অক্কা পাওয়া বলি কেন

বাংলা ভাষায় যে বাগ্‌ধারাগুলো আছে, সেগুলো এল কোথা থেকে?

বসন্তের কোকিল

বসন্ত এলেই কোকিল কুহু কুহু স্বরে ডাকতে থাকে। সাধারণত পুরুষ কোকিল এভাবে ডাকে। স্ত্রী কোকিল ওই ডাক শুনে তার সঙ্গে জোড় বাঁধে। এই পাখি নিজে বাসা বানায় না। স্ত্রী কোকিল কাকসহ অন্যান্য পাখির বাসায় মোট ছয়-সাতটি ডিম পাড়ে। বর্ষার বৃষ্টিতে আর শীতের ঠান্ডায় কোকিলের ডাক শোনা যায় না। বসন্তের সুন্দর ঋতুতেই তার যত ডাকাডাকি! একইভাবে মানুষের মধ্যে সুসময়ে যারা আশপাশে থাকে, আর দুঃসময়ে যাদের পাওয়া যায় না, তাদের বলা হয় বসন্তের কোকিল।

মাছের মায়ের পুত্রশোক

মাছ পানিতে ডিম পাড়ে। একসঙ্গে হাজার হাজার ডিম পানিতে গুচ্ছ আকারে ভাসতে থাকে। সেই ডিম ফুটে লার্ভা বা পোনা মাছ জন্ম নেয়। দেখা যাচ্ছে, মা-বাবার যত্ন ছাড়াই ডিম থেকে পোনা মাছ হয়। এই লার্ভার বেশির ভাগ খেয়ে ফেলে অন্য মাছ বা প্রাণী। মা-মাছ এটা জানতেও পারে না। সুতরাং মা-মাছের সন্তান হারানোর কোনো রকম দুঃখ থাকার কথা নয়। মানুষের সমাজে কারও মধ্যে নকল মায়া বা লোকদেখানো কান্না দেখা গেলে এই বাগ্‌ধারার প্রয়োগ হয়।

অক্কা পাওয়া

ফারসি ‘আকা’ থেকে অক্কা শব্দটি এসেছে। এর অর্থ ঈশ্বর বা প্রভু। অর্থাৎ, ‘অক্কা পাওয়া’ শব্দের সাধারণ অর্থ ঈশ্বরকে পাওয়া। তাহলে ‘অক্কা পাওয়া’ বাগ্‌ধারার অর্থ মারা যাওয়া হলো কীভাবে? কারণটা খুবই সোজা। কেউ মারা গেলে আমরা বলি, সে ঈশ্বরের কাছে চলে গেছে কিংবা ঈশ্বর তাকে নিয়ে গেছে। তাই মারা গেছে বোঝাতে আলংকারিকভাবে বলা হয় অক্কা পেয়েছে বা ঈশ্বরকে পেয়েছে।