অনেকে দুধ খেতে পারে না কেন?

মডেল: পদ্মহেম পাবন
ছবি: প্রথম আলো

দুধ শিশুদের জন্য আদর্শ খাদ্য। কিন্তু অনেক শিশুর দুধে অ্যালার্জি থাকে। তারা দুধ সহ্য করতে পারে না, বারবার বমি হয়, এমনকি ডায়রিয়াও হতে পারে। দুধের মূল চিনিজাতীয় উপাদান হলো ল্যাকটোজ। এই পুষ্টিকর উপাদানটি পরিপাকের জন্য মানুষের শরীর ল্যাকটেজ নামের বিশেষ এনজাইম তৈরি করে। ল্যাকটোজের রাসায়নিক গঠন ভেঙে শরীরে পুষ্টি গ্রহণে সহায়তা করাই ল্যাকটেজের প্রধান কাজ।

সাধারণত সব মানুষের শরীরেই ল্যাকটেজ তৈরি হয়। যেসব শিশুর দেহে এই এনজাইম তৈরি হয় না, তাদের সমস্যা দেখা দেয়। তারা যেহেতু দুধ সহ্য করতে পারে না, তাই তাদের মলে অজীর্ণ ল্যাকটোজ থেকে যায়। একটি সহজ পরীক্ষা, ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স টেস্টের সাহায্যে এটা বের করা যায়। তবে দুই থেকে তিন সপ্তাহ দুধ খাওয়া বন্ধ রেখে যদি উপকার পাওয়া যায়, তাহলেও বোঝা যাবে সমস্যাটা দুধে।

শিশুদের জন্য প্রচুর ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি প্রয়োজন, যা দুধে থাকে। দুধে অ্যালার্জি হলে বিকল্প হিসেবে সয়া দুধ খেতে হবে। এসব ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। অনেক সময় শৈশবে সমস্যা না থাকলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুধে অ্যালার্জি দেখা দেয়। এর একটি কারণ হলো, ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সে কারও কারও শরীরে ল্যাকটেজ তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। বৈজ্ঞানিকেরা এর কারণ বের করার চেষ্টা করছেন। কোন বিশেষ জিন ও প্রোটিনের কারণে ল্যাকটেজ তৈরি বন্ধ হয়ে যায়, তা বের করতে পারলে জিন টেকনোলজির মাধ্যমে এর প্রতিকার বের করা সম্ভব।

দুধের বিকল্প হিসেবে পনিরও খাওয়া যেতে পারে
ছবি: সংগৃহীত

সহ্য হয় না বলে যে দুধ খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিতে হবে, তা নয়। অনেকে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে দুধ খেয়ে শরীরে সহনীয় করার চেষ্টা চালিয়ে সফল হয়েছেন। সরাসরি দুধের পরিবর্তে দুধের তৈরি ছানা, পনির প্রভৃতি খাওয়া যেতে পারে। দুধের জিনিস হলেও এসব খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়ায় কিছু ল্যাকটোজ অণু ভেঙে যায়, যে কারণে ওই সব খাদ্য শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে।