ভাগ্যিস, আয় কমেছে

টানা ২৪ মাস দেশে মূল্যস্ফীতির তুলনায় মজুরি কম। ফলে মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। আয় কমে যাওয়ার বিষয়টিকে আমাদের দেশে সব সময় নেতিবাচক হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু আয় কমে যাওয়ার ইতিবাচক দিক নিয়ে ভেবেছেন কখনো?

মাস শেষ না হতেই মানিব্যাগের অবস্থাছবি: পেক্সেলস

১. পরিবহন খরচ কমে

বেশি আয়ের মানুষ বেশি কেনাকাটা করে। আয় কমে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে শুরু করে সবকিছুই কম কেনা হয়। আর এসব বাসায় নিয়ে আসতে আগে যত পরিবহন খরচ পড়ত, কম কেনার ফলে এখন পরিবহন ব্যয়ও কম হবে। যাহোক, বেঁচে যাওয়া পরিবহন খরচ জমিয়ে কোন দেশে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন?

২. হতাশার চক্র থেকে মুক্তি

আয় বাড়লে মানুষ মাংস বেশি খায়। ফলে হৃদ্‌রোগ বাড়ে। সমস্যা বাড়লে যেতে হয় চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসকের কাছে যেতে টাকা লাগে। টাকা ওঠাতে ব্যাংকে যেতে হয়। ব্যাংকে গিয়ে যদি দেখেন অ্যাকাউন্টে টাকাই নেই, তখন আবার ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হতে পারে। খেয়াল করেছেন, আয় কমে গেলে যে এসব অহেতুক ঝামেলায় আপনাকে পড়তে হয় না?

৩. অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানো

আয় অতিরিক্ত বেড়ে গেলে মানুষ চুপি চুপি বিদেশে টাকা পাঠাতে (পড়ুন পাচার) শুরু করে। এতে অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়। আয় কম হলে অর্থনীতির এ রকম ক্ষতি সহজেই এড়ানো যায়। ভেবে দেখেছেন, আয় কম হওয়ায় আপনি যে রাতারাতি দেশপ্রেমিক বনে গেলেন?

৪. ছিনতাইয়ের হাত থেকে বাঁচা

কম আয়ের ব্যক্তিদের পকেটে তেমন একটা টাকা থাকে না। কোনো এক দিন ঢাকার মোহাম্মদপুরের চলতি পথে হঠাৎ ছিনতাইকারীর কবলে পড়লে আপনার খালি পকেট দেখে ছিনতাইকারী ‘ইমোশনাল’ হয়ে নিজেই আপনার পকেটে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে চলে যেতে পারে। ছিনতাইকারীর পকেট খসানোর পর নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ হবে না?

৫. অপচয় ও ভুঁড়ি বৃদ্ধি রোধ

আয় বাড়লে মানুষ অপ্রয়োজনেও ব্যয় করে, খিদে না পেলেও খায়। যাদের আয় কম, তাদের মধ্যে এই প্রবণতা দেখা যায় না। এভাবে অপচয় রোধের পাশাপাশি তারা নিজেদের ভুঁড়ি বৃদ্ধি রোধও ভালোভাবে করতে পারে। নিজের আগে নিজের ভুঁড়িকে হাঁটতে না দিয়ে কেমন বোধ করছেন?

৬. নীতিকথা টিকিয়ে রাখা

কথায় আছে, অর্থই অনর্থের মূল। আয় বেশি করে জীবনকে অনর্থক করে তোলার অর্থ কী? তার চেয়ে বরং কম আয় করে নীতিকথা টিকিয়ে রাখায় ভূমিকা রাখুন। অর্থসংক্রান্ত নীতিকথাগুলো কোনো অর্থনীতিবিদ নয়, অর্থহীন ব্যক্তিদেরই রক্ষা করতে হবে, কী বলেন?

আরও পড়ুন