ্ছেন।’
এ কথা শুনেই মেয়ে-বউরা বলে উঠল, ‘কী গোপাল, রাজার রানিরা পান্তাভাত খাচ্ছে?’
গোপাল বলল, ‘পঞ্চাশ পয়সায় পান্তাভাত খাবে না তো কি ঘি-ভাত খাবে?’
সূত্র: গোপাল ভাঁড়ের ৫ ডজন গল্প (প্রথমা প্রকাশন)
সংকলন ও সম্পাদনা: আখতার হুসেন