হ্যারি পটার সিরিজের প্রথম সিনেমার মুক্তি

`হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন' সিনেমার পোস্টার
ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ লেখক জে কে রোলিংয়ের অনবদ্য সৃষ্টি হ্যারি পটার। সারা বিশ্বে হ্যারি পটার সিরিজের বই ও সিনেমা তুমুল জনপ্রিয়। ২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর মুক্তি পায় হ্যারি পটার সিরিজের প্রথম সিনেমা ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন’।

জে কে রোলিং
ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস

ইংল্যান্ডে জে কে রোলিংয়ের জন্ম ১৯৬৫ সালে। একসময় জীবন নিয়ে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন তিনি। আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। ১৯৯০ সালে ট্রেনে ম্যানচেস্টার থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় হ্যারি পটার চরিত্রটির ভাবনা মাথায় আসে। ট্রেনে বসেই শুরু করেন লিখতে। প্রথম উপন্যাসটি ব্লুমসবারি প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হওয়ার আগে অন্তত এক ডজন প্রকাশক বইটির পাণ্ডুলিপি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

জে কে রোলিংয়ের সবচেয়ে বেশি বিক্রিত হ্যারি পটার সিরিজের প্রথম উপন্যাস ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন’ যুক্তরাজ্যে প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে। এর পরের বছর উপন্যাসটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত হয় ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য সর্সারার্স স্টোন’ নামে। এরপর রোলিং একে একে এই সিরিজে যোগ করেন আরও ছয়টি উপন্যাস। তাঁর লেখা বইগুলো ৪০ কোটির বেশি কপি বিক্রি হয়, অনূদিত হয় প্রায় ৬৫টি ভাষায়।

‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার্স স্টোন’–এর প্রচ্ছদ
ছবি: সংগৃহীত

সিরিজের প্রতিটি উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে সিনেমা হয়েছে। আর প্রতিটি সিনেমাই ইতিহাসের অন্যতম সর্বোচ্চ আয়ের সিনেমা হিসেবে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। হ্যারি পটার সিরিজের প্রতিটি উপন্যাসের মতো প্রতিটি সিনেমা শিশু–কিশোর থেকে শুরু করে বড়দের সমান প্রিয়।

সিনেমার হ্যারি পটার, হারমায়োনি গ্রেঞ্জার ও রন উইজলি
ছবি: সংগৃহীত

এই সিরিজের প্রতিটি সিনেমায় হ্যারি পটার, রন উইজলি ও হারমায়োনি গ্রেঞ্জারের ভূমিকায় অভিনয় করের যথাক্রমে ড্যানিয়েল র‍্যাডক্লিফ, রুপার্ট গ্রিন্ট ও এমা ওয়াটসন। জে কে রোলিং মূল চরিত্রে অভিনয় করার জন্য নিজেই ড্যানিয়েল র‍্যাডক্লিফকে বেছে নিয়েছিলেন।

হ্যারি পটার, তাঁর বন্ধু রন ওয়েজলি ও হারমায়োনি গ্রেঞ্জার ‘হগওয়ার্টস স্কুল অব উইচক্র্যাফ্ট অ্যান্ড উইজার্ডরি’তে পড়াশোনা করেন। হ্যারির বয়স যখন ১১, তখন রুবিয়াস হ্যাগ্রিড নামের এক আধা মানুষ আধা দানব জানায় যে হ্যারি আদতে জাদুকর। হ্যারি আরও জানতে পারেন, তাঁর বয়স যখন এক বছর, তখন কালো জাদুকর লর্ড ভলডেমর্ট তাঁর মা-বাবাকে হত্যা করেন। ভলডেমর্ট হ্যারিকেও হত্যা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু কোনো এক রহস্যময় কারণে হ্যারি বেঁচে যান। হ্যারি ও তাঁর বন্ধুরা হগওয়ার্টস স্কুলে সংরক্ষিত রহস্যময় পরশপাথরের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারে এবং পাথরটিকে অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে সচেষ্ট হয়। এভাবে এগিয়ে যায় সিরিজের প্রথম পর্বের কাহিনি।

ছেলেবুড়ো সবার প্রিয় দুই চরিত্র
জিআইএফ: সংগৃহীত

হ্যারি পটার সিরিজের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বটি পরিচালনা করেন ক্রিস কলম্বাস। দ্বিতীয় পর্বটির নাম ছিল ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য চেম্বার অব সিক্রেটস’। সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০০২ সালে। ২০০৪ সালে মুক্তি পাওয়া তৃতীয় কিস্তি ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য প্রিজনার অব আজকাবান’ পরিচালনা করেন আলফোনসো কুয়ারন। ২০০৫ সালে মাইক নিওয়েলের পরিচালনায় মুক্তি পায় চতুর্থ কিস্তি ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য গবলেট অব ফায়ার’। পঞ্চম পর্ব ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য অর্ডার অব দ্য ফিনিক্স’ মুক্তি পায় ২০০৭ সালে। ২০০৯ সালে মুক্তি পায় ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য হাফ-ব্লাড প্রিন্স’।

জে কে রোলিংয়ের সপ্তম এবং শেষ উপন্যাস ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোজ’-এর কাহিনি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ আর জটিল ছিল। এ কারণে উপন্যাসটি অবলম্বনে বানানো হয় দুটি সিনেমা। পর্ব দুটি ২০১০ এবং ২০১১ সালে মুক্তি পায়। শেষ চারটি সিনেমার পরিচালক ছিলেন ডেভিড ইয়েটস।