কোন রুটের বাসে কন্ডাক্টরি করছেন সাকিব, জানতে আগ্রহী তরুণীরা

সাকিবের একই অঙ্গে কত রূপ
ছবি: সাকিব আল হাসানের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাঝেমধ্যে বিচিত্ররূপে আবির্ভূত হন সাকিব আল হাসান। সম্প্রতি যেমন তাঁকে দেখা গেল বাসের কন্ডাক্টরের বেশে। এরপর সাকিব আবার কোন রূপে দেখা দেবেন, সেটা কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে আয়োজন করা হয়েছে ‘সাকিব এবার কী সাজবেন’ নামের এক ফেক শো (অনেক চেষ্টা করেও রিয়েলিটি শো হতে পারেনি)।

এই ফেক শোতে অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়েছিল, সাকিবের পরবর্তী রূপ কী হতে পারে, সেটা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে। যাঁদের ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেছে, তাঁরা পেয়েছেন স্যামসাংয়ের সৌজন্যে একটি করে আকর্ষণীয় আইফোন।

বাসের কন্ডাক্টরের বেশে সাকিব আল হাসান
ছবি: বিজ্ঞাপন ব্যক্তিত্ব গাউসুল আলম শাওনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নেওয়া

যাহোক, সাকিব সম্প্রতি লোকাল বাসের কন্ডাক্টরের বেশে হাজির হওয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পাঠাও, উবারসহ অন্যান্য যাত্রী পরিবহনকারী কোম্পানিগুলোর মাথায় হাত। হয়তো ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে সাকিব বাসের কন্ডাক্টর হিসেবেই জীবিকা নির্বাহ করবেন—এই ভাবনা থেকে সবাই, বিশেষ করে তরুণীরা এখন পাবলিক বাসের পেছন পেছন ছুটছেন। এমনকি নিজেদের নামীদামি ব্র্যান্ডের গাড়িতে না চড়ে লোকাল বাসে চলাচল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেকে।

তেমনই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুলশানের এক তরুণীর সঙ্গে লোকাল বাসে যেতে যেতে কথা হয় ‘একটু থামুন’–এর এই প্রতিনিধির। ওই তরুণী বলেন, ‘আমার একটা বিএমডব্লিউ আছে। কিছুদিন আগে কোনো রিটেক ছাড়া এক চান্সেই একটা সেমিস্টার পাস করায় বাবা আমাকে একটা ল্যাম্বোরগিনি উপহার দিয়েছে। এত কিছু থাকার পরও আমি লোকাল বাসে চড়েছি শুধু এই আশায় যে, এই বুঝি সাকিব আল হাসান এসে আমাকে বলবে, “এই আপা, ভাড়াটা দ্যান”।’

সাকিবের এক লুকেই যে বাসমালিকদের বাজিমাত, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে কেউই জানেন না সাকিব আদতে কোন রুটের বাসের কন্ডাক্টর। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গুগলে সার্চ করেও সাকিবের বাস–সম্পর্কিত কোনো তথ্য জোগাড় করতে পারছেন না।

রাস্তার পাশে বসে কান্নারত এক তরুণীর কান্নার হেতু জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ভাই, ৩০ দিন মেয়াদের ২০ জিবি ইন্টারনেট মাত্র ২ ঘণ্টায় শেষ করেছি স্রেফ “সাকিব কোন রুটের বাসে কাজ করে” লিখে গুগল সার্চ দিয়ে। সকাল থেকে এখানে দুরবিন নিয়ে বসে আছি কোনো বাসের ভেতর সাকিবকে দেখা যায় কি না, সে আশায়। কিন্তু কিছুই পেলাম না। প্লিজ, আপনি একটু যান এখন। আমাকে আরও তিন ঘণ্টা কেঁদে কিছুটা হালকা হতে হবে।’

এদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক তরুণী অন্য রকম স্বপ্ন দেখছেন। ‘একটু থামুন’–এর ফেক প্রতিনিধিকে দেখামাত্রই দৌড়ে সামনে এসে বলেন, ‘আপনি এখানে কেন এসেছেন, সেটা আমি ভালো করেই জানি। হ্যাঁ, আমিও সাকিবকে ভালোবাসি। আমি স্বপ্ন দেখি এমন একদিনের, যেদিন লোকাল বাসে ভাড়া নিতে এসে আমার সঙ্গে সাকিবের দেখা হয়ে যাবে, আমি তাঁকে প্রপোজ করব। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে ভালোবাসা দিবসে আমাদের ভালোবাসা নিয়ে “বাসে আসার গল্প” নামে নাটক বের হবে। উফ্, আর ভাবতে পারছি না!’ বলেই নিজের স্কুটি ফেলে বাসের পেছনে ছুটতে লাগলেন তিনি।

সাকিবের এক লুকেই বাসমালিকদের বাজিমাত
ছবি: সাকিব আল হাসানের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

এ ছাড়া সারা ঢাকা শহরের সব বাসস্টেশনে সকাল থেকেই অসংখ্য তরুণীকে ভিড় করতে দেখা গেছে। সাকিব কোন রুটের বাসের কন্ডাক্টর, সেটা না জানা সত্ত্বেও ফার্মগেটের বাসের লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? এমন প্রশ্ন করতেই এক তরুণী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল একজন বাসের কন্ডাক্টরকে বিয়ে করব। সেই কন্ডাক্টরের খোঁজেই আজ বের হলাম। আর ভালোবাসা যেহেতু অন্ধ, সেহেতু আমাকে আমার মনের মানুষের বাসের রুট জানার দরকার নাই। আমার খোঁজে সে ঠিকই একদিন আমার সামনে আসবে, আর বলবে, “এই আপা, কোইত্থেইকা উঠছেন? তাড়াতাড়ি ভাড়াটা হাতে লন”।’